ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাস থেকে দেশি অস্ত্র উদ্ধার, জমা পড়েছে তদন্ত প্রতিবেদন
Published: 21st, February 2025 GMT
ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে তল্লাশিকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের উত্তেজনার ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি গতকাল বৃহস্পতিবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। আজ শুক্রবার বৈঠক করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
এদিকে গত বুধবার সন্ধ্যার পর ছাত্রাবাস থেকে রামদা ও দেশি অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় থানায় কোনো মামলা হয়নি।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ মহানগর শাখার সদস্যসচিব আল নূর মো.
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক নেতা বলেন, কলেজের ছাত্রাবাসগুলোর ওয়াশরুমসহ বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু কলেজ প্রশাসন সেগুলো বের করতে চাইছে না। বৈষম্যবিরোধীদের চাপে গতকাল রাত ৮টার দিকে কিছু অস্ত্র বের করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। সেগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পেয়েছে দেখিয়ে জড়িতদের বাঁচাতে চাচ্ছে।
এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়া গেছে। শুক্রবার একাডেমিক কাম প্রশাসনিক কাউন্সিলের বৈঠক করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যেসব অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা পাওয়া গেছে সেগুলো পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম খান বলেন, ‘কিছু দেশীয় অস্ত্র পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুনবৈষম্যবিরোধীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের উত্তেজনা, ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ বন্ধ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গত সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্রাবাসে তল্লাশিকে কেন্দ্র করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের সঙ্গে সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি পক্ষের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এর জেরে রাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদেরও হল ত্যাগের নির্দেশ দেয় কলেজ প্রশাসন। পরদিন একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাউন্সিলের সভায় পুরো ঘটনা ও অভিযোগের বিষয় তদন্তে জেনারেল সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যপক রফিকুল ইসলামকে প্রধান করে ৯ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেই কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।
নগরের রহমতপুর বাইপাস এলাকায় ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তিনটি বিভাগে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। আগে কলেজে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ ছিল। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর কলেজে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে কলেজ প্রশাসন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল জ র ছ ত র ব স তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন, শ্যামগঞ্জ-জারিয়ায় রেল যোগাযোগ বন্ধ
নেত্রকোনার পূর্বধলায় একটি যাত্রীবাহী চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে হঠাৎ করে আগুন ধরে। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘণ্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আজ বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শ্যামগঞ্জ-জারিয়া রেলপথের জারিয়া আনসার ক্যাম্প বালুঘাটা সেতুর কাছে বলাকা ডাউন ট্রেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বেলা একটার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওই রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পূর্বধলা স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোনার শ্যামগঞ্জ-জারিয়া রেলপথে প্রতিদিন পাঁচটি ট্রেন আসা যাওয়া করে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে একটি বলাকা ডাউন ট্রেন রয়েছে। অন্য চারটি লোকাল ট্রেন ময়মনসিংহ থেকে ওই পথে চলাচল করে। আজ বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে বলাকা ট্রেনটি ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে পূর্বধলার জারিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রেনটি পূর্বধলা স্টেশনে পৌঁছে। এর তিন মিনিট পর ওই স্টেশন থেকে পরের স্টেশন জারিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কিন্তু দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জারিয়া আনসার ক্যাম্প বালুঘাটা সেতুর কাছে পৌঁছালেই ট্রেনের ইঞ্জিনে হঠাৎ করে আগুন ধরে যায়। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা আগুন নেভাতে চেষ্টা চালান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
ট্রেনে থাকা যাত্রী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ট্রেনে করে ময়মনসিংহ থেকে জারিয়া যাচ্ছিলাম। পূর্বধলা স্টেশন থেকে ট্রেন ছাড়ার প্রায় ১৫ মিনিট পরই ট্রেনের ইঞ্জিনে হঠাৎ করে অস্বাভাবিক কালো ধোঁয়া আর আগুন দেখতে পাই। আতঙ্কে যাত্রীরাও হইহুল্লোড় শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনে থাকা লোকোমাস্টার ট্রেন থামাতে বলেন। এরপর স্থানীয় লোকজন পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে ইঞ্জিনের আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে ট্রেনে থাকা যাত্রী বা অন্য কোনো বগির ক্ষতি হয়নি।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জারিয়া এলাকার বাসিন্দা তরিকুল মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুপুর পৌনে ১২টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি ইঞ্জিনে আগুন ধরা একটি যাত্রীবাহী ট্রেন বালুঘাটা সেতু এলাকায় এসে থেমেছে। আগুন দেখে স্থানীয় নারী-পুরুষ সবাই গামলা, কলসি, বালতিতে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে কাছে পানি থাকায় আমরা সবাই মিলে প্রায় ৯০ শতাংশ আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে ফায়ার সার্ভিস পৌঁছায়।’
এ বিষয়ে পূর্বধলা রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার আবুল মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইঞ্জিনের একটি যন্ত্র থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল বলে জেনেছি। আগুন লাগার বিষয়টি টের পেয়ে চালক সঙ্গে সঙ্গে ট্রেন থামিয়ে দেন। আগুনে ইঞ্জিনটির ক্ষতি হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর পুরো ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানা যাবে। আর আগুন লাগা ইঞ্জিনটি বেশ পুরোনো ছিল। ময়মনসিংহ থেকে উদ্ধারকারী ট্রেনের ইঞ্জিন রওনা হয়েছে। ট্রেনটি শ্যামগঞ্জ জংশনে নিয়ে যাওয়া হবে। দুপুর পৌনে ১২টা থেকে শ্যামগঞ্জ-জারিয়া রেললাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।’