কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু অন্তবর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেছেন, “সংস্কারের নামে যদি ষড়যন্ত্র করেন, তাহলে বিএনপি মেনে নেবে না। অবিলম্বে আপনারা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। আমরা চাই না আপনারা ব্যর্থ হন। গত ১৬ বছরে বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে ১ লাখ ৫০ হাজার মিথ্যা মামলা হয়েছে। সংস্কার সংস্কার করে তালবাহানা করবেন না।”

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নগরীর নতুন বাজার দলীয় কার্যালয়ে দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ, আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, পতিত স্বৈরাচারের দোসরদে বিচার ও দ্রুত গণতান্ত্রিক যাত্রাপথে উত্তরণের জন্য নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেন, “বাংলাদেশে দুটি বড় দল আছে। এখনে একটা, আরেকটা দল পালিয়ে গেছে। ঐ দল যখনই ক্ষমতায় আসে, তখনই মানুষের মানবাধিকার লুণ্ঠন করে। ২০০৮ সালের নির্বাচন ছিল প্রহসনের নির্বাচন। ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিন বিদেশিদের ষড়যন্ত্র করে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল। তারা ক্ষমতায় বসার পরপরই নিজেদের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্য এদেশের জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন, লাঞ্চনা-বঞ্চনা শুরু করে। যেমন বিডিআর হত্যাকাণ্ড, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, এরকম গত ১৬ বছরে প্রায় ৮ হাজার মানুষকে গুম-খুন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার।”

তিনি বলেন, “মানুষের সর্ব প্রকার অধিকার হরণ করেছে। আর এ সরকার নাকি সংস্কার করবে। যদি আপনারা সংস্কার করতে চান প্রথম যেটা দরকার সেটা হলো পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী পেতাত্মাদের বিচার করতে হবে। তাদেরকে আগে বিচারের সম্মুখিন করেন। যখন তাদেরকে বিচার করতে পারবেন তখন বুঝব আপনাদের ক্ষমতা আছে।” 

তিনি আরো বলেন, ‘‘আপনারা ক্ষমতায় বসে আছেন কিন্তু কোন দায়িত্ব পালন করছেন না ঠিকমতো। অতএব আমরা চাই ক্ষমতার ব্যবহারের আগে দায়িত্ব পালন করুন।” 

তিনি বলেন, “বিএনপি একটি উদার গণতান্ত্রিক দল। যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই মানুষের অধিকার, ঐ পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাতান্ত্রিক দল থেকে আমাদের দেশের মানুষকে অধিকার ফেরত দিয়েছে। আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছি।” 

মিন্টু বলেন, “১৯৯০ সালে প্রথম অবাধ ও সুষ্ঠু গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে তখন স্বৈরাচারী সরকারকে সরিয়ে সরকার গঠন করেছি। তখন আমাদের আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্বে এদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। আমি একইসাথে আমাদের সেই নেত্রীর সুস্বাস্থ্য কামনা করি। তিনি এখন বিদেশে আছেন, চিকিৎসা করাচ্ছেন, আশা করি অতি শিগগিরই উনার স্বাস্থ্য ঠিক হয়ে যাবে এবং আমাদের মাঝে ফিরে আসবেন।”

ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক জাকির হোসেন বাবলুর সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব রোকনুজ্জামান সরকার রোকনের সঞ্চালনায় জনসভায় বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরীফুল আলম, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ, অ্যাডভোকেট ওয়ারেস আলী মামুন, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলমসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় বিএনপি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

ঢাকা/মিলন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ষমত য় আম দ র ব এনপ আপন র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা

অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আজ বৃহস্পতিবার এ মামলা হয়। মামলায় শেখ হাসিনা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রাব্বি আলমসহ ৭২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী মামলা হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেছেন ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা। সম্প্রতি ‘জয় বাংলা ব্রিগেড’ নামের একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্মের ভার্চ্যুয়াল মিটিংয়ে শেখ হাসিনাসহ অন্যরা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করেন।

ওমর ফারুক ফারুকী আরও বলেন, বিষয়টি জানার পর সিআইডির একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে আদালতে শেখ হাসিনাসহ অন্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। মামলাটি সিআইডিকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিকে আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সিআইডি বলেছে, গত বছরের ১৯ ডিসেম্বর অনলাইন মিটিংয়ে জয় বাংলা ব্রিগেড গঠন করে শেখ হাসিনাকে ফের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা বুঝিয়ে দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আসামিরা। ওই মিটিংয়ে ৫৭৭ জন অংশ নেন।

সিআইডি বলেছে, নেতা-কর্মীদের কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড পর্যালোচনায় জয় বাংলা ব্রিগেড নামক প্ল্যাটফর্মে দেশ–বিদেশ থেকে অংশগ্রহণকারীরা বৈধ সরকারকে শান্তিপূর্ণভাবে দেশ পরিচালনা করতে দেবে না বলে আলোচনা করেন। তাঁরা বর্তমান সরকারকে উৎখাত করার জন্য গৃহযুদ্ধের ঘোষণা দেন, যেখানে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধের সুস্পষ্ট উপাদান রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গৃহযুদ্ধের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা
  • সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা