দারুণ ব্যাটিংয়ে পালটে দিয়েছেন পরিস্থিতি। এবার শুধু দলীয় পুঁজি বড় করার সময়। ঠিক তখনি ক্র্যাম্পের শিকার হন তাওহীদ হৃদয়। খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হেঁটে হেঁটে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা পেলেও দল না জেতায় মন ভেঙেছে তাওহীদের।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গ্রুপ বি থেকে বাংলাদেশের দুবাই পর্ব শেষ। এবার পাকিস্তানে প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড ও পাকিস্তান। সেঞ্চুরির পরও ভাঙা মন নিয়ে তাওহীদকে উড়াল দিতে হচ্ছে। সোমবার ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ নিউ জিল্যান্ড।
“শতরানের জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়ার শেষ নেই, তবে মন খারাপ। হয়তো আমি আর একটু ভালো খেললে দলের জন্য আরও ভালো হতো। পরের ম্যাচে ফিরতে চাই, যত কষ্টই সহ্য করতে হোক না কেন।”
আরো পড়ুন:
আমরা কেবল অংশ নিতে আসিনি, শিরোপা জিততে চাই: শাহিদি
শান্ত জানালেন যেসব কারণে হেরেছে বাংলাদেশ
“আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম শতক, তবে সবটুকুই বৃথা হয় যখন দল হেরে যায়”-আরও যোগ করেন এই ডানহাতি ব্যাটার।
৩৫ রানে ৫ উইকেটের পতনের পর জাকের আলীকে নিয়ে ষষ্ঠ উইকেটে ১৫৪ রানের রেকর্ড জুটি। জাকের ফিরলেও শেষ ব্যাটার হিসেবে ক্রিজ ছাড়েন তাওহীদ। পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। যেটি তার ওয়ানডে ক্যারিয়ারেরও প্রথম।
৪৫ ওভার থেকে শুরু হয় ক্র্যাম্পের সঙ্গে তাওহীদের লড়াই। ফিজিওর সাহায্যে উঠে দাঁড়ালেও রান নিতে হচ্ছিল হেঁটে হেঁটে। শেষ দিকে ১৪ বলে করতে পারেন ১১ রান। তার আক্ষেপ ক্র্যাম্প না হলে দলের রান আরও ৩০-৪০ বেশি হতো।
“আমরা ভাবনায় পরিষ্কার ছিলাম যে, টস জিতলে কী করতে চাই। ব্যাটিং করারই পরিকল্পনা ছিল গোটা দলের। দ্রুত কয়েকটি উইকেট পড়ে গেছে… এজন্য জিনিসটা এরকম হয়েছে। দ্রুত উইকেট যাওয়ার পরও যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি আমি ও জাকের, দুজনের একজন যদি আরও ভালোভাবে ম্যাচটা শেষ করতে পারতাম, তাহলে অন্তত ২৬০-২৭০ রান হতো। তখন খেলার চিত্র ভিন্ন হতো।”
“আমার কাছে মনে হয়েছে, আমার ক্র্যাম্পিং করাটাই ওই সময়… যদি আমি ঠিকঠাক থাকতাম, তাহলে আরো ২০-৩০ রান বেশি হতে পারত দলের।”
বাংলাদেশ ২২৮ রানে অলআউট হয়। ১১৮ বলে ১০০ রান করেন তাওহীদ। এই রান তাড়া করতে ভারত খেলে ৪৬.
তাওহীদ বলেন, “ওরা রান তাড়া করেছে ৪৭ ওভারে। মনে, এত সহজ ছিল না উইকেট। আমাদের মনে হয়, ৩০ থেকে ৪০ রান কম করে ফেলেছি।”
ঢাকা/রিয়াদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই আন্দোলন চলাকালে ধর্ষণের অভিযোগ
জুলাই আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগের কর্মীদের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম, উমামা ফাতেমা, নুসরাত তাবাসসুমসহ অন্যদের বিষয়টি জানালেও কাউকে পাশে না পাওয়ার অভিযোগও করেছেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমীতে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নারীদের সম্মুখ ভূমিকা’ নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ দাবি করেন তিনি। প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (পুনাব) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
অনুষ্ঠানে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ৪ আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া গোল চত্বর থেকে ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জনের একটি দল আমাকে তুলে নিয়ে যায়। তারা আমাকে কলেজ রোডের পেছনে আজমেরি ওসমানের বাসার নিচের একটি অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে অনেক গালিগালাজ করে। গালিগালাজের এক পর্যায়ের অফিস থেকে সবাই বেরিয়ে যায়। তবে দুইজন অফিসে ছিলেন। তারা সেখানে আমাকে ধর্ষণ করে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তারা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
সমন্বয়কদের ধর্ষণের বিষয়টি জানিয়েও কোনো সাহায্য পাননি বলে অভিযোগ করেন ওই শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, উমামা ফাতেমাকে যখন জানাই, তখন তিনি বলেন- ‘ও তোমার সঙ্গে অনেক খারাপ হইছে, দেখব বিষয়টা।’ নুসরাত তাবাসসুমকে যখন বলি, তখন তিনি বলেন- ‘আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস।’ এরপর তাকে একাধিকবার মেসেজ করেছি। তিনি মেসেজ সিন করে রেখে দিয়েছেন। সারজিসও হোয়াটসঅ্যাপে নক দিতে বলেছিল। তিনি দায়িত্ব নিয়েছিলেন। তবে সারজিস ভাইও কোনো কিছু করেননি।
ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগ, আমার এই ঘটনা এমন কেউ নেই যে জানে না। যাদের কারণে আমার জীবন শেষ হয়ে গেছে তারা এখনও ঘুরে বেড়াচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এই আন্দোলনের পরও আমাদের বৈষম্যের শিকার হতে হয়। সন্তানের পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য আমি একজন বয়স্ক ব্যক্তিকে বিয়ে করেছি। গত ডিসেম্বরে আমার বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে। জুলাই আন্দোলনের ছয় মাস পার হলেও আমি ন্যায্য বিচার পাইনি।
ওই শিক্ষার্থীর অভিযোগের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। আহনাফ নামে একজন বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা করে একটি পোস্ট দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম আহনাফের পোস্টটি শেয়ার করে লেখেন, আদৃতাকে একবার আমার সামনে এনে অভিযোগ করতে বলেন যে- তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয়নি। আদৃতাকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল, তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে তার সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা সবকিছুর কথা বলা হয়েছিল।
তিনি আরও লেখেন, কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু, কিন্তু তার অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না। আদৃতাকে বলুন নাম নিয়ে অভিযোগ করতে, অন্যথায় তার স্টেটমেন্ট এবং আপনার বিরুদ্ধে না জেনে অভিযোগ করার নিন্দা একসঙ্গে উপযুক্ত স্থানে পৌঁছে দেয়া হবে।