এয়ারটেলের ৫ কোটি ১০ লাখ শেয়ার বিক্রি করেছেন সুনীল মিত্তাল
Published: 21st, February 2025 GMT
ভারতীয় ধনকুবের সুনীল মিত্তাল টেলিকম কোম্পানি এয়ারটেলের ৫ কোটি ১০ লাখ শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। মোট ৯৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার বা ৮ হাজার ৪৫৮ কোটি রুপির বিনিময়ে এই শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। এই শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে তিনি নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগ করবেন বলে জানানো হয়েছে।
ভারতের পত্রিকা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সংবাদে বলা হয়েছে, সুনীল মিত্তালের ইন্ডিয়ান কনটিনেন্টাল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের এসব শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এসব শেয়ারের প্রায় এক-চতুর্থাংশ কিনে নিয়েছে ভারতী টেলিকম লিমিটেড। মিত্তালের ছেড়ে দেওয়া বাকি শেয়ারও অন্য বিনিয়োগকারীরা কিনে নিয়েছেন। তবে কোন বিনিয়োগকারীরা এসব শেয়ার কিনে নিয়েছেন, তাঁদের তথ্য প্রকাশ করা হয়নি। গত মঙ্গলবার এসব শেয়ার ১ হাজার ৬৬০ রুপিতে বিক্রি করা হয়েছে। যদিও গত সোমবার এসব শেয়ারের দাম ছিল ১ হাজার ৬৭৫ রুপি।
সুনীল মিত্তাল এখন ভারতের চেয়ে অন্যান্য দেশে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছেন। এই মুহূর্তে তিনি আফ্রিকা ও যুক্তরাজ্যভিত্তিক স্যাটেলাইট কোম্পানি ওয়ান ওয়েবে বিনিয়োগ করছেন।
এদিকে সুনীল মিত্তালের শেয়ার কিনে নেওয়ার মধ্য দিয়ে এয়ারটেলে ভারতী টেলিকমের হিস্যা ৪০ দশমিক ৪৭ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। ভারতী টেলিকম আগেই বলেছিল, এয়ারটেলে নিজেদের অবস্থান তারা আরও শক্তিশালী করবে; অর্থাৎ এই কোম্পানিতে তারা নিজেদের প্রাধান্য বজায় অক্ষুণ্ন রাখবে।
ভারতী টেলিকম এই প্রথম যে মিত্তালের কোম্পানির শেয়ার কিনছে, তা কিন্তু নয়। এর আগে গত বছরের নভেম্বরে তারা ইন্ডিয়ান কনটিনেন্টাল ইনভেস্টমেন্টের আরও ১ দশমিক ২ শতাংশ শেয়ার কিনে নিয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে এয়ারটেলে তাদের একরকম একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলনের সময় ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ তরুণীর
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুমকে বারবার জানালেও তিনি কারও সহযোগিতা পাননি। তবে উমামা ও নুসরাত এই তরুণীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুনাব) ও জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স নামের দুটি সংগঠন ‘আন্দোলনে নারীর শক্তি, নারীর কথা: শিক্ষা, নেতৃত্ব ও সম্ভাবনার দিগন্ত’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে অংশ নিয়ে ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানান। তাঁর এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
অভিযোগকারী তরুণী বলেন, ‘২০–২৫ জন নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজের পাশের কলেজ রোডের গলিতে আজমেরী ওসমানের বাড়ির নিচে একটা অফিসে নিয়ে যায়। আমাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আশপাশে অনেক মানুষ থাকলেও কেউ সামনে আসেননি আটকানোর জন্য। আমাকে মারধর করে মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা। সেই অফিসে নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে অনেক বাজে বাজে কথা বলেছে, অনেক বাজে গালিগালাজ করেছে, আমার পরিবার নিয়েও অনেক কথাবার্তা বলেছে। বাজে কথাও শুনতে হয়েছে। পরে ওখান থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে দুজন ছিল। দুজন মিলে পরে আমাকে ধর্ষণ করে। এটা এখন পর্যন্ত কোনো গণমাধ্যমে আসেনি। আমি নিজেই আসতে দিইনি। এখন পর্যন্ত তারা (অপরাধী) ঘুরছে, এখনো শাস্তি হয়নি।’
সারজিস আলম, উমামা ফাতেমা ও নুসরাত তাবাসসুম তাঁর ঘটনাটি জানেন বলে উল্লেখ করেন ওই তরুণী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘১০ নভেম্বর আমি কনসিভ (গর্ভধারণ) করি। উমামা ফাতেমাকে যখন আমি জানাই, তখন তিনি বলেন, “তোমার সাথে না অনেক খারাপ হইছে। আচ্ছা, দেখবোনে বিষয়টা।” শেষ। এখানেই ক্লোজ করে দিয়েছে টপিক। নুসরাত তাবাসসুম আপুকে জানাই। উনি আমাকে বলেন, “তুই আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস।” টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় আমি তাঁর পাশের টেবিলে বসে হোয়াটসঅ্যাপে নক করি। তিনি হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজগুলো দেখলেও কোনো রিপ্লাই করেননি।’
এই তরুণীর যে অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, সেখানে অংশ নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। অনুষ্ঠানের পর জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির নারী সেল ও আইন সেল রয়েছে। ওই তরুণী যোগাযোগ করলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ অস্বীকার
অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে উমামা ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর জায়গা থেকে ওই তরুণীকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছেন।
এ ছাড়া অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের পর আহনাফ তাহমিদ নামের এক ব্যক্তি বিষয়টির কড়া সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। ওই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে নুসরাত তাবাসসুম ফেসবুকে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। অভিযোগকারী তরুণীর নাম উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘একবার আমার সামনে এনে তাকে অভিযোগ করতে বলেন যে তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয়নি। তাকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা—সবকিছুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু। কিন্তু তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না।’
এদিকে বক্তব্যের বিষয়ে জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে রাত নয়টার দিকে ওই তরুণীর মুঠোফোনে কল করা হলে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।