ভালোবাসা দিবসে ঘুরতে গিয়ে মেয়ে ধর্ষিত, মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা
Published: 20th, February 2025 GMT
বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে শেরপুরের ঐতিহ্যবাহী গজনী অবকাশ পর্যটন বিনোদন কেন্দ্রে ঘুরতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হয়েছেন এক মাদ্রাসাছাত্রী। প্রথমদিকে লোক লজ্জার ভয়ে ধর্ষণের কথা গোপন করলেও পরে ওই শিক্ষার্থী এক নারী পুলিশের কাছে ধর্ষণের কথা স্বীকার করলে পুলিশ ধর্ষণ মামলা গ্রহণ করে।
এ ঘটনায় লোক-লজ্জায় বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন ধর্ষণের শিকার ওই মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মা। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার বিকেলে জেলার ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশকেন্দ্রের পাশের জঙ্গলে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় উপজেলার কাংশা ইউনিয়নে মেয়েটির মা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ওই নারী ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ধর্ষণের শিকার ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী (১৪) উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের একটি গ্রামের এক দরিদ্র কামারের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। এ ঘটনায় ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার অভিযুক্ত মো.
বাকি আসামিরা হলো- মো. আবু সাঈদ, রাশেদুল ইসলাম ও মতিন মিয়া। গতকাল বুধবার ওই শিক্ষার্থীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. আল আমিন।
পুলিশ ও ওই নারীর স্বামীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শুক্রবার দুপুরে কিশোরীটি তার ৩-৪ জন বান্ধবীর সঙ্গে ঝিনাইগাতীর গজনী অবকাশকেন্দ্রে বেড়াতে যায়। সেখানে ওই কিশোরীর সঙ্গে পূর্বপরিচিত মো. ইলিয়াছের (২৫) দেখা হয়। একপর্যায়ে ইলিয়াছ তার তিন সহযোগীর সহায়তায় কিশোরীটিকে অবকাশকেন্দ্রের জঙ্গলের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করে। তার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে কিশোরীটিকে উদ্ধার করেন এবং বাড়িতে পৌঁছে দেন।
ওই ঘটনার পর গতকাল দুপুরে মেয়ের ধর্ষণের ঘটনা জানতে পারেন তার মা। এছাড়াও এলাকায় বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে মানুষের মুখে মুখে। এতে লজ্জা থেকে বাঁচতে ময়েটির মা আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়। পরে বিকেলে সবার অগোচরে বাড়ির অদূরে গারো পাহাড়ে যান এবং সেখানে বিষপান করেন।
পরবর্তীতে পরিবারের সদস্যরা তাকে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। এক পর্যায়ে অচেতন অবস্থায় তাকে গারো পাহাড়ে পড়ে থাকতে দেখেন। প্রথমে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে ঝিনাইগাতী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাতে শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে আজ ভোরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে আত্মহত্যার চেষ্টাকারী ওই নারীর স্বামীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, “আমার স্ত্রীর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে আরও কয়েকদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। আমি ময়মনসিংহ থাকায় মামলার ব্যাপারে তেমন খোঁজখবর নিতে পারছি না। তবে আমি প্রশাসনের কাছে এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।”
ডাক্তারি পরীক্ষার ব্যাপারে তথ্য নিশ্চিতের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. তাসলিম আরিফ ও ডা. তাহেরাতুল আশরাফিকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইগাতী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিন বলেন, “কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ওই কিশোরীকে গতকাল জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। তবে এ ঘটনায় ইলিয়াছ ও তার তিন সহযোগীদের আটকের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/তারিকুল/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ গতক ল অবক শ
এছাড়াও পড়ুন:
বাগেরহাটে বাস-ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩
বাগেরহাটে বাস ও ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে সিয়াম গাজী (২০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। শনিবার সকালে বাগেরহাট-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বলভদ্রপুর বালিয়াডাঙ্গা নামক স্থানে এই দুর্ঘটনায় ইজিবাইকের চালকসহ আরও তিনজন আহত হয়।
নিহত সিয়াম গাজী মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতী গ্রামের মজিবর গাজীর ছেলে। আহতরা হলেন- নিহতের বাবা মজিবর গাজী (৫০), তাদের প্রতিবেশী রশিদ খান (৭৫) ও ইজিবাইক চালক বাপ্পি (৩০)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মহেষপুরা পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মো. তোমেজ উদ্দীন বলেন, সিয়াম ও তার বাবা তাদের একজন প্রতিবেশিকে নিয়ে ইজিবাইকে করে পিরোজপুর সদরে তাদের নিকট আত্মীয়ের মরদেহ দেখতে যাচ্ছিলেন। বলভদ্রপুর বালিয়াডাঙ্গা নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক অর্থাৎ পিরোজপুর থেকে বাগেরহাটের দিকে আশা একটি যাত্রীবাহী বাসের ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ইজিবাইকের চালকসহ চারজন গুরুতর আহত হয়। এর মধ্যে সিয়াম গাজী নামের একজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পরে মারা যান। অন্যরা বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, রাস্তার পাশে একটি ট্রাক রাখা ছিল। যার ফলে ইজিবাইক এবং যাত্রীবাহী বাস কেউ কাউকে দেখতে পায়নি। যানবাহন দুটি ট্রাকটিকে পাশ কাটিয়ে সড়ক অতিক্রম করার সময় মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।