বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা
Published: 20th, February 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে মোহাম্মদ হাসান (৪০) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে বেদম মারধর করে পলোয়ানপাড়া গ্রামে ফেলে যায়। পরে স্থানীয়রা গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত যুবলীগ কর্মী উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকার আহম্মদ হোসেন মেম্বার বাড়ির বজল আহম্মদের ছেলে। এক ছেলে ও এক মেয়ের বাবা হাসান ছোট থেকে মামার বাড়ি নোয়াপাড়ায় বেড়ে ওঠেন। সেখানে বসতি স্থাপন করে বসবাস করে আসছিলেন পরিবার নিয়ে। স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসার পাশাপাশি নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া ও ইউপি সদস্য সেকান্দরের সহযোগী ছিলেন। তাদের সঙ্গে সম্পর্কের সূত্র ধরে যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন তিনি। পান উপজেলা যুবলীগের সদস্য পদ। তবে তাঁর বিরুদ্ধে থানায় বা এলাকায় অপকর্মের কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।
নিহতের স্ত্রী ঝিনু আক্তার বলেন, ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে এলাকা ছাড়েন হাসান। দীর্ঘ ছয় মাস পর গত সোমবার রাতে বাড়িতে আসেন। সন্ত্রাসীরা খবর পেয়ে খাটের নিচে থেকে আমার স্বামীকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে পার্শ্ববর্তী পলোয়ানপাড়া গ্রামে ফেলে যায়। সেখান থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাউজান থানার ওসি মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, মোহাম্মদ হাসান নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যার মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়েছি। নিহতের পরিবার এখনও থানায় মামলা করেনি। জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ২৪ জানুয়ারি দুপুরে নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিষপাড়ায় জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এর পর ১৫ ফেব্রুয়ারি পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের উত্তর গুজরাস্থ আদ্যাপীঠ মন্দিরের সামনে এলোপাতাড়ি গুলি করে রাউজান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পেয়ার মোহাম্মদ চৌধুরী বাবুকে। বর্তমানে তিনি নগরীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বল গ
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে নদনদীর সংখ্যা ১৪১৫
দেশে নদনদীর নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। সরকারের দুটি মন্ত্রণালয় ও তিনটি সংস্থা এবং নদীকর্মীদের সমন্বয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়েছে। বাপাউবোর ওয়েবসাইটে গতকাল প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, দেশে নদনদীর সংখ্যা ১ হাজার ৪১৫।
সরকারি উদ্যোগে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নদনদীর সংখ্যা নির্ণয় হয়েছে। তবে এবারের কাজ ব্যতিক্রম বলছেন নদীকর্মীরা। কারণ এবার স্থানীয়দের মতামতকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনেক নদী তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। খুলনা বিভাগের নদনদীর তালিকা তৈরিতে জড়িত ছিলেন নদীকর্মী মাহবুব সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের সব নদনদী সরকারের তালিকায় আসেনি। বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেক নদী বাদ পড়েছে। তালিকা যদি চলমান প্রক্রিয়া হয়, তাহলে সাধুবাদ দেব। তা না হলে আগের পরিসংখ্যানের মতো এটাও বিতর্কমুক্ত হবে না।’
দেশে নদনদীর সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক চলছে বছরের পর বছর। নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের গণনার সঙ্গে মেলে না নদী কমিশনের হিসাব, আবার এ দুই সংস্থার সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংখ্যার ছিল গরমিল। অবশেষে নদনদীর তালিকা তৈরিতে সব সংস্থা একজোট হয়। সবার সমন্বয়ে তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নদনদীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণের উদ্যোগ নেন।
সার্বিক বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকারের নথিপত্রে আছে এমন নদীগুলোই আমরা তালিকাভুক্ত করেছি। তবে এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়, কাজটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে আরও নদনদীর সন্ধান পাওয়া গেলে তাও তালিকাভুক্ত করা হবে। এ পর্যন্ত যত
তালিকা হয়েছে, সবগুলোকে ধরে প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি নদীকর্মীদের সম্পৃক্ত করে তালিকাটি করা হয়েছে। মৃত নদী বলে আসলে কিছু নেই। নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করলেও পুরোনো গতিপথটি নদী হিসেবেই রেকর্ড থাকে।
এই তালিকা ধরে দেশব্যাপী একটি মহাপরিকল্পনা হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নদীকে খাল বলা হচ্ছে, কখনও মৃত নদী বলা হচ্ছে– এমনটা যেন আর না হয়। এই তালিকা ধরেই সরকার নদী রক্ষায় সব কিছু করবে। তাই ছোট নদীও আর গুরুত্ব হারাবে না। এ তালিকা হওয়ায় নদীর সংখ্যা ও নাম নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটবে বলে মনে করেন উপদেষ্টা।