Prothomalo:
2025-04-18@07:29:28 GMT

লিপিকলায় দ্রোহ ও মিছিলের ভাষা

Published: 21st, February 2025 GMT

মিছিলের স্লোগানে স্লোগানে সারা শহর উত্তপ্ত। শুধু শহর বলছি কেন, গোটা দেশ থেকেই এ যেন একই স্বরে আওয়াজ উঠছে সব দিক থেকে। ঢাকার প্রতিটি রাস্তা থেকে মিছিলে মিছিলে মানুষের ঢল। স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে সবার এক কণ্ঠস্বর। প্রত্যেক মানুষ তাঁর অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ শক্তি ও সামর্থ্য দিয়ে আন্দোলনে অংশ নিচ্ছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে শুরু করে রাজপথ পর্যন্ত ছাত্র-জনতার গগনবিদারী স্লোগানে একটাই দাবি—দফা এক, দাবি এক/ স্বৈরাচারের পদত্যাগ। চারপাশে ভয়ের আবহ, তবু সেই ভয়কে উপেক্ষা করে সবাই রাস্তায় নেমেছেন।

এমন এক উত্তাল সময়ে, একজন বাংলা অক্ষরশিল্পের কারিগর হিসেবে, স্বৈরাচারের প্রতি ক্রোধ ও আক্রোশ আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করছিল। গলি থেকে ভেসে আসা প্রতিটি স্লোগান আমাকে অস্থির করে তুলেছিল।

আমার যাবতীয় কর্মযজ্ঞের ব্যস্ততা আর জীবনযাপনের ভেতর জুলাই আন্দোলনের প্রভাবে হঠাৎ কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার কয়েকটি পঙ্‌ক্তি অবচেতনভাবে আমার চেতনাকে গ্রাস করে ফেলে।

নানান জায়গা থেকে সতর্কতামূলক সচেতনবার্তা আবার অন্যদিকে ঘোষণা দিয়ে একপ্রকার হুমকি প্রদান; আন্দোলনের অংশগ্রহণের পরিণতিতে আমার কী ক্ষয় হতে পারে, এ রকম সচেতনতার নামে হুমকি দেখিয়ে যেন মূক, অন্ধ ও বধির করে ফেলতে চাইছিল। কিন্তু প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিলের সংবাদ এই সব ভয় স্পর্শ করেনি। এসব চাপ ও অস্থিরতার ভেতর দিয়েই অন্যদিকে অনবরত বেজে চলছে—

‘আমি উন্মাদ, আমি উন্মাদ

আমি চিনেছি আমারে

আজিকে আমার খুলিয়া গিয়াছে সব বাঁধ।’

জুলাইয়ের ৩০ তারিখ। সারাটি দিন এই পঙ্‌ক্তি জপে চলছি মনে মনে। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার মুহূর্তেও এই পঙ্‌ক্তি আমাকে ঘুমাতে দেয় না। একদিকে একের পর এক ছাত্রদের গুলি করে যাচ্ছে খুনির দল, অন্যদিকে দ্বিগুণ হয়ে ছাত্র-জনতা আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। কারও মনে ভয় নেই, কারও পিছু হটার সুযোগ নেই। এমনকি যারা আন্দোলনে সরাসরি অংশ নিচ্ছেন না, তাঁদের মনেও প্রবল উত্তেজনা। মনে হচ্ছিল, পুরো জাতি যেন ঘুমহীন হয়ে পড়েছে।

কাজী নজরুল ইসলামের বিদ্রোহী কবিতার অনুপ্রেরণায় জুলাই আন্দোলনকে উৎসর্গ করে এই ফন্টের নামকরণ করা হয় ‘দ্রোহ’।.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভুলবশত বিতাড়িত ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন মার্কিন সিনেটর

যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত এল সালভাদর বংশোদ্ভূত কিলমার আবরেগো গার্সিয়ার সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ করেছেন মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা ইতিমধ্যে স্বীকার করেছেন, কিলমারকে ভুল করে যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ড থেকে বিতাড়িত করে এল সালভাদরের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

কিলমারের সঙ্গে সাক্ষাতের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন ম্যারিল্যান্ডের ডেমোক্রেটিক সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন।

মার্কিন এক ফেডারেল বিচারকের আদেশ সত্ত্বেও কিলমারকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

এই সাক্ষাতের পর কিলমারকে মুক্তি দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়েব বুকেলে। তিনি বলেছেন, কিলমার দেশটির কারা হেফাজতেই থাকবেন।

হোয়াইট হাউসের অভিযোগ, কিলমার ট্রান্সন্যাশনাল সালভাদোরিয়ান গ্যাং এমএস-১৩-এর সদস্য।

এমএস-১৩ যুক্তরাষ্ট্রের তালিকাভুক্ত বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন। কিলমারের আইনজীবী হোয়াইট হাউসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

ঘটনাটি এমন একসময় ঘটল, যখন অভিবাসন নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও দেশটির বিচার বিভাগের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে।

গত বুধবার অন্য একটি মামলায় এক মার্কিন বিচারক বলেছেন, বিতাড়ন ফ্লাইটের জেরে প্রশাসনকে আদালত অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত করা যেতে পারে।

মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে বলেছেন, ‘আমি বলেছি, আমার এই সফরের মূল লক্ষ্য ছিল কিলমারের সঙ্গে দেখা করা। আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে আমার সেই সুযোগ হয়েছিল। আমি তাঁর স্ত্রী জেনিফারকে ফোন করে তাঁর (কিলমার) ভালোবাসার বার্তা পৌঁছে দিয়েছি। আমি দেশে ফিরে আসার পর পূর্ণ হালনাগাদ তথ্য জানানোর জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি।’

এল সালভাদরের সেন্টার ফর দ্য কনফাইনমেন্ট অব টেররিজমে (সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কারাগার) বন্দী আছেন কিলমার।

মার্কিন সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন জানান, এদিন কারাগারটিতে কিলমারের সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় সশস্ত্র রক্ষীরা তাঁকে থামিয়ে দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনকারাগারে রাখার জন্য ভেনেজুয়েলার ২৩৮ নাগরিককে এল সালভাদরে পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র১৬ মার্চ ২০২৫

সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেন কয়েক দিন ধরে এল সালভাদরে অবস্থান করছেন। তিনি কিলমারের মুক্তির জন্য কাজ করছেন। তাঁর অঙ্গরাজ্যেই বসবাস করে আসছিলেন কিলমার।

এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট এক্সে (সাবেক টুইটার) সিনেটর ক্রিস ভ্যান হোলেনের সঙ্গে কিলমারের সাক্ষাতের ছবি রিপোস্ট করেন। এই রিপোস্টে তিনি কিলমারের সুস্থতা নিয়ে উদ্বেগকে উপহাস করেছেন বলে মনে হয়।

আরও পড়ুনভুলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত ব্যক্তিকে ফেরত দেবে না এল সালভাদর: প্রেসিডেন্ট নায়েব১৫ এপ্রিল ২০২৫

বিবিসির খবরে বলা হয়, গত ১২ মার্চ মার্কিন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ আইসিই মেরিল্যান্ডে চলন্ত গাড়ি থেকে কিলমারকে গ্রেপ্তার করে। কোনো ধরনের নোটিশ, আইনিপ্রক্রিয়া বা শুনানি ছাড়াই তিন দিনের মাথায় গত ১৫ মার্চ তাঁকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিতাড়িত করে এল সালভাদরের কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

বিবিসির খবরে আরও বলা হয়, কিশোর বয়সে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা কিলমারের বয়স এখন ২৯ বছর। ২০১৯ সালে আরও তিন ব্যক্তির সঙ্গে মেরিল্যান্ডে তিনি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় একজন অভিবাসন বিচারক তাঁকে বিতাড়ন থেকে সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার দিয়েছিলেন। এর কারণ হিসেবে বিচারক বলেছিলেন, কিলমারকে দেশে ফেরত পাঠানো হলে স্থানীয় সন্ত্রাসী দল তাঁর ক্ষতি করতে পারে।

আরও পড়ুনফিলিস্তিনি বাবার ছেলে এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট, ট্রাম্পের নয়া বন্ধু কে এই নায়েব বুকেলে১৬ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ