স্বৈরাচারবিরোধী জুলাই আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া ও আন্দোলন দমনে সম্পৃক্ত থাকায় শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) আওয়ামীপন্থি ১২ জন শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। 

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাতে আয়োজিত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অনুষ্ঠিত ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়া, নির্যাতন-সহিংসতায় সম্পৃক্ততা এবং দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার অভিযোগ ওঠে। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি অনুসন্ধান শুরু করে। অনুসন্ধনে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া কমিটির পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের বরখাস্তের সুপারিশ করা হয়। এ সুপারিশের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকদের তালিকায় রয়েছেন— অধ্যাপক ড.

মো. হারুন-উর-রশিদ, ড. দেবু কুমার ভট্টাচার্য, অলি আহাদ সেতু, অধ্যাপক ড. শরমিন চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মো. ফরহাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. আয়েশা আক্তার, রুহুল আমিন, চৈতি দে পূজা, ড. ছাবেরা ইয়াছমীন, মো. ওমর আলী মল্লিক, অধ্যাপক ড. শাহ জহির রায়হান এবং মো. জিয়াউর রহমান ভূঁঞা।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. শহীদুর রশিদ ভূঁইয়া, উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. অলোক কুমার পাল এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। তাদের কার্যক্রমের তথ্য যাচাই করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য বিষয়টি তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্তরা প্রশাসনের সহায়তায় আন্দোলন দমন এবং শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। প্রতিবেদনের জন্য ১০০ জন শিক্ষক, ৩০ জন কর্মকর্তা এবং আন্দোলনে সম্পৃক্ত শতাধিক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এছাড়া ২০ জন শিক্ষক, ১৫ জন কর্মকর্তা ও ৩৫ জন শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত তথ্য যাচাই করে অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. বেলাল হোসেন বলেন, “তদন্ত কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে ১২ জন শিক্ষক, সাতজন কর্মকর্তা ও ১১ জন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সিন্ডিকেট কমিটির তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি উপ-কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি চূড়ান্ত তদন্ত শেষে স্থায়ী সিদ্ধান্ত জানাবে।”

ঢাকা/মামুন/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জন শ ক ষ বরখ স ত কম ট র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

বাঘাইছড়িতে অক্সিজেন না পেয়ে শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ পরিবারের

রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেন না পেয়ে সেমলি চাকমা নামে এক মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ করেছে তার পরিবার। শুক্রবার সকালের এ ঘটনায় চিকিৎসকরা বলেছেন, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

শিশুটির বাবা উপজেলার সার্বোয়াতলী ইউনিয়নের রিটন চাকমার দাবি, তাঁর মেয়ে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হলে শুক্রবার সকালে বাঘাইছড়ি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেন। হাসপাতালে অক্সিজেন দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা ছিল না। যথাসময়ে চিকিৎসা না পেয়ে তাঁর মেয়ে মারা গেছে।

সন্ধ্যায় স্থানীয় সাংবাদিকরা সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে অক্সিজেনের সিলিন্ডার দেখতে পান। তবে তাতে কোনো অক্সিজেন ছিল না। হাসপাতালের বিশ্বস্ত সূত্রের দাবি, ঈদুল ফিতরের আগ পর্যন্ত তারা অক্সিজেনের সরবরাহ পেয়েছেন। বর্তমানে সিলিন্ডারে কোনো অক্সিজেন নেই। যদিও রাঙামাটি সিভিল সার্জন ডা. নূয়েন খীসা বলেছেন, যতটুকু জেনেছি, হাসপাতালে আনার আগেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে অক্সিজেনের যথেষ্ট সরবরাহ রয়েছে। তার পরও বিষয়টি তদন্ত করা হবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক দেবাশীষ বণিক বলেন, শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয়। আমরা তার কোনো পালস পাইনি। এখানে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। তার পরও আমরা শিশুটিকে পাঁচ মিনিটের মতো সিপিআর দিয়েছি। অক্সিজেনের অভাবে মারা যাওয়ার তথ্য সঠিক নয়।

বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অক্সিজেনের কোনো সিলিন্ডার ছিল না বলে জেনেছি। জনবল সংকটও রয়েছে। ১৬ চিকিৎসকের জায়গায় মাত্র চারজন দিয়ে কার্যক্রম চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ