ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ
Published: 20th, February 2025 GMT
দুই প্রতিবেশীর সম্পর্কের অস্বস্তি কাটাতে গত বছরের ডিসেম্বরে ঢাকায় এসেছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি। এবার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ফোরাম যৌথ পরামর্শক কমিটির (জেসিসি) সভায় যোগ দিতে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে ঢাকা।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো.
গত রোববার ওমানের রাজধানী মাসকাটে ইন্ডিয়ান ওশান কনফারেন্সে যোগ দিয়েছিলেন তৌহিদ হোসেন। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি এস জয়শঙ্করের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের বিষয়ে সাংবাদিকেরা আজ সকালে পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জানতে চেয়েছিলেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের সঙ্গে শুরুতে যে টানাপোড়েন ছিল, সেটা সবাই জানে। আমরা স্বীকারও করেছি তা। এরপর পররাষ্ট্রসচিবেরা বৈঠক করেছেন। এরপর ব্যবসা মোটামুটি বেড়েছে। আগের জায়গায় (ব্যবসা) পৌঁছে গেছে। এগুলো প্রত্যেকটাই তো ইঙ্গিত।’ তবে কিছু টানাপোড়েন এখনো রয়ে গেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ভিসাসহ কিছু সমস্যা আছে। কিন্তু দুই পক্ষই আমরা মোটামুটি এ ব্যাপারে একমত হয়েছি যে এগুলো সব দূর করে একটা “ইতিবাচক কাজের সম্পর্কের” বিষয়ে আমাদের পৌঁছাতে হবে।’
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানানোর বিষয়টি উল্লেখ করে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, দুই দেশের পররাষ্ট্রসচিব পর্যায়ে বৈঠক হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়েও আলোচনার প্রক্রিয়া আছে।
ঢাকা সফরের আমন্ত্রণের বিষয়ে জয়শঙ্করের প্রতিক্রিয়া কী ছিল, জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘আমি যে ইঙ্গিতগুলো দিয়েছি, সেসব ব্যাপারে তিনি ইতিবাচক।’
ওমানের বৈঠকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে নিজেদের উদ্বেগ আর চ্যালেঞ্জ দূর করতে একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সুনির্দিষ্ট করিনি যে আমাদের মধ্যে এই এই উদ্বেগ আছে। আমরা স্বীকার করেছি, কিছু উদ্বেগ রয়ে গেছে, এগুলো আমাদের দূর করতে হবে এবং দুই পক্ষ একমত এগুলো দূর করতে হবে।’
ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর জন্য দিল্লিকে চিঠি দিয়েছিল ঢাকা। তাঁকে ফেরানোর বিষয়টি নিয়ে মাসকাটে আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘ওটা নিয়ে সুনির্দিষ্ট করে আলোচনা হয়নি। আমরা সার্বিকভাবে সব বিষয় নিয়েই কথা বলেছি।’ তাহলে কি শেখ হাসিনার প্রসঙ্গটিকে সরিয়ে রেখে দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার কথা ভাবছে ঢাকা? এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘সরিয়ে রাখার আসলে ব্যাপার না। এটা তো একটা আলাদা বিষয় (শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো) আদালত চেয়েছে তাঁকে। আমরা তাঁকে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ করেছি। তারা করেনি। এর মানে তো এই নয় যে আমরা বাকি সবকিছু নিয়ে বসে থাকব।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পরর ষ ট রমন ত র পরর ষ ট র উপদ ষ ট ত র পর দ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
হাসিনাবিরোধী জনরোষ সম্পর্কে অবগত ছিল ভারত: জয়শঙ্কর
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের আগে বাংলাদেশে হাসিনাবিরোধী জনরোষ তৈরি হওয়ার ব্যাপারে ভারত অবগত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যদের শনিবার এই কথা জানিয়েছেন জয়শঙ্কর। তবে, শেখ হাসিনার ওপর পর্যাপ্ত প্রভাব না থাকায় 'পরামর্শ' দেওয়া ছাড়া ভারত তেমন কিছু করার পরিস্থিতিতে ছিল না বলেও পার্লামেন্ট সদস্যদের জানান তিনি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সদস্যরা ভারতের পররাষ্ট্রনীতি নিয়ে আলোচনার জন্য জয়শঙ্করের সঙ্গে ওই বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রতিবেশী দেশগুলো বিশেষ করে বাংলাদেশ, মিয়ানমার, মালদ্বীপ, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়, জয়শঙ্করের ইঙ্গিত ছিল, অন্যান্য প্রধান অংশীদারদের মতো বাংলাদেশের ভেতরের উত্তাল পরিস্থিতি সম্পর্কে ভারত অবগত ছিল। এ প্রসঙ্গে, তিনি জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার টুর্কের সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি সম্প্রতি বিবিসির এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, বাংলাদেশে জুলাই–আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলন চলাকালে দমন–পীড়নে অংশ না নিতে সেনাবাহিনীকে সতর্ক করেছিল জাতিসংঘ।
'আমরা প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনীকে সতর্ক করি, যদি তারা এতে জড়িত হয়, তার অর্থ দাঁড়াবে তারা হয়ত আর শান্তিরক্ষী পাঠানোর দেশ থাকতে পারবে না,' বলেন ভলকার টুর্ক।