পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পড়তে আসবেন সিভাসুতে
Published: 20th, February 2025 GMT
শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে পারস্পরিক সহযোগিতার উদ্দেশ্যে পাকিস্তানের ইউনিভার্সিটি অব ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেসের (ইউভিএএস) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তিন বছরের জন্য চুক্তি সই হয়। এরফলে পাকিস্তানের ইউভিএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রামের সিভাসুতে পড়তে আসতে পারবেন। দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এক মাসের জন্য ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবেন।
সিভাসু কর্তৃপক্ষ আজ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিভাসুর ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদ ও ইউবিএএসের ভেটেরিনারি সায়েন্স অনুষদের ডিন চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন। ফলে সিভাসুর শিক্ষার্থীরা পাকিস্তানে এক মাসের ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবেন। আবার পাকিস্তানের ইউভিএএস বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সিভাসুতে এক মাসের ইন্টার্নশিপ করার সুযোগ পাবেন।
ইন্টার্নশিপ চলাকালে সিভাসুর শিক্ষার্থীরা পাকিস্তানের ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা, সার্জারিসহ নানা বিষয়ে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন। পাশাপাশি তাঁরা ইউভিএএসের বিভিন্ন ডেইরি ও পোলট্রি ফার্ম, হ্যাচারি এবং গবেষণা ল্যাবের কার্যক্রম পরিদর্শন করতে পারবেন। সিভাসুতে একই ধরনের সুবিধা পাবেন পাকিস্তানের শিক্ষার্থীরাও। এ ছাড়া চুক্তির আওতায় দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণা উপকরণ, প্রকাশনা ও একাডেমিক তথ্য বিনিময়, যৌথ গবেষণা প্রোগ্রাম, একাডেমিক কনফারেন্স আয়োজন, শিক্ষা, গবেষণা ও পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মী বিনিময়, পাঠ্যক্রম উন্নয়ন ও একাডেমিক কার্যক্রম সম্প্রসারণে পারস্পরিক সহযোগিতাসহ নানা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে।
এই চুক্তির আওতায় সিভাসুর ‘ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম)’–এর পঞ্চম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ৯১ শিক্ষার্থী দুই ভাগে আগামী জুলাই ও আগস্টে পাকিস্তানে যাবেন। লাহোরে অবস্থিত সে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টার্নশিপ করবেন।
উল্লেখ্য, সিভাসুর সঙ্গে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি রয়েছে। এসব দেশের শিক্ষার্থীরা সিভাসুতে প্রশিক্ষণ ও পড়াশোনার জন্য আসেন, সিভাসুর শিক্ষার্থীরাও যান।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইমোতে প্রেম: চট্টগ্রামে তরুণী খুন, প্রেমিক গ্রেপ্তার
ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক সন্তানের জননী টুম্পা আক্তারের সাথে ইমো অ্যাপে প্রেম গড়ে ওঠে চট্টগ্রামে বসবাসকারী বেকার ইব্রাহিম হাওলাদারের। এই প্রেমের সূত্র ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে চট্টগ্রামে চলে যান টুম্পা। বিয়ে না করে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন নগরীর বন্দর থানার কলসিদীঘি এলাকায়।
তবে সুখের হয়নি সে জীবন। অন্য পুরুষের সাথে টুম্পার সম্পর্ক থাকতে পারে। সবসময় এমন সন্দেহ করতেন ইব্রাহিম। সেই সন্দেহ থেকেই একদিন টুম্পার গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে ইব্রাহিম।
সম্পুর্ণ ক্লু লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে ঘাতক ইব্রাহীমকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে নগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত তুলে ধরেন উপ-কমিশনার (ডিবি-পশ্চিম) মোহাম্মদ মাহবুব আলম খান।
মাহবুব আলম খান জানান, গত ২৬ মার্চ সন্ধ্যায় বন্দর থানার ওয়াসিম চৌধুরী পাড়া পেলাগাজীর বাড়ি আলী সওদাগরের বিল্ডিংয়ের নিচ তলার একটি বাসা থেকে এক অজ্ঞাত নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বাড়ির মালিকের কাছে ভাড়াটিয়ার তথ্য না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে একই এলাকার একটি দোকানের ক্যাশমেমো থেকে পাওয়া নম্বর ধরেই এগোয় তদন্ত। এরপরই শনাক্ত হয় ইব্রাহিম; যিনি চট্টগ্রাম থেকে বাগেরহাট যাচ্ছিলেন।
পুলিশ জানায়, ইব্রাহিমকে রাজধানীর পোস্তগোলা ব্রিজ এলাকায় বাসের ভেতর থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তারপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে উদঘাটিত হয় খুনের রহস্য।
পুলিশ জানায়, ইমোতে প্রেমে সম্পর্কের সূত্র ধরে টুম্পা ও ইব্রাহীম বিয়ে ছাড়াই স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে সংসার করছিলেন। ভিকটিম টুম্পা আক্তার একজন গার্মেন্টসকর্মী। তার পরিচয় মূলত ইব্রাহিমকে গ্রেপ্তারের পরই জানতে পারি। তারা বন্দর এলাকার ওই বাসায় লিভ টুগেদার করত। কাগজে-কলমে তাদের বিয়ে হয়নি। দুজন ব্যক্তিকে স্বাক্ষী রেখে তাদের মুখে মুখে বিয়ে হয়।
টুম্পা আক্তার যখন কর্মস্থলে যেতেন ইব্রাহিম মোবাইল নিয়ে যেতে দিতেন না। মোবাইল বাসায় রেখে যেতেন। বাসায় রাখার পর অনেকসময় তার ফোনে পুরুষ কণ্ঠে কল আসত। ইব্রাহিমের সন্দেহ হয় তার কথিত স্ত্রীর আরও কয়েকজনের সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। এই সন্দেহের জেরে তাদের মধ্যে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়।
ঘটনার দিন এই বিষয় নিয়েই তাদের মধ্যে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে ইব্রাহিমের মাথার কাছে একটি শেলফে থাকা রশি দিয়ে টুম্পার গলা পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। ওই সময় টুম্পার বাচ্চাটি পাশের রুমে ঘুমাচ্ছিল। কিছুক্ষণ পর বাচ্চাটি ঘুম থেকে উঠলে তাকে একজন মহিলার কাছে দিয়ে ইব্রাহিম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
এ হতাকাণ্ডের ঘটনায় বন্দর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
ঢাকা/রেজাউল/এস