পদ্মার চরে গৃহবধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার তিন যুবকের স্বীকারোক্তি
Published: 21st, February 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট এলাকায় ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে এক গৃহবধূ সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে ট্রলারে ওঠার পর যাত্রীবেশী তিন যুবক সংঘবদ্ধ হয়ে জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণ করেন।
চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় পদ্মা সেতু উত্তর থানায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পরে বুধবার রাতে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত ইয়ামিন মুন্সী (১৯), জামাল মোল্লা (২৩) ও জব্বার শেখকে (১৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ বিভাগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বুধবার রাতে গ্রেপ্তারকৃত তিন যুবক বৃহস্পতিবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের সংশ্লিষ্ট আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে আসামিদের জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি জনৈক গৃহবধূ তার স্বামীসহ পদ্মা সেতু (উত্তর) থানায় হাজির হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে থানা পুলিশ তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে মামলা রুজু করে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করে।
পরদিন ১৮ ফেব্রুয়ারি পদ্মা নদীর পাড় থেকে অভিযুক্ত জামাল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তার দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতে ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৭টার দিকে পদ্মা সেতু সংলগ্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপর দুই অভিযুক্ত ইয়ামিন ও জব্বারকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে আসামিরা জানান যে, ভুক্তভোগী গৃহবধূ পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট থেকে তার স্বামীর বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশে ঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করাকালে অভিযুক্ত আবু বকর সিদ্দিক ও জামাল মোল্লা তাকে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ট্রলারে উঠায়। পথিমধ্যে অপর দুই অভিযুক্ত ইয়ামিন ও জব্বার ট্রলারে ওঠে। সন্ধ্যা আনুমানিক সাড়ে ৭টার দিকে নদীপথে নির্জনতার সুযোগে ভুক্তভোগীকে বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক জনমানবহীন পদ্মা নদীর ডোমরাখালী চরে নিয়ে চারজন মিলে ধর্ষণ করে।
পরবর্তীতে অভিযুক্তরা মাওয়া পুরাতন কোস্ট গার্ড স্টেশনের পাশে ভিকটিমকে রাত আনুমানিক ৯টার দিকে ট্রলার থেকে নামিয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য হুমকি দিয়ে দ্রুত চলে যায়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, অভিযুক্ত তিনজনই বৃহস্পতিবার আদালতে দোষ স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনায় ব্যবহৃত নৌকা এবং আলামত হিসাবে একটি জিও ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভুক্তভোগী গৃহবধূর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়েছে এবং তার ব্যবহৃত জামাকাপড় আলমাত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। বর্তমানে মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান এবং পলাতক অপর আসামিকে গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ হবধ
এছাড়াও পড়ুন:
সিলেট জামায়াতের আমিরের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানালো শিবির
সিলেটের এমসি কলেজের শিক্ষার্থী মিজানুর রহমান রিয়াদের ওপর হামলার ঘটনায় ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীদের সম্পৃক্ততার কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সিলেট মহানগরীর আমির মো.ফখরুল ইসলামের দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর শাখা।
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) গণমাধ্যমে প্রেরিত সিলেট মহানগর শিবিরের প্রচার ও মিডিয়া সম্পাদক নাঈম হোসাইন স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
বিবৃতিতে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও সিলেট মহানগর সভাপতি শাহীন আহমদ ও মহানগর সেক্রেটারি শহিদুল ইসলাম সাজু যৌথভাবে বলেন, “সিলেটের এমসি কলেজে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বে হাতাহাতির ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ফায়দা হাসিল করতে ছাত্রশিবিরের ওপর দায় চাপিয়ে আসছে। সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির ফখরুল ইসলামের প্রদত্ত একটি বক্তব্য আমাদের নজরে আসে। আমরা তার এই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এতে আরও বলা হয়, শিক্ষার্থীদের পারস্পরিক দ্বন্দ্বকে সংঘবদ্ধ অপপ্রচারের মাধ্যমে ছাত্রশিবিরের ওপর দায় দিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা ইতোমধ্যে দেশবাসীর দৃষ্টিগোচর হয়েছে। সিলেট মহানগর জামায়াতের আমিরও এ অপপ্রচার দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছেন বলে আমরা মনে করছি। আমরা অবিলম্বে এ বক্তব্য প্রত্যাহারের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, সিলেটের এমসি কলেজে ছাত্রাবাসে তালামীযে ইসলামিয়ার এক কর্মীকে মারধরের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের কিছু কর্মী জড়িত বলে তালামীযে ইসলামিয়ার সঙ্গে এক বৈঠকে জানায় জামায়াতে ইসলামী। তারা এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশও করেন।
বৈঠকে সিলেট মহানগর জামাতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম বলেন, এমসি কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে সেই ঘটনার নিন্দা জ্ঞাপন করছি, দুঃখ প্রকাশ করছি। বিশেষ করে ফেসবুকের একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে সেখানে যে বাড়াবাড়িটুকু হয়েছে আমাদের দৃষ্টিতে সেখানে ছাত্রশিবিরের কিছু সংখ্যক কর্মী সেটার সাথে জড়িত। এবং যেটা করেছে সেটা অন্যায়ভাবে করেছে। এটা দুঃখজনক।
বিএইচ