যুক্তরাজ্যের মডেল চার্লি মিল। দেশটির রাজধানী লন্ডনের কাছের একটি শহরে তার জন্ম। প্রায় ৬ বছর আগে টিসাইডে চলে যান। বর্তমানে সেখানেই তার বসবাস। গোটা পৃথিবীতে মডেলিং করেন এমন নারীর সংখ্যা অগণিত। তাহলে চার্লি কেন আলোচনার বিষয়বস্তু? এ প্রশ্নের উত্তর— চার্লির শারীরিক উচ্চতা।

২৯ বছরের চার্লির উচ্চতা ৬ ফুট ৫ ইঞ্চি। তার বয়স যখন ১৪ বছর তখন থেকে চার্লির উচ্চতা এতটা! নিজের উচ্চতা নিয়ে চার্লি বলেন, “আমার উচ্চতা একটি বিশেষ ব্যাপার। সত্যি বলতে, আমার চেয়ে লম্বা কোনো নারীর সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি।”

 

চার্লির শারীরিক উচ্চতা বিশেষ হলেও, অভিশাপ হিসেবে ভর করছিল তার জীবনে। এ মডেল জানান, স্কুলে পড়াকালীন নিজের উচ্চতার জন্য বার বার হেনস্তার শিকার হয়েছি। যারফলে মানসিক অবসাদ চেপে ধরেছিল তাকে। ওজন বেড়ে গিয়েছিল। ২০২০ সালে নিজের জীবনে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেন চার্লি। শুরু করেন মডেলিং আর তাতেই বদলে যায় তার জীবন। প্রতি মাসে মোটা অঙ্কের অর্থ আয় করেন চার্লি।

 

অর্থনৈতিক সংকট চার্লির জীবনে চেপে বসেছিল। এর সমাধান হলেও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে হতাশ। কারণ তার সঙ্গে কোনো পুরুষ প্রেম করতে চায় না। এমনকি, ডেটিং সাইট থেকেও তাকে ব্লক করা হয়েছে।

 

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারকে চার্লি বলেন, “আমার প্রেমের ভাগ্য খুবই খারাপ। অথবা প্রেমের অভাব! অনেক খাটো ছেলে আছে, যারা আমাকে ভালোবাসে কেবল আমার উচ্চতার জন্য। তারা আমার ভালো গুণাবলী উপেক্ষা করে, কেবল উচ্চতা দেখে।”

 

অনেক ছেলেই চার্লির উচ্চতা দেখে ভীত। এ তথ্য উল্লেখ করে এই মডেল বলেন, “এমন কিছু ছেলে আছে, যারা আমার উচ্চতা দেখে ভয় পায়। কারণ আমার উচ্চতা পুরুষের মর্যাদা কমিয়ে দেয়। আমার কাছে মনে হয়, এটা তাদের ভেতরে একটা নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করে।”

 

চার্লির ধারণা এখনো সঠিক মানুষের দেখা পাননি তিনি। তার ভাষায়, “আমি মনে করি, আমার উচ্চতা সব ব্যাপারগুলোকে আরো কঠিন করে তোলে। আমার মনে হয়, আমার এখনো সঠিক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়নি।”

ঢাকা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জ বন

এছাড়াও পড়ুন:

কেবল ক্রিকেট বাণিজ্যেই ভারত-পাকিস্তান লড়াই!

ইনস্টাগ্রামের সেই পেইজটার নাম ঠিক মনে নেই। তবে বাবর ও রিজওয়ানদের ছবি পোস্ট করে যে ক্যাপশন দিয়েছে তার ভাষা ছিল এরকম, ‘‘অর্থের শক্তি দেখাল ভারত!’’ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিজেদের মাটিতে আয়োজন করেও পাকিস্তান দুবাই গেছে ভারতের বিপক্ষে খেলতে। বিমানবন্দরে রিজওয়ান ও বাবরের সেই ছবি।

ক্রিকেট এবং ক্রিকেট বাণিজ্য এখন এমন অবস্থানে এসে দাঁড়িয়ে, ভারত পূর্ব দিকে থাকলে বাকি সবাই পশ্চিমে। দুই মেরুতে অবস্থান। ২৯ বছর পর ঘরের মাঠে আইসিসির ইভেন্ট আয়োজন করেছে পাকিস্তান। লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। প্রতিবেশী দেশ ভারত অংশগ্রহণের জন্য সরকার থেকে পায়নি সবুজ সংকেত।

আইসিসির যেকোনো ইভেন্টের সূচি যেখানে তিন মাস আগে ঠিক হয়ে যায় সেখানে ভারতের কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি আটকে থাকে দিনের পর দিন।

এর আগে, এশিয়া কাপ পাকিস্তান বিনা শর্তে মেনে নিলেও এবার তারাও একটু বেঁকে বসে। ভারতকে আসতেই হবে তাদের দেশে নয় তো তারা বাদ! ভাবনা ছিল এরকমই। কিন্তু এই কথা যে, কেবল নিজেদের আলোচনার টেবিলেই ছিল বলাবাহুল‌্য। আইসিসির মিটিংয়েও এমন কথা বলা মানে নিজেদের অবস্থানকেই ছোট করে ফেলা। বাধ্য হয়ে ভারতের হাইব্রিড মডেলেই চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।

ভারত নিজেদের সব ম্যাচ খেলবে দুবাইয়ে। বাকি সব ম্যাচ পাকিস্তান। আয়োজক পাকিস্তান এক্ষেত্রে কৌশলী হতে পারত। ভারতের গ্রুপ থেকে নিজেদের সরিয়ে নিতে পারত। তাহলে তাদের ঘরের মাঠেই খেলতে হতো অন্তত গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ। এরপর সেমিফাইনাল কিংবা ফাইনালে উঠলে পরিস্থিতি বিবেচনায় সিদ্ধান্ত।

কিন্তু ওই যে ক্রিকেট বাণিজ্য এমন অবস্থানে যেখানে পাকিস্তান চাইলেও কৌশলী হতে পারবে না। আইসিসি এবং এসিসি বাড়তি লাভের আশায় এখন গ্রুপ পর্বেই ভারত ও পাকিস্তানকে সামনে দাঁড় করিয়ে দেয়। এক্ষেত্রে সুবিধা হলো যদি দুই দল ফাইনাল খেলে তাহলে এর আগ পর্যন্ত নক আউটে মুখোমুখি হতে হবে না। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিই যার বড় প্রমাণ। গ্রুপ পর্বে দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল। এরপর আবার তারা ফাইনাল খেলেছিল।

গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে তারা একসঙ্গে খেলেছিল। এরপর ভারত নক আউট পর্বে গেলেও পাকিস্তান যেতে পারেনি। ফলে তাদের ম্যাচ খেলাও আর সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ এশিয়া কাপেও একই কাণ্ড। গ্রুপ পর্বের পর দুই দল আবার সেরা চারে মুখোমুখি। ভারত ফাইনাল খেলতে পারলেও পাকিস্তান পারেনি। এবারও বাণিজ্যিক দিক থেকেই বিবেচনা করে আইসিসি দুই জায়ান্টকে একই গ্রুপে রেখেছে।

সুবিধা হলো একটাই, ক্রিকেট বাণিজ্য। দুই দলের মুখোমুখি লড়াই এখন কেবল মুখে মুখেই সীমাবদ্ধ। পুরোনো সেই জৌলুস নেই। নেই লড়াইয়ের তীব্র জেদ। খেলোয়াড়রাও সেই উত্তাপ টের পান না। গণমাধ্যম, ব্রডকাস্ট আর দর্শকই সেই উত্তেজনা টিকিয়ে রেখেছেন। সব মিলেই কিন্তু বাণিজ্য। তাইতো দুই দলের ম্যাচের টিকিট দুই ঘণ্টাও অনলাইনে থাকে না। স্টেডিয়ামের বাইরে কালোবাজারিতে বিক্রি হয় চড়া দামে। সেটা পৃথিবীর যে প্রান্তেই হোক না কেন।

স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা ২৫ হাজার। বাকিদের ভরসা টিভি সেট, অনলাইন স্ট্রিমিং। এজন্য ব্রডকাস্টরাও চওড়া দামে বিক্রি করেছে বিজ্ঞাপন। বিভিন্ন গণমাধ্যম বলছে, প্রতি ১০ সেকেন্ডের বিজ্ঞাপন বিক্রি হয়েছে ভারতীয় মুদ্রায় ২০ লাখ রুপিতে। ২০১৯ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের ওয়াচ টাইম ছিল ৩০.৪ বিলিয়ন মিনিট। টি-টোয়েন্টিতেও ওয়াচ টাইম রেকর্ডে শীর্ষে এই দুই দলের ম্যাচ। ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ভারত–পাকিস্তান ম্যাচের ওয়াচ টাইম ছিল ২২ বিলিয়ন মিনিটের মতো।

ধারণা করা হচ্ছে, এবার ভেঙে যাবে অতীতের সব রেকর্ডই। এ ম্যাচের দিকে তাই অপেক্ষা নিয়ে তাকিয়ে বিজ্ঞাপনদাতা ও প্রচারস্বত্ত্ব পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো। তাইতো ‘মওকা-মওকা’ গান প্রচার করে বাড়তি নজর কাড়ার চেষ্টাতে পুরো সফল হয়ে যান তারা।

গ্রুপ পর্বে দুই দলের প্রথম ম্যাচটি ছাড়া যদি ফাইনালে তাদের আবার দেখা হয় তাহলে তো কথাই নেই। বাণিজ্যের অঙ্কটা তখন কোথায় গিয়ে থামে, সেটি অনুমানেরও বাইরে। মাঠের ক্রিকেটের সৌন্দর্যের থেকে অর্থের ঝনঝনানি নিশ্চিত বেড়ে যাবে। আয়োজকরা সেই অপেক্ষাতেই।

সেজন্যই ক্রিকেট বাণিজ্যে আধিপত্য বিস্তার করা ভারতের জেদের কাছে একপ্রকার নত হতে হয়েছে পাকিস্তানকে! বাবর-রিজওয়ানকে তাই স্বাগতিক হয়েও লাগেজ নিয়ে বিমানবন্দর পাড়ি দিতে হয়। মাঠের ক্রিকেটে সেই জবাবটা তারা আজ দিতে পারলে কিছুটা মুখরক্ষা হলেও হতে পারে।

ঢাকা/ইয়াসিন/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ