সরকারি নিরীক্ষা বিল কি গোপনীয় দলিল, প্রশ্ন টিআইবির
Published: 21st, February 2025 GMT
সরকারি নিরীক্ষা বা পাবলিক অডিট বিল-২০২৪–এর খসড়া নিয়ে গোপনীয়তার চর্চায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে বিলটি উন্মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছে।
সরকারি নিরীক্ষা বিল নিয়ে টিআইবি এক বিবৃতিতে আজ বৃহস্পতিবার এমনটিই জানিয়েছে। তারা বলেছে, গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়সহ কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠান, একটি দাতা সংস্থা এবং বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের মধ্যে আবদ্ধ অস্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় সরকারি নিরীক্ষা বিলের খসড়া চূড়ান্ত করা হচ্ছে।
বিষয়টিকে অনভিপ্রেত উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দীর্ঘ প্রত্যাশিত অডিট বিলের খসড়া মতামতের জন্য মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর ও সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের সম্পৃক্ততার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। প্রশ্ন হলো, হিসাব নিয়ন্ত্রণ ও নিরীক্ষণ কি শুধু সরকারি ও একটি প্রভাবশালী ঋণদাতা সংস্থার বিষয়? এই বিলটি রাষ্ট্রের জনগণের অর্থসম্পদ ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার আইনি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হবে। ফলে এই বিলের বিষয়ে নাগরিক সমাজ ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মতামত গ্রহণের বিষয়টি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। পাবলিক অডিট বিলের খসড়া জনস্বার্থে সংশ্লিষ্ট অংশীজন ও বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণের জন্য অবিলম্বে উন্মুক্ত করতে আহ্বান জানাই।’
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ‘মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রককে (সিএজি) বাজেট, নিয়োগসহ সব বিষয়ে সাংবিধানিক স্বাধীন ক্ষমতা প্রয়োগের অধিকার নিশ্চিত করাসহ ২০ দফা সুপারিশ করেছিল টিআইবি।
সেটি উল্লেখ করে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করতে আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি করছি। গবেষণালব্ধ ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে আমরা সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেছিলাম। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট অংশীজনের মাধ্যমে আলোচনার ভিত্তিতে প্রস্তাবিত নিরীক্ষা আইন, কাঠামো ও নিয়োগের বিধিমালা অনুমোদন এবং সিএজিকে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবের বাইরে আনার ব্যাপারটি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছিল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি প্রত্যাশা ছিল, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে সিএজিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। কিন্তু খসড়া অডিট বিল পর্যালোচনা শুধু সরকারি সংস্থাসমূহ এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার ফলে এমন মনে হওয়া অমূলক নয় যে কর্তৃত্ববাদী সরকারের সময়ের মতো এখনো সিএজিকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আমলাতন্ত্রের হাতে করায়ত্ত করে রাখার পাঁয়তারা চলছে।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘সিএজি সরকারের বা কোনো নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দেশি-বিদেশি আমলাতন্ত্রের অধীন কোনো সংস্থা নয়, এটি একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যার চূড়ান্ত মালিকানা জনগণের। তাই খসড়া আইনটি অবিলম্বে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আগ্রহী অংশীজনের মতামতের সুযোগ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত সময়ের জন্য উন্মুক্ত করার আহ্বান জানাই।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স শ ল ষ ট অ শ জন র মত মত র জন য র খসড় ট আইব সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে যা বললেন জিএম কাদের
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেছেন, “আওয়ামী লীগ একটি গাড়ির ন্যায়। সেই গাড়ির ভেতরে থাকা ড্রাইভার খারাপ হতে পারে, কিন্তু গাড়িটি খারাপ না। কাজেই এই বিষয়গুলো বুঝতে হবে। এগুলো না বুঝে, দেশের বিশাল একটি জনগোষ্ঠীকে বাইরের রেখে ইচ্ছামতো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া ঠিক না। তাই দলটিকে নিষিদ্ধ করা ঠিক হবে না।”
শুক্রবার (২১ মার্চ) বিকেলে দুই দিনের সফরে রংপুরে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন তিনি।
জিএম কাদের বলেন, “পুলিশ বাহিনীর মনোবল ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে, যে কারণে দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটছে। এখন সেনাবাহিনীর মনোবল ভেঙে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। যা দেশের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। রাজনীতির আগে দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থা রক্ষা করা জরুরি। এজন্য সবাইকে আন্তরিক হতে হবে।”
আরো পড়ুন:
‘ক্লিন ইমেজের’ আড়ালে ‘কলঙ্ক’, দুদকের জালে জিএম কাদের
দেশে মবক্রেসি চলছে, জানমালের নিরাপত্তা নেই: জিএম কাদের
তিনি বলেন “আমেরিকা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছে। এখন সরকার যদি প্রমাণ করতে না পারে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান নেই, তাহলে সামনে বড় সংকট আসতে পারে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “বিভিন্নভাবে দেশে মৌলবাদের উত্থান ঘটছে। মব জাস্টিস হচ্ছে, অথচ এসব দমনে বর্তমান সরকার ব্যর্থ। ফলে আগামীতে এসব কারণে দেশের জনগণ চরম বিপদের মুখে পড়তে পারে।”
জিএম কাদের বলেন, “বাংলাদেশ একটি ভয়াবহ দুর্যোগময় পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। জনগণের আস্থার জায়গা পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং বিচার বিভাগ অপব্যবহার হচ্ছে। এসব প্রতিষ্ঠানকে ঢেলে সাজানো আর সহজ হবে না।”
জাতীয় পার্টির এই নেতা জানান, নব্য ফ্যাসিবাদীরা দুর্নীতির অভিযোগ তুলে অতীতে শেখ হাসিনার মতো তার ইমেজ নষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিগত সময়ে সব বাহিনী চেষ্টা করেও দুর্নীতির অভিযোগ আনতে পারেনি তার বিরুদ্ধে। অথচ এখন নতুন করে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্যের অভিযোগ তোলা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে। যা কণ্ঠরোধের অপচেষ্টা বলেও মনে করেন তিনি।
ঢাকা/আমিরুল/মাসুদ