৪৫ বছরের সংসারে ফিরলেন জেবুন্নেছা, ছেলে কারাগারে
Published: 20th, February 2025 GMT
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বাসিন্দা জেবুন্নেছা বেগম (৬৬)। তার অভিযোগ, দুই বছর আগে স্বামী মারা গেলে একমাত্র ছেলে ফিরোজ কবির জুয়েল ও তার স্ত্রী তাকে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। এক পর্যায়ে তার স্বামীর বাড়ি দখল করে তাকে বের করে দেয়। স্বামীর সংসার ও জমিজমা হারিয়ে পুলিশের কাছে সহায়তা চান তিনি।
পুলিশ সুপার মো.
পুলিশ ও ভুক্তভোগী বৃদ্ধা জানান, আজিজার রহমান মারা গেলে ছেলে ও তার স্ত্রী জেবুন্নেছা তার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছিল। তারা ভোটার আইডি কার্ড, পেনশনের ব্যাংকের চেক বই এবং জমির দলিল নিজেদের কাছে রেখে দেন। তার বাইরে স্বাভাবিক চলাফেরায় বাধা দিয়ে তালাবদ্ধ করে রেখেছিল।
গত ডিসেম্বর মাসে জেবুন্নেছা ওমরাহ হজ করতে সৌদি আরবে গেলে জুয়েল ও তার স্ত্রী ঘর দখল করে নেয়। এ অবস্থায় তিনি মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেন। গত সোমবার পুলিশ সুপারের কাছে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। তিনি তদন্তের জন্য লোক পাঠিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের কাছে শোনেন এবং ছেলেকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। ছেলে মাকে জায়গা দেবে না বলে জানায়।
এ ঘটনায় সোমবার বিকেলে উলিপুর থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী জেবুন্নেছা বেগম। এতে অনধিকার প্রবেশ, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করে জখম, ক্ষতি সাধন, ভয়ভীতি দেওয়াসহ হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনেন। এ মামলায় ভুক্তভোগীর ছেলে জুয়েলকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান। মামলার আরেক আসামি তার স্ত্রী পলাতক রয়েছেন।
জেবুন্নেছা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলে ও তার স্ত্রী আমাকে নির্যাতন করছিল। তারা আমার স্বামীর ৪৫ বছরের স্মৃতি তছনছ করে দিয়ে আমাকে ঘরহারা করেছিল। পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে আমার ৪৫ বছরের সংসারে ফিরে আসতে পেরেছি। স্বামীর জমিতে আমার ও মেয়েদের অংশ রয়েছে। আমি আদালতের কাছে আমাদের অধিকার ফিরে চাই।’
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, পুলিশ সুপার শুরু থেকে মামলাটির বিষয়ে খোঁজখবর রাখছিলেন। তিনি নিজে আন্তরিকতার সঙ্গে ভুক্তভোগী জেবুন্নেছাকে আশ্বস্ত করেন, তার সংসার ফিরিয়ে দেবেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ৪৫ বছর র স
এছাড়াও পড়ুন:
নিজ দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা চায় না প্রধান দলগুলো
সংসদ সদস্যদের নিজ দলের বিরুদ্ধে গিয়ে অনাস্থা প্রস্তাবে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা দিতে চায় না প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। অর্থবিল ছাড়া অন্য যেকোনো বিষয়ে সংসদের নিম্নকক্ষের সদস্যদের নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে—সংবিধান সংস্কার কমিশনের এই সুপারিশের সঙ্গে পুরোপুরি একমত নয় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি। এ তিনটি দলই চায় অর্থবিলের মতো আস্থা ভোটের ক্ষেত্রেও সংসদ সদস্যরা (এমপি) স্বাধীন থাকবেন না। এ ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের নিজ দলের অবস্থানের পক্ষেই থাকতে হবে।
বিদ্যমান সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদ সদস্যরা নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারেন না। তাতে বলা আছে, কোনো নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী হিসেবে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি যদি ওই দল থেকে পদত্যাগ করেন বা সংসদে ওই দলের বিপক্ষে ভোট দেন, তাহলে সংসদে তাঁর আসন শূন্য হবে।
আরও পড়ুনমুক্ত পরিবেশ, রাজনীতির মাঠে নতুন প্রতিদ্বন্দ্বী৩০ মার্চ ২০২৫এই বিধানের ফলে সরকারের চাওয়ার বাইরে কোনো আইন বা প্রস্তাব সংসদে পাস হওয়ার সুযোগ নেই। প্রধানমন্ত্রী বা অন্য কারও বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাস হওয়ারও সুযোগ নেই।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৭২ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় থেকেই অনুচ্ছেদটি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। যাঁরা এর বিপক্ষে তাঁরা বলছেন, এই অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের স্বাধীনতা খর্ব করে এবং প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্রভাবে ক্ষমতা দেয়। অন্যদিকে এটা রাখার পক্ষে যাঁরা, তাঁদের যুক্তি—এই বিধান বাদ দিলে সরকারের স্থিতিশীলতা থাকবে না। কিছুদিন পরপর সরকার ও সংসদ ভেঙে যেতে পারে। সরকারকে অস্থিতিশীল করতে বড় ধরনের অর্থের অবৈধ লেনদেনও হতে পারে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশন সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আনার প্রস্তাব করেছে। তাতে বলা হয়েছে, আইনসভা হবে দুই কক্ষবিশিষ্ট। দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার বিষয়ে তাদের সুপারিশ হলো অর্থবিল ছাড়া নিম্নকক্ষের সদস্যদের তাঁদের মনোনয়নকারী দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা থাকবে।
এই সুপারিশসহ পাঁচটি সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ ১৬৬টি সুপারিশ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ইতিমধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) অনেকগুলো দল তাদের মতামত জানিয়েছে। শিগগিরই এই তিন দলের সঙ্গে আলাদাভাবে আলোচনা করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
আরও পড়ুনঈদের পর সংস্কার নিয়ে আলোচনার চিন্তা এনসিপির৩১ মার্চ ২০২৫কমিশনের সুপারিশের যৌক্তিকতা
সংসদ সদস্যদের দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ানোর সুপারিশ করার পেছনে যৌক্তিকতা নিজেদের প্রতিবেদনে তুলে ধরেছিল সংবিধান সংস্কার কমিশন। সেখানে বলা হয়েছে, সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংসদ সদস্যদের নিজ দলের প্রস্তাবিত যেকোনো নীতি বা সিদ্ধান্ত অকপটে মেনে নিতে বাধ্য করে। যদিও তাঁদের মতামত দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু দলের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়নি। সংবিধান দলের প্রতি নিঃশর্ত আনুগত্যের নামে সংসদ সদস্যদের নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার প্রতিনিধিত্ব করতে বাধা দেয়।
কমিশন বলেছে, যদিও দলত্যাগ (ফ্লোর ক্রসিং) আটকানো ছিল এই অনুচ্ছেদের প্রাথমিক উদ্দেশ্য, কার্যত এর প্রভাব এই উদ্দেশ্য ছাপিয়ে গেছে। ৭০ অনুচ্ছেদে ফ্লোর ক্রসিংয়ের বিরুদ্ধে যে বিধান, তা গণতান্ত্রিক চেতনার পরিপন্থী। স্থিতিশীলতার উদ্দেশ্যে এ বিধান রাখা হলেও এটি রাজনৈতিক আলোচনা এবং দলীয় জবাবদিহিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এটি সংসদ সদস্যদের তাঁদের নির্বাচনী এলাকার স্বার্থ প্রতিনিধিত্ব করা ও স্বাধীন ইচ্ছা প্রয়োগের ক্ষমতাকে সীমিত করে ফেলে।
আরও পড়ুননির্বাচনের পরের সরকার সংস্কারপ্রক্রিয়া চলমান রাখবে, সে নিশ্চয়তা নেই: নাহিদ ইসলাম২৮ মার্চ ২০২৫ভিন্ন অবস্থান দলগুলোর
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা প্রশ্নে ঐকমত্য কমিশনে দেওয়া লিখিত মতামতে বিএনপি বলেছে, সংসদে আস্থা ভোট, অর্থবিল, সংবিধান সংশোধনী বিল এবং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত, এমন সব বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে না। এসবের বাইরে অন্যান্য বিষয়ে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে মতামত দিতে পারবেন।
আস্থা ভোটে স্বাধীনতা দেওয়ার বিপক্ষে যুক্তি কী—তার ব্যাখ্যায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে ১৯৫৪ সালের পর প্রায় প্রতিদিন সরকার পরিবর্তন হতো। উপমহাদেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও ইতিহাস পর্যালোচনা এবং অনেক বিচার–বিশ্লেষণ করে বিএনপি এই প্রস্তাব বা মতামত দিয়েছে। যাতে সরকারের একটি স্থিতিশীলতা থাকে। তাঁরা মনে করেন, দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি এখনো আস্থা ভোটের স্বাধীনতা দেওয়ার মতো উচ্চতায় পৌঁছাতে পারেনি, আস্থা ভোটে স্বাধীনতা দেওয়া হলে কোনো সরকার এক থেকে দুই মাসের বেশি টিকবে না। সরকারে স্থিতিশীলতা থাকবে না।
আরও পড়ুনরাষ্ট্রের নাম বদলে আপত্তি এনসিপির, মূলনীতি পরিবর্তনে একমত ২৮ মার্চ ২০২৫সংবিধান সংস্কার কমিশন যখন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে মতামত চেয়েছিল, তখন জামায়াতে ইসলামী কমিশনকে দেওয়া প্রস্তাবে বলেছিল, ফ্লোর ক্রসিং এখন বন্ধ করা উচিত নয়। এটি সংসদীয় সরকারব্যবস্থা স্থিতিশীল করতে যুক্ত করা হয়েছিল। তারা এটি আরও দুই মেয়াদ পর্যন্ত রাখার পক্ষে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাছে দেওয়া মতামতেও অনেকটা একই বক্তব্য তুলে ধরেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা ঐকমত্য কমিশনে যে মতামত দিয়েছেন, সেখানে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। অর্থবিল, আস্থাভোটসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে শর্ত দেওয়ার কথা তাঁরা বলেছেন। তিনি বলেন, আস্থা ভোট দলের পলিসির (নীতি) বিষয়। একজন সংসদ সদস্য দলকে প্রতিনিধিত্ব করেন। দলের পলিসির সঙ্গে সংসদ সদস্যদের একই অবস্থান থাকতে হবে। সংসদ সদস্যরা যদি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির প্রতি অনাস্থা প্রস্তাবে দলীয় পলিসির অনুসরণ না করেন, তাহলে শৃঙ্খলা থাকবে না।
জুলাই অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারীদের দল এনসিপিও অর্থবিলের পাশাপাশি দলের বিরুদ্ধে অনাস্থা ভোটের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ থাকা প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে। এ বিষয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সংস্কার সমন্বয় কমিটির কো-অর্ডিনেটর সারোয়ার তুষার প্রথম আলোকে বলেন, এ ধরনের বিধান না থাকলে সংসদ সদস্যদের কেনাবেচা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। সংসদ ও সরকারের স্থিতিশীলতার জন্য তাঁরা অর্থবিল ও আস্থা ভোট ছাড়া অন্য যেকোনো ক্ষেত্রে সংসদ সদস্যদের স্বাধীনভাবে মত দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়ার কথা বলেছেন।
আরও পড়ুনসংসদের মেয়াদ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণার সুপারিশ বিষয়ে দ্বিমত বিএনপির২৫ মার্চ ২০২৫যেভাবে যুক্ত হয় ৭০ অনুচ্ছেদ
১৯৭২ সালে সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ কীভাবে যুক্ত হয়েছিল, তার বর্ণনা পাওয়া যায় প্রয়াত অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের বিপুলা পৃথিবী বইয়ে। ১৯৭২ সালের সংবিধানের বাংলা অনুবাদ করার দায়িত্ব ছিল অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের। তিনি লিখেছেন, ‘সংবিধানের বিষয়ে পরামর্শ দিতে বঙ্গবন্ধু দুই বার ডেকে পাঠিয়েছিলেন কামালকে—সঙ্গে আমিও ছিলাম। ...তিনি বলেছিলেন, পাকিস্তান আমলে সরকার অস্থিতিশীল হয়েছিল মূলত পরিষদ-সদস্যদের দল বদলের ফলে কিংবা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে দলের বিপক্ষে ভোটদানের ফলে। এটা বন্ধ করা দরকার। নির্বাচিত সদস্য যদি দলের কোনো সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত না হন কিংবা কোনো ক্ষেত্রে দলের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তাহলে তাঁর পদত্যাগ করা উচিত হবে কিংবা তাঁর সদস্যপদ চলে যাবে—এমন একটা নিয়ম করা দরকার। তবে এমন ক্ষেত্রে তিনি উপনির্বাচন বা পরবর্তী কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অযোগ্য হবেন না, সে ব্যবস্থাও থাকতে হবে। এই অভিপ্রায়ই সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদে প্রকাশ পেয়েছিল।’
তবে গণপরিষদেই ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। আনিসুজ্জামান তাঁর বইয়ে এ বিষয়ে উল্লেখ করেছেন, (গণপরিষদ সদস্য) আ ক ম মোশাররফ হোসেন আকন্দ, আছাদুজ্জামান খান, আবদুল মুন্তাকীম চৌধুরী, হাফেজ হাবিবুর রহমান এই অনুচ্ছেদের বিরোধিতা করেছিলেন। আনিসুজ্জামান লিখেছেন, ‘৭০ অনুচ্ছেদ সম্পর্কে সবচেয়ে কড়া ভাষায় আপত্তি জানান হাফেজ হাবিবুর রহমান—তাঁর মতে, এতে দলীয় একনায়কত্বের ও দলীয় নেতার একনায়কত্বের সৃষ্টি হবে।’
আরও পড়ুনকমিশনের প্রস্তাব গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে শক্তিশালী করবে২৪ মার্চ ২০২৫