মিসরে তুতেনখামেনের পর আরও একজন ফারাওয়ের সমাধির সন্ধান
Published: 21st, February 2025 GMT
প্রাচীন মিসরের ইতিহাস নিয়ে কাজ করা গবেষকেরা আরও একজন ফারাওয়ের সমাধি খুঁজে পেয়েছেন। এক শতকের বেশি সময় আগে সন্ধান পাওয়া তুতেনখামেনের সমাধির পর এবারই প্রথম কোনো ফারাওয়ের সমাধির সন্ধান পাওয়া গেল।
সমাধিটি রাজা দ্বিতীয় থুতমোসের। এটি ছিল ১৮তম প্রাচীন মিসরীয় রাজবংশের সবশেষ অনাবিষ্কৃত রাজকীয় সমাধি।
ব্রিটিশ-মিসরীয় গবেষকদের একটি দল প্রাচীন এ সমাধির সন্ধান পেয়েছেন। মিসরের লুক্সর শহরের কাছে ওয়েস্টার্ন ভ্যালি ‘থেবান নেক্রোপলিস’-এ এর অবস্থান।
এই গবেষকেরা এমন একটি জায়গা খুঁজে পেয়েছেন, যেখানে রাজকীয় নারীদের সমাহিত করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে যখন তাঁরা সমাধির ভেতর প্রবেশ করেন, তখন ফারাওয়ের চিহ্নসহ বিভিন্ন সাজসজ্জা দেখতে পান।
আরও পড়ুনফারাও রাজার মমি ডিজিটালি উন্মোচিত২৯ ডিসেম্বর ২০২১এ অনুসন্ধান অভিযানের মাঠ পরিচালক পিয়ার্স লিথারল্যান্ড বলেন, ‘সমাধির ছাদ এখনো অক্ষত আছে। নীল রঙের ছাদে হলুদ রং দিয়ে তারা খোদাই করা শুধু শাসকদের সমাধিতেই খুঁজে পাওয়া যায়।’
বিবিসির নিউজ আওয়ার অনুষ্ঠানে এই গবেষক বলেন, ওই মুহূর্তে তিনি একেবারে অভিভূত হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি আরও বলেন, ‘সেখান থেকে বেরিয়ে আসার পর, আমার স্ত্রী বাইরে অপেক্ষা করছিল, আর আমি খুশিতে কেঁদে ফেলেছিলাম।’
লিথারল্যান্ড আরও বলেন, এ আবিষ্কার প্রাচীন মিসরের ১৮তম রাজবংশের প্রথম দিককার শাসকদের সমাধিস্থলের অবস্থান–সংক্রান্ত রহস্যের সমাধান করেছে।
গবেষকেরা দুই শতাব্দী আগে শাসক দ্বিতীয় থুতমোসের মমিকৃত দেহাবশেষের অংশ খুঁজে পেয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর মূল সমাধিস্থল এর আগে খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুনপ্রাচীন মিসরের বিখ্যাত রাজা তুতেনখামেনের সমাধি আবিষ্কার০৪ নভেম্বর ২০২২ফারাও দ্বিতীয় থুতমোসের সমাধির অবস্থান ও ভেতরে প্রবেশের পথ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাস নেতা ও তার স্ত্রী নিহত
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস শহরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় হামাসের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতা সালাহ আল-বারদাউইল এবং তার স্ত্রী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন হামাস কর্মকর্তারা। গত মঙ্গলবার যুদ্ধবিরতির পতনের পর এই হামলা ছিল সবচেয়ে তীব্র বিমান হামলাগুলোর মধ্যে একটি।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গাজায় মৃতের সংখ্যা ৫০,০০০ ছাড়িয়েছে। শুধুমাত্র রবিবার খান ইউনিস এবং রাফাহতে অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।
৬৬ বছর বয়সী বারদাউইল হামাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা ছিলেন। ইয়াহিয়া সিনওয়ার এবং রাওহি মুশতাহার নিহত হওয়ার পর তিনি হামাসের সর্বোচ্চ পদস্থ রাজনৈতিক নেতা হিসেবে বিবেচিত হতেন। আট সন্তানের জনক বারদাউইল হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোতে ২০২১ সালে পুনরায় নির্বাচিত হন।
যুদ্ধবিরতির ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েল আবারও গাজায় ব্যাপক বিমান হামলা শুরু করে। ইসরায়েল দাবি করে, হামাস মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। অন্যদিকে, হামাস অভিযোগ করে যে ইসরায়েল কাতার, মিশর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত মূল চুক্তি থেকে সরে এসেছে। চুক্তির আওতায় ইসরায়েলের সেনা প্রত্যাহার, ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি এবং গাজার পুনর্গঠনের আলোচনা অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানিয়েছে, রাফাহতে ইসরায়েলি হামলার পর আহতদের উদ্ধারে গিয়ে তাদের বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ইসরায়েলি বাহিনীর দ্বারা ঘিরে ফেলা হয়। সংস্থাটি আরও জানায়, কিছু প্যারামেডিক আহত হয়েছেন এবং একটি উদ্ধারকারী দল দীর্ঘক্ষণ ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়াবহ পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়েছেন। রাফাহর বাসিন্দা আলা আল-দিন সাবাহ বিবিসিকে বলেন, গুলিগুলো বৃষ্টির মতো ঝরছে। একজন নারী গুলিবিদ্ধ হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন, কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স তার কাছে পৌঁছাতে পারছে না। আমি একজন প্যারামেডিককে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখছি, তিনি চিৎকার করছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলের ওপর এক নজিরবিহীন হামলায় প্রায় ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, যার ফলে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হন এবং অবকাঠামো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়।
যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনার কোনো ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়লেও গাজায় মানবিক সংকট ক্রমেই গভীরতর হচ্ছে।