এমন একটি মুহূর্তের জন্য নিশ্চয়ই অনেক বছর ধরে অপেক্ষায় ছিলেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। শৈশবে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পোস্টারে ঠাসা ঘরটায় বসেও হয়তো অসংখ্যবার দেখেছেন এই স্বপ্ন—মাঠ ছেড়ে যাওয়ার সময় উঠে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাচ্ছেন সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে উপস্থিত দর্শক। এমবাপ্পে এমন স্বপ্ন দেখুন বা না দেখুন সত্যি কথা হচ্ছে গতকাল রাতে এমন এক স্বপ্নময় মুহূর্তে ভ্রমণ করেছেন এমবাপ্পে।

ম্যানচেস্টার সিটির বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ প্লে–অফের দ্বিতীয় লেগে হ্যাটট্রিক করে মাঠ ছাড়ার সময় এমবাপ্পেকে দাঁড়িয়ে সম্মান জানিয়েছেন রিয়াল সমর্থকেরা। সম্মাননা পাওয়ার ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে কয়েক মাস ধরে তাঁকে ঘিরে তৈরি হওয়া সব সংশয় ও অনিশ্চয়তাকেও তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন এমবাপ্পে। এমনকি ম্যাচ শেষে এই ফরাসি তারকার ‘রোনালদোর পর্যায়ে পৌঁছানোর সামর্থ্য আছে’ বক্তব্যে উচ্ছ্বসিত প্রশংসাও করেছেন রিয়াল কোচ কার্লো আনচেলত্তি।

নানা নাটকীয়তার পর চলতি মৌসুমে পিএসজি থেকে রিয়ালে যোগ দিয়েছেন এমবাপ্পে। শুরুতে থিতু হতে একটু সময় নিলেও এখন রীতিমতো উড়ছেন এই ফরোয়ার্ড। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত রিয়ালের হয়ে ২৮ গোল করেছেন এমবাপ্পে। যেখানে সর্বশেষ সংযোজন গতকাল রাতের হ্যাটট্রিক।

আরও পড়ুনএমবাপ্পে‍+ম্যানচেস্টার সিটি‍=ভালোবাসার গল্প৪ ঘণ্টা আগে

ম্যাচ শেষে এমবাপ্পের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা দেখার কথা বলেছেন আনচেলত্তি, ‘তার রোনালদোর পর্যায়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য রয়েছে। এ জন্য তাকে পরিশ্রম করতে হবে। কারণ, রোনালদো মানদণ্ডটা অনেক ওপরে রেখেছে। আর এমবাপ্পে এই ক্লাবের হয়ে মাত্রই শুরু করেছে।’

গোল করছেন এমবাপ্পে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ন এমব প প

এছাড়াও পড়ুন:

মানিকগঞ্জে একদল লোকের বাধায় সাধুর মেলা হলো না

মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে স্থানীয় একদল লোকের বাধায় ফকির মওলা দরবার শরিফের বাউলশিল্পী রশিদ সরকারের সাধুর মেলা পণ্ড হয়ে গেছে। শুক্রবার জুমার নামাজের আগে উপজেলার আজিমপুরে অনুষ্ঠিত এ মেলায় স্থানীয়সহ আশপাশের এলাকার একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে বাধা দিলে মেলা বন্ধ হয়ে যায়।

এ ঘটনায় ১২ জনকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সিঙ্গাইর থানার পুলিশ।

সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মেলায় সমস্যাটি ব্যক্তিকেন্দ্রিক। রশিদ সরকারের বড় ছেলে সিঙ্গাইর পৌরসভার সাবেক মেয়র আবু নাঈম মো. বাশার। পরিবারের সদস্যরা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত ১৫ বছর তাঁদের বিতর্কিত কার্যক্রমে স্থানীয় বাসিন্দারা পরিবারটির ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় লোকজনকে বুঝিয়ে ক্ষোভ থেকে যেন কোনো ধরনের সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে পরিবেশ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু মেলা করতে গেলে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে আয়োজকদের উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নিরাপত্তার স্বার্থে রশিদ সরকারের পরিবারের সদস্যসহ ১২ জনকে হেফাজতে আনা হয়েছে। তাঁদের সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দরবারের একাধিক ভক্ত জানান, বাউলসম্রাট রশিদ সরকার জীবিত থাকা অবস্থায় সিঙ্গাইর উপজেলার আজিমপুরে প্রতিবছর সাধুর মেলার আয়োজন করা হতো। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও মেলার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিনব্যাপী এ মেলা হওয়ার কথা ছিল। তবে কয়েক দিন ধরে মেলা করতে দেবে না বলে জানাচ্ছিলেন মিঠু (উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মিঠু)। এরপরও আজ শত শত ভক্ত ফকির মওলা দরবার শরিফে আসেন। ভক্তরা আসায় দুপুরের দিকে বাধাদানকারীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে উপস্থিত হয়ে কয়েকজনকে মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশ রশিদ সরকারের স্ত্রী শিরিন রশিদ (৬০), তাঁর বড় ছেলে আবু নাঈম মো. বাশারের স্ত্রী শাহানারা আক্তারসহ (৩৭) কয়েকজনকে থানায় নিয়ে যায়।

মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেলার নামে মূলত সেখানে গাঁজা সেবন করা হয়। এটা গাঁজার মেলা। এই মেলা উপলক্ষে সেখানে অন্তত ১০ টন গাঁজা সেবন হয়। পুরো এলাকার লোকজন ভীষণ বিরক্ত। এ ছাড়া ধর্মীয় রীতিনীতিবহির্ভূত কাজও হয় সেখানে। স্থানীয়সহ পুরো সিঙ্গাইরের লোকজন এটি বন্ধের জন্য সেখানে গেলে উত্তেজনা তৈরি হয়। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আমরাও সেখানে গিয়েছিলাম।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ