প্রত্যাশিত ফলটাই পেল ভারত। বাংলাদেশ কতটা লড়াই করতে পারে সেটাই ছিল দেখার। নিশ্চিতভাবে সেখানেও ফেল। ভারতের ৬ উইকেটের জয় সেই কথাই বলছে।

চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে মাঠে নামার ঘোষণা দিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু প্রস্তুতি ম্যাচেই যে হতশ্রী পারফরম্যান্স ছিল, তাতে ভারতের বিপক্ষে বাজি ধরার লোক পাওয়া যাবে না তা অনুমেয়ই ছিল। পাকিস্তান শাহীনসের বিপক্ষে বাংলাদেশের সঙ্গী হয়েছিল বিবর্ণ ব্যাটিং ও নির্বিষ বোলিং।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও একই চিত্র। টস জিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে ২২৮ রানে শেষ বাংলাদেশের ইনিংস। অথচ এই ম্যাচে তাওহীদ হৃদয় পেয়েছেন প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। জাকের আলী খেলেছেন ৬৮ রানের ইনিংস। তারপরও ব্যাটিংয়ের এই দশা।

আরো পড়ুন:

দ্রুততম ১১ হাজারে দ্বিতীয় রোহিত

হারের পর জরিমানা গুনলো পাকিস্তান

বোলাররা তবুও কিছুটা লড়াই করেছিল। তুলে নিয়েছিল রোহিত, কোহলি, আইয়ারদের উইকেট। কিন্তু পুঁজি কম থাকায় লড়াইটা একদমই জমেনি। কেননা অপরপ্রান্তে শুভমান গিল ছিলেন অনবদ্য, দায়িত্বশীল। তার দ্যুতি ছড়ানো অপরাজিত ১০১ রানের ইনিংসে ভর করে অনায়েসেই জয় দিয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের লড়াই শুরু করলো মেন ইন ব্লুরা।

বাংলাদেশের ইনিংসের শুরু ও শেষের চিত্র পুরোটাই আলাদা। ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারানো দল শেষ পর্যন্ত ২২৮ রান করবে তা হয়তো কেউ কল্পনাও করতে পারেনি। ইনিংসে চার ব্যাটসম্যানই খুলতে পারেননি রানের খাতা। সিঙ্গেল ডিজিটে আউট আরো দুই ব্যাটসম্যান।

শুরুতে তানজিদ ২৫ রান করে যা করার করেছিলেন। এরপর গল্পটা কেবল তাওহীদ ও জাকেরের। হ্যাটট্রিক বলে ক্যাচ তুলেও জীবন পেয়ে যাওয়া জাকের খেলেন ৬৮ রানের লড়াকু ইনিংস। আর ক্র্যাম্প নিয়ে সেঞ্চুরি করে থামেন তাওহীদ।

ম্যাচ পরিস্থিতি বিবেচনায় দুজন চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায় যেভাবে ব্যাটিং করে গেছেন তা মুগ্ধতা ছড়িয়েছে। শুরুর পাঁচ ব্যাটসম্যানের মতো উইকেট বিলিয়ে না এসে মাটি কামড়ে টিকে ছিলেন। শুরুতে প্রতিরোধ গড়েছেন। এরপর রান বের করার চেষ্টা করেছেন। তারপর প্রতি আক্রমণে গিয়ে স্কোরবোর্ড সচল করেন।

৮৭ বলে জাকের ও তাওহীদ ৮৫ বলে ফিফটি তুলে নেন। জাকের ফিফটির পর ৬৮ রানে থেমে গেলেও তাওহীদ সেঞ্চুরি তুলে ক্ষান্ত হন। নব্বইয়ের ঘরে ঢোকার আগে কুলদীপ, জাদেজার বলে তার ছক্কা দর্শকদের আনন্দে ভাসায়। আবার পেসারদের পুল ও কাট শটেও মু্গ্ধতা ছড়ান।

সেঞ্চুরির আগে ক্র্যাম্প পড়ে মনোযোগ নড়ে যায় তার। শরীর আগাচ্ছিল না। রান নিতে ভুগছিলেন। এর আগে তার ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস ছিল ৯৬ নট আউট। এবারও কী তার সেঞ্চুরি পাওয়া হবে না? না, দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এমন কিছু হলো না। ৪৯তম ওভারের প্রথম বলে, শামির করা বোলিংয়ে এক রান নিয়ে সেঞ্চুরির ল্যান্ডমার্কে পৌঁছান। তামিম ইকবালের পর দ্বিতীয় বাংলাদেশি ক্রিকেটার হিসেবে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে সেঞ্চুরি করার গৌরব অর্জন করেন তাওহীদ। ১৮৫ মিনিট ক্রিজে থেকে ৬ চার ও ২ ছক্কায় ১১৮ বলে ১০০ রান আসে তার ব্যাট থেকে।

ধ্বংসস্তুপে সেঞ্চুরির ফুল ফুটিয়েছেন তাওহীদ। তীব্র লড়াইয়ে জাকের পেয়েছেন ফিফটির স্বাদ। দুজনের ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে রান ১৫৪। যা চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ইতিহাসে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রান। তাতেই বাংলাদেশ শিবিরে কিছুটা স্বস্তির পরশ। কিন্তু স্বল্প এই পুঁজি নিয়ে জয়ের স্বপ্ন তো আর আঁকা যায় না। বোলাররা লড়াই করলেও শেষ হাসিটা হেসেছে টিম ইন্ডিয়াই।

রোহিত ও গিল শুরুতে চড়াও হয়ে ৬৯ রানের জুটি গড়েন। চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে পাওয়ার প্লে কাজে লাগান দুর্দান্তভাবে। তাসকিন আহমেদ এ জুটি ভাঙেন রোহিতকে ফিরিয়ে। ৩৬ বলে ৭ চারে ৪১ রান করেন রোহিত। তিনে নামা কোহলি বেশিদূর যেতে পারেননি। ৩৮ বলে ২২ রান করে রিশাদের বলে পয়েন্টে ক‌্যাচ দেন। আইয়ারকে থামান মোস্তাফিজ। ১৫ রানে ক‌্যাচ দেন মিড অফে। ব‌্যাটিং অর্ডারে প্রমোশন পাওয়া অক্ষর পারেননি সুযোগ কাজে লাগাতে। ৮ রানে তাকে সাজঘরের পথ দেখান রিশাদ।

১১২ থেকে ১৪৪ রানে যেতে ভারত ৩ উইকেট হারালেও গিল ও রাহুল ৯৮ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান সহজেই। গিল অষ্টম ওয়ানডে সেঞ্চুরিটি সাজান ৯ চার ও ২ ছক্কায়। জাকের আলীর হাতে জীবন পাওয়া রাহুল অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে।

ব‌্যাটসম‌্যানদের ব‌্যাটিং ব‌্যর্থতার দিনে আরেকটি শোচনীয় হার বাংলাদেশের নামের পাশে যুক্ত হতো। গিলের সেঞ্চুরি ছাপিয়ে আলোচনায় থাকতে পারতেন তাওহীদ। কিংবা জাকের আলী। কিন্তু দুবাইয়ে সব আলো কেড়ে নিলেন ওই গিলই।

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন কর য টসম উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

জনসংখ্যা বাড়াতে নতুন আইন করল চীন

এক সময় জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ‘এক সন্তান নীতি’ কঠোরভাবে অনুশীলন করত চীন। সেই চীন এখন জনসংখ্যা জনসংখ্যা বাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে।

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের আর্থিক অনুদান চালু করে বিয়ে ও সন্তান উৎপাদনে উৎসাহ দিচ্ছে বেইজিং। এবার বিয়ের আইনও শিথিল করল শি জিনপিংয়ের প্রশাসন।

পিপলস ডেইলি জানিয়েছে, চীনের বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় হুকু-ভিত্তিক (স্থায়ী ঠিকানায়) বিয়ে নিবন্ধনের বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। নতুন আইনের অধীনে, দম্পতিদের আর তাদের হুকু-এর স্থানে বিয়ে নিবন্ধন করতে হবে না। এখন অস্থায়ী ঠিকানাতেও বিয়ে নিবন্ধন করা যাবে।

আরো পড়ুন:

কাদাপানিতেও নিখুঁত কাজ করবে চীনের বুদ্ধিমান ক্যাসন রোবট

চীনের অধরা সংস্কৃতির পুনরুদ্ধারে অদম্য ইয়াং

চীনে এতদিন বিয়ে সরকারিভাবে নিবন্ধন করার জন্য পাত্র ও পাত্রীকে তাদের স্থায়ী ঠিকানায় আইনি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে হতো। অর্থাৎ, কারো যদি বাড়ি গ্রামে হয় এবং তিনি চাকরিসূত্রে বেইজিংয়ে থাকেন, তাহলে এতদিন তিনি বেইজিংয়ে বিয়ে নিবন্ধন করতে পারতেন না। তাকে যেতে হতো গ্রামের বাড়িতে। তাতে এক দিকে যেমন সময় যেত, তেমনই যাতায়াতের ভাড়াও গুনতে হতো।

এখন থেকে পাত্র-পাত্রী অস্থায়ী ঠিকানা অর্থাৎ চাকরিসূত্রে কিংবা অন্য কোনো কারণে অস্থায়ীভাবে যেখাবে বসবাস করছেন, সেখানেই আইনি প্রক্রিয়ায় বিয়ে করতে পারবেন।

চীন সরকার মনে করছে, নতুন এই আইনের ফলে সময়, যাতায়াত খরচ ও অন্যান্য বিড়ম্বনা কমবে। এতে চীনা তরুণ–তরুণীরা বিয়েতে আরো আগ্রহী হয়ে উঠবে।

গত এক দশক ধরেই চীনের জনসংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। এর পেছনে রয়েছে বিয়ের সংখ্যা কমে যাওয়া এবং শিশু জন্মহার কমে যাওয়া। চীন সরকারের তথ্যমতে, ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে বিয়ের হার কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। শিশু জন্মের হারও ঠেকেছে তলানীতে। এ অবস্থায় জনসংখ্যা বাড়াতে বিয়ে ও সন্তান উৎপাদনে নানাভাবে প্রণোদনা দিচ্ছে চীন সরকার।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ