কক্সবাজারের টেকনাফে ফেরার পথে নাফ নদী থেকে মাছ ধরার চারটি নৌকাসহ ১৯ মাঝিমাল্লাকে অপহরণ করে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ঘোলারচর এবং নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। 

টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল জলিল এবং মাঝারপাড়া নৌঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুর গফুর বিষয়টি জানিয়েছেন।

এর আগে, গত ১০ ফেব্রুয়ারি নাফ নদীর মোহনা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া চার বাংলাদেশি জেলেকে এখনো ফেরত দেয়নি আরকান আর্মি।

আরো পড়ুন:

টেকনাফে নৌকাসহ ৪ জেলেকে অপহরণ করল আরাকান আর্মি

বান্দরবানে অনুপ্রবেশকালে ৩৩ রোহিঙ্গা আটক

টেকনাফ কায়ুকখালী বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুল জলিল বলেন, “টেকনাফ ফেরার পথে আমাদের ঘাটের মাছ ধরার দুইটি ট্রলারসহ ৯ জন মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের আরকান আর্মি। এর আগে ধরে নিয়ে যাওয়া চার জেলেকেও এখনো ছাড়েনি তারা। এ ধরনের ঘটনা মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। আমরা সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।”

শাহপরীর দ্বীপ মাঝারপাড়া থেকে দুইটি নৌকাসহ ১০ মাঝিমাল্লাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মাঝারপাড়া নৌঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুর গফুর। তিনি জানান, তার ঘাটের কালাইয়া (ডাক নাম) ও জাফর আলমের মালিকানাধীন দুইটি নৌকা নাফ নদীতে মাছ ধরতে যায়। এসময় মিয়ানমারের আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে ধরে নিয়ে যায়। এতে জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী মো.

ফয়সাল উদ্দিন বলেন, “জেলেরা নদীতে মাছ শিকারে গেলে প্রায়ই তাদের মিয়ানমারে ধরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এই সমস্যার সমাধান না হলে জেলেরা মাছ ধরতে যাওয়ার সাহস পাবেন না। যা তাদের জীবিকা নির্বাহে বড় সংকট তৈরি করবে।”

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “জেলেদের ধরে নেওয়ার বিষয়টি আমরা শুনেছি। এ ঘটনায় বিজিবির সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এর আগে, ২০২৩ সালের ৬ অক্টোবর সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে ছয়টি মাছ ধরার ট্রলারে ৫৮ জন জেলে গভীর সাগরে মাছ ধরতে যান। ৯ অক্টোবর মিয়ানমার নৌ-বাহিনী তাদের অপহরণ করে। সে সময় মিয়ানমার নৌ-বাহিনীর একটি টহলরত স্পিডবোট থেকে গুলি চালানো হলে তিন জেলে গুলিবিদ্ধ হন। একজন ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে জেলেদের ফেরত আনা হয়।

সবশেষ গত বছরের ১৫ অক্টোবর মিয়ানমারের রাখাইনে আরাকান আর্মির হেফাজতে থাকা ১৬ বাংলাদেশি জেলেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ফেরত এনেছিল।

ঢাকা/তারেকুর/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অপহরণ আর ক ন আর ম ন ক সহ

এছাড়াও পড়ুন:

অপহরণের মুক্তিপণ নিয়ে পালানোর সময় ৫ পুলিশ আটক

বগুড়ার ধুনট উপজেলা থেকে দুই ব্যক্তিকে অপহরণ করে তিন লক্ষাধিক টাকা মুক্তিপণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্যসহ ছয় জনকে আটক করেছে হাইওয়ে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা ও পুলিশের একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার (২৩ মার্চ) দিবাগত রাত ৩টার দিকে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে বীরগ্রাম এলাকা থেকে কুন্দারহাট হাইওয়ে থানা পুলিশ তাদের আটক করে।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বিষয়‌টি নি‌শ্চিত ক‌রে‌ছেন। 

আরো পড়ুন:

পুলিশ ফাঁড়ির জানালা ভেঙে পালাল আসামি 

বাবাকে মানসিক রোগী সাজিয়ে হাসপাতালে ভর্তি, পরে উদ্ধার

আটকরা হলেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার এসআই শাহিন মোহাম্মদ অনু ইসলাম, কনস্টেবল রিপন মিয়া, আবুল কালাম আজাদ, মাহবুব আলম, বাশির আলী এবং মাইক্রোবাস চালক মেহেদী হাসান।

বগুড়ার পুলিশ সুপার জানান, আরএমপির গোয়েন্দা শাখার পাঁচ সদস্য রবিবার (২৩ মার্চ) রাতে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে ধুনট উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের রাব্বী ও জাহাঙ্গীরকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ক্যাসিনো খেলার অভিযোগে আটক করে মাইক্রোবাসে উঠায়। এরপর শেরপুর উপজেলার মির্জাপুরে মাইক্রোবাস থামিয়ে তাদের কাছে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। দর কষাকষি করে নগদ দুই লাখ টাকা এবং বিকাশ ও নগদ অ্যাপসের মাধ্যমে আরো এক লাখ ৩০ হাজার টাকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। বগুড়া জেলা পুলিশ ঘটনাটি জানতে পেরে শেরপুর ও শাজাহানপুর থানা এলাকায় তাদের ব্যবহৃত মাইক্রোবাস আটক করার চেষ্টা করে। দুই থানা পুলিশ মাইক্রোবাস আটক করতে না পেরে হাইওয়ে পুলিশের সহযো‌গিতায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে শাজাহানপুর থানার বীরগ্রাম এলাকায় মাইক্রোবাসটি আটক করা হয়। 

পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, মাইক্রোবাসে থাকা পাঁচজন নিজেদের রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার সদস্য পরিচয় দেন। পরে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে নিশ্চিত হওয়া যায়, তারা কাউকে না জানিয়ে বগুড়ায় অসৎ উদ্দেশ্যে এসেছিলেন। পরে তাদের আটক করা হয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে নেওয়া নগদ দুই লাখ টাকা ও একটি ওয়াকিটকি উদ্ধার করা হয়।

পু‌লিশ সুপার আরো জানান, ধুনট উপজেলার বাসিন্দা ওয়াহাব নামে একজন কনস্টেবল রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত। তিনি ছুটি নিয়ে  দুই দিন আগে বাড়িতে আসেন। তার তথ্য মতেই রাজশাহী থেকে পাঁচ পুলিশ ধুনটে আসেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধনে জানা গেছে।

তি‌নি জানান, আটকদের হাইওয়ে পুলিশ ধুনট থানায় হস্তান্তর করেছে। তাদের নামে ভুক্তভোগীদের একজন বাদী হয়ে অপহরণ মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

ঢাকা/এনাম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপহরণের দুদিন পর হা-মীম গ্রুপের কর্মকর্তার লাশ মিলল
  • অপহরণের দুদিন পর হামিম গ্রুপের কর্মকর্তার লাশ মিলল
  • অপহরণের দুদিন পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তার লাশ মিলল
  • বরিশালে সেনাসদস্যকে অপহরণ করে মারধর, হিজলা উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিবসহ তিনজন গ্রেপ্তার
  • কক্সবাজারে গাড়ি থামিয়ে মসজিদের ইমামকে অপহরণ, পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি
  • অপরাধের সংখ্যা কমেছে বেড়েছে হত্যা ডাকাতি
  • অপহরণের মুক্তিপণ নিয়ে পালানোর সময় ৫ পুলিশ আটক
  • ঠাকুরগাঁওয়ে তরুণের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
  • ব্যবসায়ীকে অপহরণ: যুবদলের সাবেক সভাপতি ও জানাক নেতাসহ আটক ৫
  • বিয়ের জন্য কাজী ডাকতে গেল প্রেমিক, প্রেমিকাকে নিয়ে পালাল বন্ধু