‘ভাষার প্রতি ভালোবাসা থেকেই বর্ণমেলা’
Published: 21st, February 2025 GMT
প্রতিবছর একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষার প্রতি, দেশের প্রতি ভালোবাসা থেকেই ‘বর্ণমেলা’-এর আয়োজন করা হয়। বাঙালি যে ইতিহাস ধরে এসেছে, যেখানে সবাইকে নিয়ে চলতে চেয়েছে, সেটা বর্ণমেলায় রয়েছে। অভিভাবকদের জন্য জরুরি কর্তব্য হচ্ছে সন্তানেরা যেন নিজের ভাষা ঠিক করে বলতে পারে।
আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকার ধানমন্ডিতে সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে ‘বর্ণমেলা’র উদ্বোধনী বক্তব্যে বক্তারা এসব কথা বলেন। ভাষাশহীদদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে সকাল ৯টা থেকে বর্ণমেলা শুরু হয়েছে। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই বর্ণমেলা চলবে।
প্রথম আলোর আয়োজনে এই বর্ণমেলায় সহযোগিতা করছে স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেডের ব্র্যান্ড মেরিল বেবি।
সহযোগিতা করছে সেপনিল, সুপারমম ও প্রচার সহযোগী এটিএন বাংলা।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অভিনেতা ও চিত্রশিল্পী আফজাল হোসেন বলেন, ‘আমি কৃতজ্ঞ যে মা-বাবারা সন্তানদের নিয়ে এখানে আসেন। মানে তাঁদের মধ্যে আগ্রহটা রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এখন জরুরি কর্তব্য হচ্ছে বাচ্চারা ভাষাটা ঠিক করে বলুক। উচ্চারণগুলো শুদ্ধ করে বলুক। সেটা সবার জন্য গর্বের হয়ে উঠতে পারে।’
প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরিফ বলেন, বর্ণমেলার এটি ১৬তম আসর। যার যাত্রা হয়েছিল ২০১০ সালে। প্রতিটি একুশে ফেব্রুয়ারিতে একটা আয়োজন হবে, যেখানে শিশু–কিশোরেরা আসবে, বাংলা ভাষার সৌন্দর্য নিয়ে আনন্দে মেতে থাকবে, সারা দিন সময় কাটাবে, ভাষা নিয়ে তাদের মধ্যে ভালোবাসা জন্ম নেবে, তারা বাড়ি চলে যাবে—এমন ইচ্ছার জায়গা থেকে বর্ণমেলার আয়োজন।
গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক’ শব্দটি আলোচনায় উল্লেখ করে সাজ্জাদ শরিফ বলেন, পাকিস্তানিরা বলেছিল উর্দুই হবে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। ১৯৫২ সালে যেসব ভাষাশহীদ রক্ত দিয়েছিলেন, তাঁরা কিন্তু বলেননি যে বাংলা একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হবে। তাঁরা বলেছিলেন, বাংলা অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হবে। ফলে অন্তর্ভুক্তি তখন থেকেই শুরু হয়েছে যে ‘আমি নই, আরও অনেকে আছে।’ বাংলাদেশে তারই আরেকটা বড় বিস্ফোরণ হয়েছে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলার, সবাইকে একই রকম মর্যাদা দেওয়ার আন্দোলন হয়েছে।
এই সময় বর্ণমেলার বড় তাৎপর্য আছে উল্লেখ করে সাজ্জাদ শরিফ বলেন, ‘বাঙালি যে ইতিহাস ধরে এসেছে, যেখানে সবাইকে নিয়ে চলতে চেয়েছে, সেটা বর্ণমেলায় সবাই মনের মধ্যে রাখব। প্রথম আলো চায়, বাংলাদেশ এগিয়ে যাক, সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাক।’
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সৌন্দর্য হলো এই দিবসে সব ভাষাকেই শ্রদ্ধা করতে বলে উল্লেখ করেন প্রথম আলোর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আনিসুল হক। আগত দর্শনার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সকাল ৯টার মধ্যে শিশু-কিশোরদের নিয়ে এসেছেন। আর সবাই একুশে ফেব্রুয়ারি স্মরণ করে উপযুক্ত পোশাক পরে এসেছেন। এতেই বোঝা যায়, এই ব্যাপারটাকে আপনারা গুরুত্বের সঙ্গে নেন।’
ম–তে ‘মা’। তাতে রং দিচ্ছে এক শিশু। আজ শুক্রবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে সকাল থেকে ঢাকার ধানমন্ডিতে সুলতানা কামাল মহিলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে বর্ণমেলা শুরু হয়েছে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অস্ট্রেলিয়ায় নির্বাচন ৩ মে, জনপ্রিয়তায় বাম-ডানপন্থিরা সমানে সমান
অস্ট্রেলিয়ার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩ মে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ শুক্রবার এ ঘোষণা দিয়েছেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত উদ্যোগ, পরমাণু শক্তি ও আবাসন খাতের ইস্যু এই নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। খবর- বিবিসি
মধ্য-বামপন্থি লেবার পার্টির নেতা আলবানিজের নেতৃত্বাধীন সরকারের তিন বছরের মেয়াদ প্রায় শেষের দিকে। ১৭ মে এর মধ্যে এ সরকারকে সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। জরিপে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান সরকার রক্ষণশীল প্রতিদ্বন্দ্বীদের সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই করছে। লেবার পার্টি ২০২২ সালের মে মাসে ক্ষমতা গ্রহণ করে। প্রায় এক দশক ক্ষমতায় থাকার পর জনপ্রিয়তা হারানো কনজারভেটিভ সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তারা। শুরুতে আলবানিজের সরকারকে ঘিরে আশা-প্রত্যাশা ও উৎসাহ থাকলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জনপ্রিয়তা হারাতে শুরু করেছে তার দল।
জনমত জরিপে ডানপন্থি নেতা পিটার ডাটন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ প্রায় একই ধরনের জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। আসন্ন নির্বাচনে এই দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
৬২ বছর বয়সী সরকার প্রধান আলবানিজ চলতি সপ্তাহের শুরুতে তাদের বার্ষিক বাজেট প্রকাশ করেছেন। এতে আশ্চর্যজনকভাবে কর কমনো ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রাখা হয়েছে, যাতে ভোটারদের আকৃষ্ট করা যায়। অপরদিকে বিরোধী দলের রক্ষণশীল নেতা পিটার ডাটন আলবানিজের সমালোচনা করে তার সরকারকে ‘দুর্বল’ নেতৃত্ব বলে আখ্যায়িত করেছেন এবং সরকারি অনুদানের মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি উসকে দেওয়ার অভিযোগ করেন।
২০২২ সালের মে মাসে আলবেনিজদের সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিসেম্বরে মুদ্রাস্ফীতি ৭ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ২ দশমিক ৪ শতাংশে নেমে আসে। তবুও অনেক পরিবার এখনো খাদ্য, জ্বালানি ও বিদ্যুতের উচ্চমূল্যের সঙ্গে লড়াই করছে। বার্ষিক ডেমোগ্রাফিয়া ক্রয়ক্ষমতা সূচক অনুসারে, সিডনি ও মেলবোর্নের প্রধান শহরগুলো এখন সবচেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যের বিশ্বের শীর্ষ ১০ আবাসন বাজারের মধ্যে স্থান পেয়েছে।