এমসি কলেজের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতিবাদের ঝড়
Published: 20th, February 2025 GMT
সিলেট মুরারিচাঁদ কলেজের (এমসি কলেজ) দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে শিক্ষার্থীরা এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতাদের পাঠানো খবরে থাকছে বিস্তারিত-
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি)
দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার প্রতিবাদে রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে বিক্ষোভ মিছিল করেন চবির বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইনকিলাব মঞ্চ।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা-সন্ত্রাস, একসাথে চলে না’, ‘এমসি কলেজে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘এমসি কলেজে হামলা হলে, আবরার তোমায় মনে পড়ে’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘এমসি কলেজে হামলা হলে, আবরার তোমায় মনে পড়ে’, ‘সন্ত্রাসীদের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক আরিয়ান রাকিব বলেন, “এমসি কলেজে যে ঘটনা ঘটেছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। হামলায় শিবিরের নাম এসেছে। তদন্ত সাপেক্ষে যারা দোষী, তাদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তামিরুল মিল্লাত মাদরাসায়ও শিক্ষার্থীদের উপর হামলার খবর এসেছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে বলবো, অপরাধ করলে কোন নেতাকর্মীকে ছাড় দেবেন না। সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার চেষ্টা করলে শক্তহাতে, তা প্রতিরোধ করা হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সবসময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে।”
চবি ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক রাফসান রাকিব বলেন, “এমসি কলেজ, কুয়েট, মিল্লাতসহ সব হামলায় যারা জড়িত, প্রত্যেকের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে অপরাজনীতির সিস্টেম থেকে বের হতে হবে। যেখানে অন্যায় সেখানেই আমাদের প্রতিবাদ। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দখলদারত্বি, সন্ত্রাসের রাজনীতি আর চলতে দেওয়া যাবে না।”
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি)
শিক্ষার্থীদের শিবিরের মারধরের প্রতিবাদ এবং আওয়ামী দোসরদের বিচার ও কার্যক্রম নিষিদ্ধকরণের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন ইবি শিক্ষার্থীরা।
রাত সোয়া ৯টায় ক্যাম্পাসের জিয়া মোড় থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে তারা। পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রশাসন ভবন চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে আন্দোলনকারীরা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সভা সেমিনারে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা উপস্থিত থেকে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদের দোসররা ক্যাম্পাসে এখনো দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন এখনো ফ্যাসিবাদের দোসর এসব শিক্ষকদের বিরূদ্ধে কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারেনি। অনতিবিলম্বে প্রশাসনকে আওয়ামী দোসরদের বিচার ও ক্যাম্পাসে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
তারা বলেন, সিলেটের এমসি কলেজে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার যে ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সন্ত্রাসীদের কোন দল হয় না, পরিচয় হয় না। একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর উপর যে ন্যাক্কারজনক হামলা হয়েছে, অতিদ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সমন্বয়ক এস এম সুইট, সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য প্রদান করেন।
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (নোবিপ্রবি)
শিক্ষার্থীর উপর এ ন্যাক্কারজনক হামলা ও ক্যাম্পাসগুলোতে অরাজকতা সৃষ্টির প্রতিবাদে রাতে মশাল মিছিল করেছে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে বক্তরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।
ঢাকা/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষ র থ র উপর র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্ডাস্ট্রির ব্র্যান্ডিং সময়ের দাবি
বাংলাদেশে আইসিটি পরিষেবায় নিয়োজিত ইন্ডাস্ট্রি নেতা ও সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে রাজধানীতে ইফতার ও দোয়া মাহফিলের উদ্যোগ নেয় তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিকম খাতে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীদের সরকারি তালিকাভুক্ত পেশাজীবী সংগঠন বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরাম (বিআইজেএফ)।
আইসিটি নিয়ে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মী ছাড়াও ব্যবসায়ী নেতা, জনসংযোগ প্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও শুভানুধ্যায়ীরা এতে অংশ নেন। আইসিটি নেতাদের মিলনমেলায় পরিণত হয় বিআইজেএফ ইফতার মাহফিল। দোয়ায় সংগঠনের প্রয়াত সদস্য ও সদস্যের প্রয়াত আত্মীয়স্বজনের রুহের মাগফেরাত ও দেশ ও জাতির কল্যাণ প্রত্যাশায় মাহফিলে উপস্থিত সবাই দোয়ায় শরিক হন। ইফতার শেষে তথ্য ও টেলিকম ইন্ডাস্ট্রির সময়োপযোগী বিষয় নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন অতিথিরা।
আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির ব্র্যান্ডিং প্রসঙ্গে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, আইসিটি পরিষেবা খাতে আমাদের অবস্থান এখন আগের তুলনায় সুদৃঢ়। এখন উচিৎ এ খাতের সফলতা সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে সঠিক তথ্যসহ উপস্থাপন করা। সেক্ষেত্রে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির ওপর সংশ্লিষ্ট সবার আস্থা ফিরবে। ফলে সার্বিকভাবে আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মানোন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
তরুণ উদ্যোক্তার প্রতি যত্নশীল না হওয়ায় আমরা তাদের মেধার সুফল নিতে পারছি না। তারা নিয়মিত দেশ ত্যাগ করছেন। নিরাশ উদোক্তার প্রতি যথাযথ পদক্ষেপ নিয়ে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নের তাদের অংশীজন করতে হবে। এসব কথা বলেন বেসিস সাবেক সভাপতি ও ২০২৪-২০২৬ মেয়াদের বিআইজেএফ প্রধান নির্বাচন কমিশনার এস এম ইকবাল।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কন্ট্যাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) মহাসচিব ফয়সাল আলিম বিগত ১৬ বছরের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের সব ধরনের দুর্নীতি খবর সাংবাদিকদের তুলে ধরতে আহবান জানান। তিনি দেশের ক্রান্তিলগ্নে তথ্য ও প্রযুক্তি খাতকে গুছিয়ে আনতে তাদের সঙ্গে প্রযুক্তিপ্রেমী ও সাংবাদিকদের ভূমিকার উল্লেখ করেন। বিগত সরকারের গৃহিত প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে বলে জানান।
বাক্কোর যুগ্ম মহাসচিব মুসনাদ ই আহমেদ বলেন, সবাই মিলে ইন্ডাস্ট্রির উন্নয়নে ইনক্লুসিভ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সামনের বাংলাদেশে ব্র্যান্ডিং হয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে অগ্রযাত্রায় শামিল হওয়া সময়ের দাবি।
অতিথির মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইআইজিএবি) সভাপতি আমিনুল হাকিম, মহাসচিব আহমেদ জুনায়েদ, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সভাপতি ইমদাদুল হক, বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান, হেড অব করপোরেট কমিউনিকেশনস গাজী তৌহিদ আহমেদ, আইসিসি কমিউনিকেশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, ডিএক্স গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দেওয়ান কানন, পরিচালক লিটন বিশ্বাস, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিংয়ের (বাক্কো) পরিচালক সায়মা শওকত, এডিএন টেলিকম লিমিটেডের চেয়ারম্যান আসিফ মাহমুদ, রেড ডেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মইন উদ্দিন আহেমেদ, সেলেক্সট্রা লিমিটেডের উপ-মহা ব্যবস্থাপক নাহিয়ান মাহমুদ, সহজ লিমিটেডের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা কর্নেল (অব.) আমিনুল হক, গো বাংলা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তফা জামান, উল্কাসেমির ব্যবস্থাপক মো. মুজাম্মেল হোসেইন, এরিনাফোন বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলে রাব্বি, গ্লোবাল ব্র্যান্ড পিএলসি, রিভ গ্রুপের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা রায়হান হোসেন, মোবাইল ফোন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর মনিরুর বাসার, অপো বাংলাদেশের ব্র্যান্ড প্রমোশন ম্যানেজার নাজমুস সাকিব, রিয়েলমি ব্র্যান্ডের পাবলিক রিলেশন বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শাহেদ মোরশেদ জায়গীরদার, ইউমিডিজি ব্রান্ডের সেলস অ্যান্ড অপারেশন হেড মাসুকুর রহমান প্রমুখ।
ইফতার মাহফিল পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান। আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন নির্বাহী সদস্য নাজনীন নাহার। সার্বিক দায়িত্বে অংশ নেন সভাপতি হিটলার এ. হালিম, সহ-সভাপতি ভূঁইয়া ইনাম লেনিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তুষার, কোষাধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম শান্ত, প্রকাশনা ও গবেষণা সম্পাদক মাহবুবুর রহমান ও নির্বাহী সদস্য এনামুল করিম।