কুয়েটে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও হল খোলা, তদন্ত শুরু
Published: 21st, February 2025 GMT
সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনার তিনদিন পরও আতঙ্ক কাটেনি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট)। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে সব হল। তবে, কিছু শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতার কারণে হল ত্যাগ করলেও অধিকাংশই হলে অবস্থান করছেন। যদিও পাঁচ দফা দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের লাগিয়ে দেওয়া তালা ঝুলছে কুয়েটের একাডেমিক এবং প্রশাসনিক ভবনগুলোতে। নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে ক্যাম্পাসে।
হামলার নেপথ্যের ঘটনা ও জড়িতদের চিহ্নিত করতে গঠিত চার সদস্যের তদন্ত কমিটি ইতোমধ্যে কাজ করতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শাহেদুজ্জামান শেখ উল্লিখিত বিষয়গুলো নিশ্চিত করে বলেন, “শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বিভাগীয় কমিশনারের তত্ত্বাবধায়নে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। ভিসি ঢাকায় অবস্থান করায় প্রোভিসি দায়িত্ব পালন করছেন।”
আরো পড়ুন:
ফুল দেওয়া নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের হাতাহাতি, আহত ২
বাগেরহাটে বিএনপির দু’গ্রুপে সংঘর্ষে আহত নেতার মৃত্যু
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছে। এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে- ‘ছবিতে প্রতিবাদ, দাবিতে ঐক্য’। কর্মসূচি ঘোষণা করেছে রক্তাক্ত কুয়েট কর্নার। আজ বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।
এদিকে, কুয়েটের ভিসি, প্রোভিসি এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে বর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা নতুন ভিসি নিয়োগের দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ৫ দফা দাবি দেওয়া হলেও কুয়েট প্রশাসন সেটা পূর্ণাঙ্গ রূপে মানেনি। এ ঘটনায় কুয়েটের ভিসি, প্রোভিসি এবং ছাত্রকল্যাণ পরিচালককে বর্জন করা হয়েছে।
তারা আরো জানান, কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। যার কারণে তারা নতুন প্রশাসন চায়। শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দিয়েছে। সেখানে নতুন ভিসি নিয়োগ দিয়ে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য বলা হয়েছে।
কুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম বলেন, “আমাদের যে দাবিগুলো ছিল, তা মেনে নেওয়া হয়নি। আমরা চাই, ছাত্র রাজনীতি বন্ধের যে অধ্যাদেশ আছে সেটাকে পরিবর্তন করে অর্ডিন্যান্স করে হবে। আমাদের ছাত্রশিবির বলে যে ট্যাগ দেওয়া হচ্ছে তা মিথ্যা ও ফেভরিকেটেড। প্রধান উপদেষ্টার কাছে আমাদের দাবি, যত দ্রুত সম্ভব নতুন ভিসি নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে হবে।”
কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনা তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান অধ্যাপক ড.
বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, “শিক্ষার্থীদের সব দাবি পূরণ করা হয়েছে। আশা করি, তারা শিগগিরই ক্লাসে ফিরবেন। তাদের সব দাবি তো পূরণ করেছি, এ কারণে আমি পদত্যাগ করছি না। শিক্ষার্থীদের ধাক্কাধাক্কিতে আমি আঘাতপ্রাপ্ত হই। এছাড়া একদিন অবরুদ্ধ ছিলাম। চিকিৎসার জন্য আমি ঢাকায় অবস্থান করছি।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ র জন য র ঘটন তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
গ্রীষ্মের বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির কৃষ্ণচূড়া
ঋতুচক্রে প্রকৃতিতে এখন গ্রীষ্মকাল। সেই গ্রীষ্মের বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির কৃষ্ণচূড়া। কাঠফাটা রোদ্দুরকে যেন সহনীয় করে দেয় কৃষ্ণচূড়া!
গ্রামবাংলার নানা প্রান্তে প্রকৃতিতে রং ছড়াচ্ছে বর্ণিল কৃষ্ণচূড়া। তবে শুধু গ্রামবাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলেই নয়, ইট-পাথরের নগরেও দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশের কয়েকটি এলাকা ঘুরে আগুনরঙা হয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুটে থাকতে দেখা গেছে।
জাতীয় পরিবেশ পদকপ্রাপ্ত কুমিল্লার পরিবেশ ও কৃষি সংগঠক মতিন সৈকত প্রথম আলোকে বলেন, যাঁরা ফুলপ্রেমী মানুষ, তাঁদের কাছে কৃষ্ণচূড়া বেশ পছন্দের ফুল। বাংলা কাব্য, সাহিত্য ও সংগীতে এসেছে এই ফুলের কথা। শুধু কবি–সাহিত্যিক নয়, কুমিল্লার পথচারী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চোখ জুড়িয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া।
কুমিল্লা নগরের ধর্মসাগরপাড়, নগর উদ্যান, বাদুরতলা, অশোকতলা, হাউজিং এলাকা, রানির দিঘির পাড়, জেলা স্কুল রোড, চর্থা, উনাইসার, বিমানবন্দর এলাকা, দিশাবন্দ, ছোট ধর্মপুর এলাকা এবং জেলার ১৭টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কমবেশি দেখা মিলছে কৃষ্ণচূড়ার। এ ছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে চলাচলের সময় কুমিল্লা সদর দক্ষিণের সুয়াগাজী এলাকা, চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মিয়াবাজার, মিরশ্বান্নি এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য চোখে পড়ছে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গ্রীষ্মকাল শুরুর আগে থেকেই কৃষ্ণচূড়া ফুলটি ফুটতে শুরু করে। নানা জাতের পাখির আনাগোনা বাড়তে থাকে গাছটিকে ঘিরে। বিশেষ করে জাতীয় পাখি দোয়েল, টুনটুনি, চড়ুই, বুলবুল পাখির সরব উপস্থিতি থাকে সারা বেলা। শরীরে রক্তিম আভা মেখে কৃষ্ণচূড়া সারাক্ষণ সবুজ বনভূমি–তৃণভূমিকে আলোকিত করে রেখেছে। কৃষ্ণচূড়ার তুলনা শুধু কৃষ্ণচূড়াই। রঙে, রূপে, উজ্জ্বলতায় ও কমনীয়তায় কোনো কিছুই যেন কৃষ্ণচূড়ার সমকক্ষ নয়।
মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, বসন্তের শেষ দিকে সাধারণত কৃষ্ণচূড়ার পাতা ঝরে পড়তে শুরু করে। ধীরে ধীরে পত্রহীন বাঁকানো ডালগুলোতে দেখা যায় কলির আভাস। অন্যান্য ফুল গাছে যখন নতুন পাতা আসে, কিন্তু ফুল আসে না; ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়ার সব পাতা ঝরে গিয়ে ফুলের কলি দেখা দেয়। আর গ্রীষ্মের শুরুর সময়টাতে দেখা যায় লালের আভাস।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শারমিন আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কৃষ্ণচূড়া ফোটার এই সময়টা তাঁর অন্য রকম ভালো লাগে। এ ভালো লাগার কথা মুখে বলে প্রকাশ করা যাবে না।