সচিবালয়ে প্রবেশে আরো কঠোর হচ্ছে সরকার। আগের চেয়ে বেশি নিরাপত্তা জোরদার করাসহ কার্ড রিডার স্ক্যানিং ব্যবহার ও অত্যাধুনিক পদ্ধতি সংযুক্ত করে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে দর্শনার্থীরা যে মন্ত্রণালয়/বিভাগে প্রবেশের অনুমতি পাবেন, শুধু সেখানেই যেতে পারবেন। এছাড়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সচিবালয় ত্যাগ করতে হবে। 

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড.

নাসিমুল গনি স্বাক্ষরিত সচিবালয়ে প্রবেশ নীতিমালা-২০২৫ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

নতুন নীতিমালায় যেসব বলা হয়, কার্ডধারী কর্মকর্তা/কর্মচারী সচিবালয়ে প্রবেশের পূর্বে দেহ আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে এবং তাদের সঙ্গে থাকা ব্যাগ/বস্তু ব্যাগেজ স্ক্যানারে মাধ্যমে স্ক্যান করবেন। কার্ডধারীরা গেটে প্রবেশের সময় কেবল কার্ড রিডার স্ক্যানিং ব্যবহার করে সুনির্দিষ্ট গেটের মাধ্যমে প্রবেশ করবেন। কার্ডধারীরা গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করার পূর্বে ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে কার্ড স্ক্যান করে প্রবেশ করবেন।

নীতিমালায় আরো বলা হয়, সংশ্লিষ্টরা প্রাপ্ত কিউআর কোডটি সচিবালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে গেটে স্থাপিত কিউআর কোড রিডারের মাধ্যমে স্ক্যান করলে মনিটরে প্রদর্শিত ছবি ও তথ্যাদি মিল সাপেক্ষে প্রবেশের অনুমতি পাবেন। কিউআর কোডধারীদেরও গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করার আগে ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে কিউআর কোড স্ক্যান করে প্রবেশ করবেন। প্রযুক্তিগত পরিবর্তন সাপেক্ষে উপযুক্ত অন্য কোনো পদ্ধতি প্রবেশ ও বহির্গমনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

দর্শনার্থী যে মন্ত্রণালয়/বিভাগে প্রবেশের অনুমতি পাবেন, তিনি শুধু সেখানেই যেতে পারবেন এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সচিবালয় ত্যাগ করবেন। প্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের অবস্থান ও বহির্গমন নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

স্ক্যানার, আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টর, সিসিটিভি, আন্ডার ভেহিক্যাল সার্ভিল্যান্স সিস্টেম, ভেপার ডিটেক্টর/ডগ স্কোয়াড ইত্যাদির মাধ্যমে ব্যক্তি/বস্তু/যানবাহন প্রশিক্ষিত নিরাপত্তা কর্মী দ্বারা তল্লাশি নিশ্চিতকরণ। স্টিকার সম্বলিত/অনুমোদিত যানবাহন কারিগরি যন্ত্রপাতির সাহায্যে তল্লাশিপূর্বক প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংরক্ষণ করা। 

এছাড়া নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ যে কোনো প্রকারের অস্ত্র/আগ্নেয়াস্ত্র/ব্যক্তিগত লাইসেন্সপ্রাপ্ত অস্ত্র/বিস্ফোরক দ্রব্যসহ কোনো ব্যক্তি সচিবালয়ের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবেন না। আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্তদের লাইসেন্সকৃত আগ্নেয়াস্ত্র কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রবেশ গেটে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা স্থাপনের পর নিরাপত্তা হেফাজতে রাখতে পারবেন। তবে নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত জনবলের জন্য ইস্যু করা সরকারি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। 

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ক য ন কর করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যু, স্ত্রী কারাগারে

চট্টগ্রামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত শনিবার রাতে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। নিহত জাফর আলী চৌধুরী (৪৩) ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার উত্তর ইদিলপুর গ্রামের জানে আলম চৌধুরীর ছেলে। তিনি আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের কদমতলী শাখার সিনিয়র এক্সিকিউটিভ। গ্রেপ্তার আসামি হলেন- রোমানা ইসলাম। তিনি নগরের কোতোয়ালী থানার জেলরোড এলাকার মো. ফয়জুল ইসলামের মেয়ে। স্বামীর সঙ্গে নগরের চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ৯ নম্বর সড়কের একটি ভবনের ফ্ল্যাটে থাকতেন। স্ত্রীর অভিযোগ, তার স্বামী আত্মহত্যা করেছেন। তবে জাফর আলীর স্বজনদের অভিযোগ, পারিবারিক কলহের জেরে তাকে হত্যা করা হয়েছে। তার মাথার পেছনে ফোলা জখম, কানে জমাটবাঁধা রক্ত ও হাতে নখের আঁচড় ছিল। এ ঘটনায় গতকাল রোববার নিহতের ছোট ভাই আবুল হাসনাত বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।

মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জাফর আলী চৌধুরীকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন স্ত্রী রোমানা ইসলাম। তার শ্বশুরও তাকে বিভিন্ন সময়ে চাকরিচ্যুত ও নিশ্চিহ্ন করার হুমকি দেয়। শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে গেলে তাকে বেঁধে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল বলেও ছোট ভাইকে জানিয়েছিলেন। জাফরের দুই শ্যালক শরীফুল ইসলাম এবং আরিফুল ইসলাম বিভিন্নসময় তাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন।

এজাহারে বলা হয়, রোববার সন্ধ্যায় রোমানা ইসলাম তার ননদ রোকেয়াকে ফোন করে জানান, জাফর অসুস্থ এবং তার কান দিয়ে রক্ত পড়ছে। এরপর তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসতে বলেন। বড় বোন রোকেয়া ও তার ছেলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে তার নিথর মরদেহ দেখতে পান। এরমধ্যে লাশ রেখে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পালিয়ে যান। বাদী আবুল হাসনাতের অভিযোগ, ‘পারিবারিক কলহের জেরে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিট থেকে ৬টা ৫৫ মিনিট সময়ের মধ্যে জাফরকে তার স্ত্রী রোমানা ইসলাম নিজ হাতে কিংবা অন্য কারও সাহায্যে হত্যা করেছেন।’

চান্দগাঁও থানার ওসি আফতাব উদ্দিন বলেন, ‘নিহতের মাথায় ফোলা রয়েছে ও কানে রক্ত জমাট বাঁধা আছে। খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। স্ত্রীর দাবি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু তিনি সেটি পুলিশকে না জানিয়ে হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাই নিহতের ভাইয়ের দায়ের করা মামলায় স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, স্ত্রী মুখ খুলছে না। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে কিভাবে মারা গেছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ