রোহিঙ্গাদের সহায়তায় ৩০ লাখ ইউরো দেবে ইতালি
Published: 20th, February 2025 GMT
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ৩০ লাখ ইউরো ডলার দেবে ইতালি। এই অর্থ জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির (ডাব্লুএফপি) মাধ্যমে শরণার্থী শিবিরে মানবিক সেবায় ব্যয় করা হবে। বাংলাদেশ ইউএনএইচসিআরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ইতালির সহায়তা শরণার্থীদের অধিকার ও মানবিক পরিস্থিতি উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ইউএনএইচসিআরকে ১০ লাখ ইউরো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। যা নিবন্ধন, আশ্রয়, স্বাস্থ্যসেবা, পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্য সচেতনতার মতো জরুরি পরিষেবাগুলো নিশ্চিতে ব্যয় করা হবে। বাকি ২০ লাখ ইউরো খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখতে ডাব্লুএফপিকে সহযোগিতা করবে। একই সঙ্গে সে অর্থ দিয়ে মা, শিশু, গর্ভবতী এবং মাতৃদুগ্ধ নারীদের অপুষ্টি প্রতিরোধের পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিতে ব্যয় করা হবে।
ঢাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিয় আলেসান্দ্রো বলেন, এ সহায়তা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রতি ইতালির প্রতিশ্রুতির বহিঃপ্রকাশ। আর এ প্রতিশ্রুতি সম্প্রতি ঢাকা সফরে ইতালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মারিয়া ত্রিপোদি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ ইউএনএইচসিআর প্রধান সুম্বুল রিজভি বলেন, এ সহায়তা রোহিঙ্গা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ইতালির জনগণের সংহতির প্রমাণ। আমরা জানি যে, আন্তর্জাতিক সমর্থন আমরা সব সময় সমানভাবে পাবো, তা নিশ্চিত নয়। আর এ সংকটকে আমরা ভুলে থাকতে পারি না। এ সংকটকে আলোচনায় রাখতে ইতালির জনগণের মহানুভবতা ও সমর্থন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ ডাব্লুএফপির কান্ট্রি ডিরেক্টর ডম স্কালপেল্লি বলেন, এ সমর্থনের জন্য ইতালি ও এর জনগণের প্রতি আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ। সংকট আট বছর পার হলেও কক্সবাজার ও ভাসানচরে প্রায় ১০ লাখ শরণার্থীর মানবিক চাহিদা আগের মতোই জরুরি থেকে গেছে। রোহিঙ্গা সংকট বৈশ্বিক এজেন্ডায় অগ্রাধিকার দেওয়া নিশ্চিত করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় পার্টি ছাড়লেন খুলনার সাবেক এমপিসহ ৩ নেতা
খুলনায় জাতীয় পার্টির তিন নেতা দল থেকে পদত্যাগ করেছেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তারা পদত্যাগের ঘোষণা দেন। এ সময় তারা আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার কারণে জাতির কাছে ক্ষমাও চান।
পদত্যাগকারীরা হলেন- জাতীয় পার্টির খুলনা মহানগরের সাবেক সভাপতি আবদুল গফফার বিশ্বাস, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোল্লা শওকত হোসেন বাবুল ও অ্যাডভোকেট এস এম মাসুদুর রহমান। আবদুর গফফার বিশ্বাস খুলনা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
আ.লীগ নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে পদত্যাগ করা এই তিন নেতা দীর্ঘদিন ধরে দলের মধ্যে কোনঠাসা ছিলেন। বর্তমানে খুলনা জাতীয় পার্টিতে কোনো পদে নেই তারা। গতবছর দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির রওশন এরশাদ অনুসারীরা সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে যে কমিটি করেছিলেন, তাতে এই তিনজনের নাম ছিল।
আরো পড়ুন:
ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগ
‘এই দোসর দলের রাজনীতি আর করব না’
দীর্ঘদিন রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় থাকার পর পদত্যাগের কারণ প্রসঙ্গে এই তিন নেতা জানান, ভুল স্বীকার ও ক্ষমা চাওয়া রাজনৈতিক সংস্কার ও শিষ্টাচার। আমরা রাষ্ট্রের পূর্ণ সংস্কার চাই, যাতে ভবিষ্যতে জনগণের দোহাই দিয়ে আর কোনো স্বৈরশাসক জাতির কাঁধে চেপে বসতে না পারে।
নতুন রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়ার পরিকল্পনার বিষয়ে তারা জানান, আপাতত এ ধরনের আগ্রহ তাদের নেই। ভবিষ্যতে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে বলেও জানান তারা।
আবদুর গফফার বিশ্বাস এর আগেও কয়েকবার বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি থাকা অবস্থায় অপারেশন ক্লিন হার্ট শুরু হয়। অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করি। পরে জাতীয় পার্টি যে কয়বার জনগণের ভাষা বুঝতে পারেনি, ভুল পথে হেঁটেছে আমি সরে দাঁড়িয়েছি।”
বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে লিয়াজো করে খুলনা মোটর বাস মালিক সমিতি, নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন আবদুল গফফার বিশ্বাস। মাসুদুর রহমানও সরকারি আইনজীবী হিসেবে দীর্ঘদিন আদালতে দায়িত্ব পালন করেছেন।
আবদুল গফফার বিশ্বাস বলেন, “ওই সময় আওয়ামী লীগের অপকর্মের বিষয়ে আমি সবচেয়ে বেশি সোচ্চার ছিলাম।”
ঢাকা/নূরুজ্জামান/মাসুদ