প্রেমের ফাঁদে ফেলে দুই বন্ধু মিলে কলেজছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ
Published: 20th, February 2025 GMT
প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন। তার ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করে বন্ধুর সঙ্গেও শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করার অভিযোগ উঠেছে।
বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের মধুপুর পৌর শহরের এ ঘটনায় অভিযুক্ত দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত দুই বন্ধু মধুপুর উপজেলার পঁচিশা গ্রামের সাইদুর রহমান খান রুবেলের ছেলে ফাহাদ খান ফাহিম এবং গোপালপুর উপজেলার চরমোহাইল হেমনগর গ্রামের মনিরুজ্জামানের ছেলে নাঈম মাহাদী সাফি। সাফি মধুপুর উপজেলার মালাউড়ী কাজীপাড়ায় ভাড়া বাসায় বসবাস করে।
ব্ল্যাকমেইল করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ঘটনায় গত বুধবার রাত ১২টার দিকে মধুপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীর মা।
জানা গেছে, ৮ মাস আগে ফেসবুকের মাধ্যমে ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয় ফাহিমের। ক্রমে গড়ে তোলে প্রেমের সম্পর্ক। ঘুরে বেড়ায় বিভিন্ন স্থানে। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আপত্তিকর ছবি তোলে, শারীরিক সম্পর্ক করে। বন্ধু সাফির কাছে ওইসব ছবি শেয়ার করে ফাহিম। এসব ছবি নিয়ে ফাহিমের বন্ধু সাফি ওই তরুণীকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে। ছবি ডিলিট করার কথা বলে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ফাহিম বন্ধু সাফির পরিবারের ভাড়া বাসায় নিয়ে তরুণীর সঙ্গে জোর করে শারীরিক সম্পর্ক করে। এর পর গত বুধবার দুপুরে বিয়ের কথা আলাপ করতে ওই তরুণীকে সাফির বাসায় আমন্ত্রণ জানায় ফাহিম। আলাপের এক পর্যায়ে ফাহিম আবারও শারীরিক সম্পর্ক করে। গোপনে আপত্তিকর ছবি তোলে সাফি। পরে সেই ছবি দেখিয়ে সাফি সুযোগ নিতে চাইলে ফাহিম বাধা না দিয়ে সম্মতি জানায় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
মামলার বাদীর দাবি, সেখান থেকে বের হয়ে তাঁর মেয়ে বাসায় ফিরে সব জানিয়েছে। বিশেষ একটি সূত্র জানিয়েছে, ভুক্তভোগী তরুণী নিজে থানায় গিয়ে পুলিশকে মৌখিক অভিযোগ করে। পরে মধুপুর থানার পুলিশ তার সহযোগিতায় কৌশলে অভিযুক্ত ফাহিম ও সাফিকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন মধুপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমরানুল কবির। তিনি জানান, মামলা হয়েছে। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভুক্তভোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে।
মধুপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফুল ইসলাম বলেন, ঘটনা জানার পরই অল্প সময়ের মধ্যে পুলিশ কৌশলে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে। তারা ব্ল্যাকমেইল করে ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে টাকাও দাবি করত।
এদিকে গ্রেপ্তার দু’জনকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মধুপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাসেল আহমেদ। জ্যেষ্ঠ বিচারক রোমেলা সিরাজাম অভিযুক্ত ফাহাদ খান ফাহিমের দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে নাঈম মাহাদী সাফির বয়স কম থাকায় রিমান্ড না দিয়ে শিশু আদালতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ র কর
এছাড়াও পড়ুন:
তিন দিনেও উদ্ধার হয়নি পাহাড়ি পাঁচ শিক্ষার্থী
খাগড়াছড়িতে অপহরণের শিকার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী তিন দিনেও উদ্ধার হয়নি। শুক্রবারও তাদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনী খাগড়াছড়ি সদরের পানখাইয়া পাড়া, মধুপুরসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান চালায়। এমনকি অপহরণে জড়িত সন্দেহভাজন কাউকে আটক পর্যন্ত করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিজু উৎসব শেষে চবিতে ফেরার পথে গত বুধবার ভোরে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে রিশন চাকমা, অলড্রিন ত্রিপুরা, মৈত্রীময় চাকমা, দিব্যি চাকমা ও লংঙি ম্রোকে অপহরণ করে দুর্বৃত্তরা।
এ ঘটনায় জেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা ইউপিডিএফকে দায়ী করলেও, অস্বীকার করেছেন সংগঠনের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা।
অপহৃত দিব্যি চাকমার মা ভারতী দেওয়ান শুক্রবার সমকালকে বলেন, ‘সন্তানকে ফেরত না পেয়ে আমরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি। তাদের ভালোভাবে ফিরে আসার জন্য প্রার্থনা করছি।’
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির তথ্য, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অন্বেষ চাকমা জানান, অপহৃতদের পারিবারিক সূত্রে জানতে পেরেছি– অপহরণকারীরা অভিভাবকদের গোপন স্থানে ডেকে বৈঠক করলেও, প্রত্যেককে খালি হাতে বাড়ি পাঠিয়েছেন। অভিভাবকরা সন্তানদের সঙ্গে দেখা পর্যন্ত করতে পারেননি। তবে অপহরণকারীরা সময়মতো তাদের ছেড়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানিয়েছেন, পাঁচ শিক্ষার্থী উদ্ধারে বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য স্থানে অভিযান অব্যাহত রেখেছেন তারা। খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি-ঢাকা ও খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি সড়কে তল্লাশি জোরদার হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হলেও সুখবর দেওয়ার মতো তথ্য হাতে আসেনি।