মহান শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস আজ
Published: 20th, February 2025 GMT
মাতৃভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। আজ মহান একুশে ফেব্রুয়ারি, মহান ভাষা শহীদ ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস।
সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যদায় এ দিবসটি পালিত হবে। রাজধাানী ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ এবং বিভিন্ন স্থানে ভাষা শহীদদের নিয়ে আলোচনা সভাসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতি একুশ’র মহান ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।
রাত ১২টা ১ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে একুশ’র কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এছাড়াও কালো ব্যাজ ধারণ, প্রভাতফেরি সহকারে আজিমপুর কবরস্থানে শহীদদের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে।
আরো পড়ুন:
চির নিদ্রায় শায়িত ভাষা সৈনিক বড়দা
হিলির শূন্যরেখায় দুই বাংলার ভাষাপ্রেমিদের মিলনমেলা
মহান ভাষা শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টা ড.
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো) মহান একুশের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি দেয়ার পর থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গত কয়েক বছর ধরে এ দিবসটি পালিত হচ্ছে।
বাংলাদেশী বাঙালিদের জন্য এই দিবসটি হচ্ছে শোক ও বেদনার। অন্যদিকে, মায়ের ভাষা বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত।
১৯৫২ সালের এদিনে ‘বাংলাকে’ রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে পূর্ব বাংলার (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ছাত্র ও যুবসমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ সে সময়ের শাসকগোষ্ঠির চোখ-রাঙ্গানি ও প্রশাসনের ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে। মায়ের ভাষা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দুর্বার গতি পাকিস্তানি শাসকদের শংকিত করে তোলায় সেদিন ছাত্র-জনতার মিছিলে পুলিশ গুলি চালালে সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন।
একুশে ফেব্রুয়ারি সরকারি ছুটি। এদিন দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সঠিক নিয়মে, সঠিক রং ও মাপে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে।
দিবসটি পালন উপলক্ষে জাতীয় অনুষ্ঠানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সকল স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশনগুলো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আজিমপুর কবরস্থানে ফাতেহা পাঠ ও কোরানখানির আয়োজনসহ দেশের সকল মসজিদে ভাষা শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ দোয়া এবং উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন উপলক্ষে ঢাকা শহরের বিভিন্ন সড়কদ্বীপে ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা জনক স্থানগুলোতে বাংলা ভাষার বর্ণমালা সম্বলিত ফেস্টুন দ্বারা সজ্জিত করা, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেরিভিশন এবং অন্যান্য স্যাটেলাইট চ্যানেলগুলোতে একুশের বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার এবং ভাষা শহীদদের সঠিক নাম উচ্চারণ, শহীদ দিবসের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা, শহীদ মিনারের মর্যাদা সমুন্নত রাখা, সুশৃঙ্খলভাবে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ, ইত্যাদি জনসচেতনতা মূলক বিষয়ে সরকারি ও বেসরকারি গণমাধ্যমগুলোতে প্রয়োজনীয় প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া, বিভিন্ন জাতীয় সংবাদপত্র বিশষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।
ঢাকা/হাসান/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এক শ ফ ব র য় র এক শ র সরক র দ বসট
এছাড়াও পড়ুন:
পহেলা বৈশাখে গ্রাম বাংলার হারিয়ে যাওয়া লাঠি খেলা
ঢোলের তালে মুহুর্মুহু আঘাত, প্রতিরোধের খটাখট শব্দে মুখরিত হয়ে জমে উঠেছে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা। চারদিকে উৎসুক জনতা ভিড় করে উপভোগ করে খেলাটি। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য নতুন উদ্যমে ফিরিয়ে আনতে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলা প্রশাসন এ লাঠি খেলার আয়োজন করে।
সোমবার উপজেলা পরিষদ চত্বরে বেলা ১১টা থেকে শুরু হয়ে প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী চলে এ লাঠি খেলা। খেলায় লাঠি খেলার পাশাপাশি বুকের উপর ইট রেখে মাটি কাটার কোদাল দিয়ে আঘাত করে পরপর তিনটি ইট ভাঙা হয়। যা ছিল খেলার অন্যতম আকর্ষণ। উপজেলার গোপীনাথপুর ইউনিয়নের আবাদপুর এবং পার্শ্ববর্তী ক্ষেতলাল উপজেলার দেওগ্রাম থেকে দক্ষ লাঠিয়ালরা খেলা প্রদর্শন করেন।
খেলা দেখতে আসা রুপক হোসেন নামের এক দর্শনার্থী বলেন, আধুনিক যুগে এধরনের গ্রামীণ খেলাধুলা হারিয়ে যেতে বসেছে। এখনকার প্রজন্ম ডিজিটাল মাধ্যমে আসক্ত হয়ে পড়ছে। এধরনের আয়োজন প্রতিনিয়ত হওয়া প্রয়োজন। খেলা দেখে খুব আনন্দ পেয়েছি।
মনির হোসেন নামের এক লাঠিয়াল বলেন, আমাদের এ দেশীয় খেলাগুলো দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আগে প্রতিনিয়ত গ্রামগঞ্জে এধরনের লাঠি খেলা হতো। আমরা টাকার বিনিময়ে চুক্তিতে খেলতাম। এখন আর আগের মতো খেলা হয় না। এতে আয় রোজগার কমে গেছে। এ খেলাগুলোকে রক্ষা করা দরকার।
আয়োজক উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনজুরুল আলম বলেন, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাওয়া গ্রামীণ খেলা ফিরিয়ে আনতে আমাদের এ আয়োজন। খেলাটি উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও এধরনের গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন অব্যাহত থাকবে।