মৌলভীবাজারে পলাশের রঙে প্রকৃতি, গাছের ডালে আগুনবন্যা
Published: 21st, February 2025 GMT
‘পলাশ ফুলের মউ পিয়ে ওই/ বউ-কথা-কও উঠল ডেকে’ কিংবা ‘পিন্দাড়ে পলাশের বন পালাব পালাব মন/ নেংটি ইন্দুরে ঢোল কাটে হে কাটে হে/ বতরে পিরিতির ফুল ফুটে।’ গানের এই পঙ্ক্তিগুলো কমবেশি অনেকের কানের কাছে কখনো না কখনো বেজে উঠেছে। গানের সুর, কথা মনকে উদাস করেছে। বুকের ভেতর বেজেছে ঘোরলাগা মাদলের ডাক।
প্রকৃতিতে এখন বসন্ত। বউ কথা কও, নয়তো কোকিল পাখির ডাক শুরু হয়ে গেছে প্রকৃতিতে। পাতার আড়ালে বসে দুই-চারটা কোকিল মুখর হয়ে উঠছে দিনে, রাত দুপুরে। বসন্তের বাতাস বইছে। গাছের পাতায় পাতায় বিলি কাটছে নতুন হাওয়া। ঝিরিঝিরি গান ফুটছে ঝরাপাতাদের বনে। শিমুল-পলাশের বনে ঢেউ তুলছে আগুনবন্যা। দগদগে লাল শিখার মতো সবুজের বুকে জ্বলে উঠছে পলাশ ফুল, বসন্তের মন রাঙানোর খেলা।
এ অঞ্চলের পথের পাশে, নদ-নদীর পারে, হাওরপারে, কারও বাড়ির কোনো এক কোণে তবু কিছু শিমুলের দেখা পাওয়া যায়। পাতা ঝরিয়ে ডালে ডালে ফুটে থাকে লাল, হলদেটে রঙের শিমুল ফুল। এই ফাল্গুনের দিনে, নয়তো রাতের কোনো এক সময় এই ফুল ঝরে পড়ছে ধুলায়, ঘাসের বুকে। সেই দিক থেকে পলাশের দেখা পাওয়ার সুযোগ একেবারেই কম। পথ চলতে কিংবা কোনো সংরক্ষিত এলাকায় কদাচিৎ কোথাও দু–একটা পলাশগাছের দেখা পাওয়া যায়। তারা নীরবে-নিভৃতে ফুটে থাকে। অচেনা-অদেখা হওয়ায় এই অঞ্চলের অনেকের কাছে পলাশ শুধুই একটি নাম আর যতটুকু পরিচয়-তা ওই ছবিতেই।
তবে শুধু ছবিতে নয়, এই পলাশ ফুলের সঙ্গে সম্প্রতি এক দুপুরে সরাসরি দেখা হয়েছে মৌলভীবাজারে বর্ষিজোড়া ইকোপার্কসংলগ্ন বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় কার্যালয় এলাকায়। সেখানে দুটি গাছে ঝেঁকে পলাশ ফুটেছে। মৌলভীবাজার শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে কার্যালয়টির অবস্থান।
বন বিভাগের বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা মির্জা মেহেদী সরোয়ার জানিয়েছেন, এখানে মাঘের শেষেই পলাশের গাছে ফুল ফুটতে শুরু করেছে। ফাল্গুনে ডালে ডালে পলাশের ফুল।
গাছতলায় ঝরে পড়া পলাশ ফুল। মৌলভীবাজারে বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের কার্যালয় প্রাঙ্গণে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শিল্পকলায় অনুষ্ঠিত হলো ‘সাধুমেলা’
মানবিকতা ও ঐক্যের শাশ্বত বার্তা সমাজের প্রতিটি হৃদয়ে পৌঁছে দিতে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে গত ১৭ এপ্রিল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় একাডেমির নন্দনমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয়েছে সাধুমেলা “মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি”।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। সাধুমেলায় শুরুতে সমবেত কণ্ঠে লালনের ‘ভক্তিমূলক গান’ পরিবেশিত হয়। লালনসংগীত পরিবেশন করেন ফকির শামসুল সাঁই, ‘তিন পাগলে হলো মেলা’ পরিবেশন করেন মেহেরুন নেসা পূর্ণিমা। উপস্থাপনা করেন শেখ জামাল উদ্দিন টুনটুন। শ্রীকৃষ্ণ গোপাল পরিবেশন করেন ‘লীলার যার নাইরে সীমা’ এবং ‘দেখো দেখো মনো রায় হয়েছে’। গান পরিবেশন করেন দিপা মণ্ডল। ওমর আলী পরিবেশন করেন ‘আচলা ঝোলা তিলক মালা’। লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোঃ মিরাজ সিকদার ‘আমি ওই চরণে দাসের যোগ্য নই’, আকলিমা ফকিরানী এবং লাভলী শেখ ‘রসো প্রেমে ঘাট ভাড়িয়ে তরী বেওনা’।
পরিবেশনা নিয়ে মঞ্চে আসেন মোঃ সমির হোসেন, ফারজানা আফরিন ইভা পরিবেশন করেন ‘আমায় রাখিলেন সেই কূপজল করে’ এবং লালনের গান ‘মন তোর এমন জনম আর কী হবে রে’ পরিবেশন করেন মোঃ মুক্তার হোসেন। এরপর লালনসংগীত পরিবেশন করেন মোসাঃ লিনা খাতুন ‘কোথায় সে অটল রূপে বারাম দেয়’, মনিরুল ইসলাম এবং আবু শাহীন খান ‘চিরদিন পুষলাম এক অচিন পাখি’। সবশেষে সমবেত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় লালনের গান।