তিন সচিবসহ যেসব কর্মকর্তাকে পাঠানো হলো বাধ্যতামূলক অবসরে
Published: 20th, February 2025 GMT
২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের সময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা প্রশাসনের ২১ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাঁদের মধ্যে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান রয়েছেন। এ ছাড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানা এবং কিছুদিন আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা স্থানীয় সরকার বিভাগের সাবেক সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। আর যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
জ্যেষ্ঠ সচিব জাকিয়া সুলতানাকে অবসরে পাঠানোর বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগ সাংবাদিকদের জানিয়েছে, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে তাঁকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। আর যুগ্ম সচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসের বিষয়ে মন্ত্রণালয় বলেছে, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ায় এবং বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণার অভিযোগে তাঁকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর বিষয়ে কোনো কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
আজ বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পৃথক প্রজ্ঞাপনে এসব কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়। এর আগে সচিবালয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো.
বাধ্যতামূলক অবসরে যাঁরা
বিকেলে কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর বিষয়ে পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এসব কর্মকর্তাদের অধিকাংশই অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের। তাঁরা হলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ শফিউল আরিফ, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এনামুল হাবীব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সায়লা ফারজানা, রাব্বী মিয়া, এস এম আলম ও তন্ময় দাস, বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস ও কপিরাইট নিবন্ধনের মো. তোফায়েল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় বিজ্ঞান ও কারিগরি তথ্য সংগ্রহ ও বিতরণকেন্দ্রের মহাপরিচালক মো. শওকত আলী, বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সুভাষ চন্দ্র বিশ্বাস, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব কামরুন নাহার সিদ্দীকা, ইউএই আবুধাবি বাংলাদেশ দূতাবাসের মিনিস্টার (লেবার) মো. আবদুল আওয়াল, পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মো. হামিদুল হক, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ফয়েজ আহাম্মদ, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মাসুদ করিম, ভূমি সংস্কার বোর্ডের সদস্য উম্মে সালমা তানজিয়া, পরিকল্পনা বিভাগের আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস। এ ছাড়া জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের পরিচালক মো. ওয়াহিদুল ইসলাম এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আহমেদ কবিরকেও বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল বুধবার বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও দপ্তরে কর্মরত যুগ্ম সচিব ও সমপর্যায়ের পদে থাকা প্রশাসনের ৩৩ কর্মকর্তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করে সরকার। তাঁরা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিতর্কিত নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসকের দায়িত্বপালন করেছিলেন। একই কারণে আরও ১২ কর্মকর্তাকে ওএসডি করেছে বর্তমান সরকার।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৩৬ বছর পরিচ্ছন্নের কাজ করে অবসরে যাওয়া ডলির হাতে উঠল ফুলের তোড়া
ডলি জমাদারের পৈতৃক বাড়ি মাগুরায়। বিয়ের পর চলে আসেন ফরিদপুরে। স্বামীর সঙ্গে থাকতে শুরু করেন ‘বান্ধবপল্লি’ নামে পরিচিত হরিজনপল্লিতে।
ডলির ডান হাতের কবজির ওপরের দিকে ট্যাটু করে লেখা ‘গণেশ’। এটা তাঁর স্বামীর নাম। ৪৫ বছর আগে বিয়ের পরপর স্বামীর সঙ্গে ভারতে বেড়াতে গিয়েছিলেন ডলি। তখন ডলি ছিলেন ছিপছিপে এক তরুণী। সে সময় তিনি শখ করে ট্যাটুটি করিয়েছিলেন।
গণেশ ও ডলির সেই বয়সকালের একটা বাঁধানো ছবি রাখা আছে বান্ধবপল্লির বাড়ির বসার ঘরে। যদিও এই ছবির একজন এখন কেবলই স্মৃতি, তিনি গণেশ।
গণেশ জমাদার ছিলেন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। চাকরি করতেন ফরিদপুর সদর হাসপাতালে। চাকরিতে থাকা অবস্থায় গণেশ অন্ধ হয়ে যান। তখন স্বামীর চাকরিটি পান ডলি। সেটা গত শতকের আশির দশকের শেষের দিকের কথা।
এরপর অন্ধ স্বামী আর এক ছেলে ও দুই মেয়ের ভরণপোষণ ছাড়াও আত্মীয়স্বজনদের নানা অভাব-অভিযোগ মেটানোর দায়িত্ব এসে পড়ে ডলির কাঁধে। তাঁদের দুই কামড়ার ঘরে ঠাঁই পেয়েছেন বিপদগ্রস্ত অনেক মানুষ।
২ এপ্রিল দুপুরে ফরিদপুরের বান্ধবপল্লিতে গিয়ে দেখা হয় ডলির সঙ্গে। তাঁর এক আত্মীয়ের মেয়ে ১১ দিন আগে সন্তান প্রসব করেছেন। সেই নবজাতককে নিজের নাতির মতো করে যত্ন করছিলেন ডলি।
স্বজনের শিশুসন্তান কোলে বান্ধবপল্লির বাড়িতে ডলি জমাদার