চলন্ত বাসে ডাকাতি ও শ্লীলতাহানির ঘটনায় তিন দিন পর মামলা
Published: 21st, February 2025 GMT
চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনার তিন দিন পর টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। বাসের যাত্রী নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার ওমর আলী বাদী হয়ে আজ শুক্রবার ভোরে মামলাটি দায়ের করেন। সকাল ১০টায় মির্জাপুর থানার কর্তব্যরত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) খায়রুল বাসার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বাদী ওমর আলী বলেন, গত সোমবার রাত ১১টায় বাসে উঠে ডাকাতির কবলে পড়েন তিনি। এরপর থেকে এ ঘটনা নিয়েই আছেন। আজ ভোর চারটার দিকে পুলিশের গাড়িতে করে তিনি, যাত্রী সোহাগ হোসেন ও তাঁদের ব্যবসায়িক অংশীদার আবু হানিফকে মির্জাপুর থানায় আসেন। তারপরে মামলার এজাহারে তাঁর স্বাক্ষর নেওয়া হয়। তবে এজাহার তাঁকে পড়ে শোনানো হয়নি। তিনি জবানবন্দিতে ডাকাতির ঘটনা ও দুই নারীর শ্লীলতাহানির বর্ণনা দিয়েছেন। কিন্তু এজাহারে কী লেখা হয়েছে, তিনি জানেন না।
ওমর আলী আরও বলেন, বাসের সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩), চালক বাবলু আলী (৩০) ও তাঁর সহকারী মাহবুব আলম (২৮) মির্জাপুর থানায় এসে বসে আছেন। তাঁরাও মামলা করবেন। ওমর আলী অভিযোগ করেন, ‘ওরা (চালক ও তাঁর সহকারী) ঘটনার সঙ্গে জড়িত। ওরা আসামি হবে। আবার ওরাই মামলা করার জন্য এসে বসে আছেন। এটা কী হচ্ছে বুঝতে পারছি না।’
এ বিষয়ে জানতে মির্জাপুর থানার মির্জাপুর থানার ওসি মোশারফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন ধরেননি। তবে কর্তব্যরত কর্মকতা এসআই খায়রুল বাসার নিশ্চিত করেছেন চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তাঁর কাছে এজাহার নেই। সেখানে কী লেখা হয়েছে, সেটা তিনিও বলতে পারেননি।
গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলসের’ একটি বাসে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাস ছাড়ে। রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে বাসে ডাকাতি শুরু হয়।গত সোমবার রাতে ঢাকা থেকে রাজশাহীর উদ্দেশে ছেড়ে আসা ইউনিক রোড রয়েলসের ‘আমরি ট্রাভেলসের’ একটি বাসে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে। যাত্রীদের ভাষ্যমতে, সোমবার রাত ১১টায় ঢাকার গাবতলী থেকে বাস ছাড়ে। রাত ১২টা ৩৫ মিনিটে বাসে ডাকাতি শুরু হয়। তিন ঘণ্টা ধরে ডাকাতি শেষে ঘুরিয়ে একই জায়গায় বাসটি নিয়ে গিয়ে রাত ৩টা ৫২ মিনিটে ডাকাতেরা নেমে যায়। এরপর বাসের চালক, তাঁর সহকারী ও সুপারভাইজার নানান টালবাহানা করতে থাকে। তাঁরা বলেন, তাঁদের গাড়িতে তেল নেই। অবশেষে যাত্রীদের চাপের মুখে পড়ে তাঁরা রাজশাহীর উদ্দেশে বাস ছাড়েন। যাত্রীরা প্রথমে বাসটি নিয়ে মামলা করার জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থানায় যান। সেখানে তখন ওসি ছিলেন না বলে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার পরে বাসটি বড়াইগ্রামে থানায় ঢোকানো হয়।
আরও পড়ুনঢাকা-রাজশাহী রুটে চলন্ত বাসে ডাকাতির যে বর্ণনা দিলেন যাত্রীরা১৬ ঘণ্টা আগেডাকাতির ঘটনায় বাসের সুপারভাইজার, চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করে পুলিশ। পরে তাঁরা জামিনে মুক্তি পান। নাটোরের বড়াইগ্রাম আমলি আদালত সূত্রে জানা যায়, বড়াইগ্রাম থানার এসআই শরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চালানমূলে ঢাকা-রাজশাহী চলাচলকারী ইউনিক রোড রয়েলস বাসের চালক বাবলু ইসলাম (৩৫), চালকের সহকারী সুমন ইসলাম (৩৫) ও সুপারভাইজার মাহবুব আলমকে (৩৮) বুধবার বিকেলে আদালতে পাঠানো হয়। সন্ধ্যায় তাঁদের আদালতের সামনে হাজির করলে আদালত শুনানি শেষে জামিনের আদেশ দেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড ক ত র ঘটন স মব র র ত চলন ত ব স র সহক র ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগ, এসআইয়ের বিরুদ্ধে মামলা
খুলনার কয়রায় ব্যবসায়ীর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে পুলিশের এক উপপরিদর্শকের (এসআই) বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ বুধবার কয়রা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে আলমগীর হোসেন নামে এক মাছ ব্যবসায়ী এ মামলা করেছেন। মামলায় কয়রা থানা-পুলিশের এসআই মো. সালাউদ্দীনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, মামলার বাদি আলমগীর হোসেন বিএনপির কর্মী হওয়ায় বিভিন্ন মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন এসআই সালাউদ্দীন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় গত বছরের ২৫ জুন রাত ১০টার দিকে কয়েকজন সহযোগীসহ তিনি বাদির বাড়িতে উপস্থিত হন। প্রথমে বাদিকে সরকারবিরোধী হিসেবে গ্রেপ্তার করার ভয় দেখানো হয়। পরে এক লাখ টাকা দিলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে না বলেও আশ্বস্ত করা হয়। কিন্তু টাকা দিতে অস্বীকার করার একপর্যায়ে এসআই সালাউদ্দীন ওই ব্যবসায়ীর স্ত্রী সন্তানের সামনে তাঁর মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করার হুমকি দেন। এ সময় বাদির স্ত্রী ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা এসআইকে দিয়ে স্বামীকে ছাড়িয়ে নেন। বাকি ৫০ হাজার টাকা কয়েকদিনের মধ্যে না দিলে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলে আসেন তিনি। দাবিকৃত টাকা না পেয়ে ওই সময়ে একটি মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয় ব্যবসায়ীকে।
মামলার সাক্ষী ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেনের স্ত্রী বলেন, ‘দারোগা সাহেব সকলের সামনে আমার স্বামীর মাথায় অস্ত্র ঠেকিয়ে চাঁদা দাবি করেন। স্বামীকে বাঁচাতে ওই রাতে প্রতিবেশীদের কাছ থেকে ধারদেনা করে টাকা দিয়েছি তাকে। তবুও আমার স্বামীকে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ হয়ে ডাকাতের মতো আচরণ করেছেন তিনি।’
জানতে চাইলে এসআই সালাউদ্দীন অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘মামলার বাদী আলমগীর হোসেনকে আমি চিনি না। তিনি কেন আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছেন বুঝতেছি না।’
আদালতের পেশকার মাইনুল হোসেন জানিয়েছেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে পিবিআইকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।