নোয়াখালীতে মাজারে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, আহত ১০
Published: 20th, February 2025 GMT
নোয়াখালীর সদর উপজেলায় শাহ সুফি আইয়ুব আলী দরবেশের মাজারে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে একদল লোক এ হামলা ও ভাঙচুর চালায় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এসময় ওরশের প্যান্ডেলসহ পুরো মাজার ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় এবং একটি টিনের ঘরে আগুন দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে নোয়াখালী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি), সুধারাম থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। সুধারাম মডেল থানার ওসি মোঃ কামরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, কালাদরাপ ইউনিয়নের মুন্সির তালুক গ্রামের শাহ্সূফী আইুব আলী দরবেশের মাজারে আজ বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিনব্যাপী ৫৭তম ওরশ অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রস্তুতি চলছিল। একইদিন বিকেলে মাজারের পাশে সোলেমান মার্কেট এলাকায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে ওয়াজ মাহফিল করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এনিয়ে সকাল থেকে এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে তৌহিদী জনতার ব্যানারে সহস্রাধিক লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে মাজারে হামলা-ভাঙচুর চালায়। এ সময় নারীসহ অন্তত ১০ জন আহত হন। আহতদেরকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
স্থানীয় কালা দরাপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ উল্যাহ সেলি বলেন, মাজার মানেই ঢোল বাদ্য বাজানো। স্থানীয় মুন্সীর তালুক গ্রামের জামে মসজিদের পাশেই মাজারের অবস্থান। প্রতিবছর মাজারের ওরশের ঢোল বাদ্য বাজনার কারণে রাতে গ্রামবাসী ঘুমাতে পারেন না। ইউনিয়নের লোকজন ও বিভিন্ন মসজিদের ইমাম-মুসুল্লিরা আমার কাছে এসে ওরস বন্ধ করার অনুরোধ জানান। আমি ওরসের আয়োজকদের চলতি বছর ওরস না করার জন্য অনুরোধ করলেও তারা শোনেননি। বৃহস্পতিবার দুপুরে তারা ওরস শুরু করলে এক-দেড় হাজার লোক বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে মাজারের ওরসে হামলা- করে ভাঙচুর করেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার শাহ নেওয়াজ তানভীর বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৌঁছার আগেই মাজারে হামলা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। স্থানীয় মুসল্লিদের সাথে কথা বলে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে কাজ করছে প্রশাসন।
সুধারাম মডের থানার ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, স্থানীয়রা মাজার ভাঙচুর করেছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী ও পুলিশ উপস্থিত থাকলেও এক-দেড় হাজার লোকের সঙ্গে কিছু করা সম্ভব ছিলনা। মাজারের ওরস নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করায় পুলিশের একটি টহল দল সেখানে ছিল। নিষেধ অমান্য করে ওরস শুরু করলে হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
চুয়াডাঙ্গায় বাসচাপায় ভ্যানচালকসহ নিহত ২
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় যাত্রীবাহী বাসচাপায় ভ্যানচালকসহ দুজন নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ মহাসড়কের নয়মাইল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত দুজন হলেন সদর উপজেলার কুতুবপুর গ্রামের বাসিন্দা ভ্যানচালক আবদুর রাজ্জাক (৬৫) এবং মোহাম্মদজমা গ্রামের চাল ব্যবসায়ী সরোয়ার হোসেন (৭০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকালে মোহাম্মদজমা গ্রাম থেকে সরোয়ার হোসেন চালের বস্তা নিয়ে ব্যাটারিচালিত ভ্যানে সরোজগঞ্জ হাটে যাচ্ছিলেন। সিন্দুরিয়া গ্রামের একটি গ্রামীণ সড়ক দিয়ে এসে নয়মাইল এলাকায় মহাসড়কে ওঠার সময় চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে আসা ঝিনাইদহগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ভ্যানটিকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলে ভ্যানচালক ও যাত্রী নিহত হন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিন্দুরিয়া পুলিশ ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে নিহত ব্যক্তিদের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠান।
চুয়াডাঙ্গা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম সরকার বলেন, বাসের চাপায় ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং নিহত ব্যক্তিদের দেহ ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে। তাঁদের শনাক্ত করতে সময় লেগেছে।