দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেবেন না দ্রুত নির্বাচন দিন
Published: 20th, February 2025 GMT
দেশকে অস্থিতিশীল এবং নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে না দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘জাতিকে আর অনিশ্চয়তার মধ্যে না রেখে, অস্থির অবস্থায় না রেখে দয়া করে দ্রুত নির্বাচন দিন। যতটুকু সংস্কার দরকার, ততটুকু সংস্কার করেন। কালবিলম্ব না করে দ্রুত নির্বাচন দেন, ভোটের একটা রোডম্যাপ জনগণকে জানিয়ে দেন। যে সরকার গঠিত হবে তার পেছনে জনগণ থাকবে। জনগণ না থাকলে সে সরকার কাজ করতে পারবে না।
তাই জনগণের নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দিন।’
গতকাল বৃহস্পতিবার কুমিল্লার লাকসাম স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাষ্ট্র সংস্কারে ৩১ দফা বাস্তবায়নে লাকসাম উপজেলা ও পৌরসভা এবং মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি এ জনসভার আয়োজন করে।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে বলব, আপনারা এমন কোনো কথা বলবেন না যাতে জাতির ঐক্য নষ্ট হয়। এ মুহূর্তে দেশে ঐক্যের বড় প্রয়োজন। এ ক্রান্তিকালে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
সংস্কার প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সত্যিকার অর্থে মানুষ সংস্কার বলতে বুঝে, দুই বেলা দুই মুঠো ভাত, মোটা কাপড়, মাথার ওপরে ছাদ, অসুস্থ হলে চিকিৎসা, ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া। এখন যে ব্যবস্থা চলছে তাতে শান্তি আসবে না। রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপি যে ৩১ দফা দিয়েছে তাতেই সমাধান আছে।’
জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। দলটির কেন্দ্রীয় শিল্পবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালামের সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) সেলিম ভূঁইয়া, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মোস্তাক মিয়া, দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আক্তারুজ্জামান সরকার, সদস্য সচিব তারেক মুন্সি, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক উৎবাতুল বারী আবু প্রমুখ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ব এনপ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি তখন খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন: বিএনপি
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বরং বিএনপি সংস্কারেরই দল। তবে সবকিছুর মূলে জনগণ। জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয়।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির আলোচনার শুরুতে নজরুল ইসলাম খান এ কথা বলেন।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমরা গতকাল প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি বিএনপি সংস্কারের বিপক্ষে নয় বিএনপি সংস্কারেরই দল। কিন্তু কেউ কেউ নানান কথা বলেন। তারা যখন সংস্কারের দন্তস্য উচ্চারণ করেননি তখন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ভিশন ২০৩০ দিয়েছেন।’
সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে বিএনপির সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জাতীয় সংসদের এলডি হলে শুরু হয়েছে।
গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আমাদের সামনে আরেকবার একটা সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে আমরা তা কাজে লাগাতে চাই। আমরা এই কমিশনকে সহযোগিতা করছি এই সরকারকে সহযোগিতা করছি সেই প্রত্যাশা নিয়েই।’
যদি ঐকমত্য কমিশনের কোনো সনদ নাও হয়, বিএনপির জন্য সংস্কারের সনদ রয়েছে বলেন নজরুল ইসলাম খান। সবকিছুর মূলে জনগণ এবং জনগণের সম্মতিতে যেন সব হয় বলেন তিনি। আরও বলেন, ‘আর জনগণ কার মাধ্যমে সম্মতি জানায় আমরা জানি।’
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাঈল জবিউল্লাহ,আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সচিব নিরুজ্জামান খান অংশ নেন।
আজ দিনব্যাপী এই আলোচনা চলতে পারে বলে ঐক্য কমিশন সূত্রে জানা গেছে। আজ আলোচনার শেষ না হলে প্রয়োজনে আগামী সপ্তাহে আবারও বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসবে কমিশন।
আলোচনার শুরুতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে বাংলাদেশে একটি স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে পারি।’
আরও পড়ুনসরকার বলছে ডিসেম্বর–জুনের মধ্যে নির্বাচন, ‘অসন্তুষ্ট’ বিএনপি১০ ঘণ্টা আগেসংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করে। প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান, জনপ্রশাসন, নির্বাচনব্যবস্থা, বিচার বিভাগ, এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত চায় ঐকমত্য কমিশন। সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৮টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ১৩ মার্চের মধ্যে দলগুলোকে মতামত দিতে বলা হয়েছিল। মতামতের ভিত্তিতে ইতিমধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা শুরু করেছে ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করবে ঐকমত্য কমিশন এর ভিত্তিতেই হবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন।