সার সংরক্ষণ: ৪ গোডাউন নির্মাণে ব্যয় ২৩৭ কোটি টাকা
Published: 20th, February 2025 GMT
সার সংরক্ষণের জন্য পৃথক ৪টি প্রস্তাবের আওতায় দেশের ৪ জেলায় ৪টি বাফার গুদাম নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। এতে মোট ব্যয় হবে ২৩৭ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৮৭ টাকা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় প্রস্তাব ৪টিতে অনুমোদন দেওয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, ‘সার সংরক্ষণ ও বিতরণের সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জায়গায় ৩৪টি বাফার গুদাম নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় মানিকগঞ্জে ১টি ও মুন্সীগঞ্জে ১টি গোডাউন নির্মাণের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পের আওতায় মানিকগঞ্জে ১টি ও মুন্সীগঞ্জে ১টি গোডাউন নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ৩টি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়। দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড (এনডিই), ঢাকা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১২০ কোটি টাকা।
প্যাকেজের আওতায় মানিকগঞ্জে ১টি ১৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা এবং মুন্সীগঞ্জে ১টি ১৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টীল স্ট্রীল স্ট্রাকাচার বাফার গোডাউন তৈরি করা হবে। প্রকল্পের আওতায় যশোরে ১টি ও নড়াইলে ১টি গোডাউন নির্মাণের পূর্ত কাজ ক্রয়ের জন্য উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতিতে দরপত্র আহ্বান করা হলে ৩টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে দরপ্রস্তাব জমা পড়ে। ৩টি প্রস্তাবই আর্থিক ও কারিগরিভাবে রেসপনসিভ হয়।
দরপত্রের সব প্রক্রিয়া শেষে টিইসির সুপারিশকৃত রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এআইএল এবং এসসিএল, ফরিদপুর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১১৭ কোটি ৬৩ লাখ ৪০ হাজার ৬৬৭ টাকা। প্যাকেজের আওতায়: যশোরে ১টি ১৫ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতা এবং নড়াইলে ১টি ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন স্টীল স্ট্রাকচার বাফার গোডাউন নির্মাণ করা হবে।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র সপনস ভ র আওত য় প রকল প দরপত র র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
২৬৫ কোটি টাকায় কেনা হবে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি
২০২৪-২৫ অর্থবছরে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে প্যাকেজ-০৮ এর আওতায় ৫০ হাজার মে.টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এ চাল সরবরাহ করবে। এতে মোট ব্যয় হবে ২৬৫ কোটি ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
সূত্র জানায়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাসহ সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার উদ্দেশ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উৎস থেকে চাল সংগ্রহ করে থাকে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রাষ্ট্রীয় জরুরি প্রয়োজনে ও জনস্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ১০ লাখ মে.টন চাল আমদানির জন্য ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির’ অনুমোদন নেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ মে. টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল এবং জি টু জি পদ্ধতিতে মায়ানমার থেকে ১ লাখ মে.টন, পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার মে.টন ও ভিয়েতনাম থেকে ১.০০ লাখ মে.টন আতপ চালসহ মোট ৬.০০ লাখ মে.টন চাল ক্রয়ের চুক্তি সম্পাদিত হয়েছে।
এ ছাড়া, আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৫০ হাজার মে.টন চাল আমদানির জন্য চুক্তির কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। চুক্তির বিপরীতে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ১,৬৪,১৬২ মে.টন এবং জি টু জি ভিত্তিতে মায়ানমার থেকে ৮২ হাজার মে.টন চাল বন্দরে পৌঁছেছে। তার মধ্যে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৯৫,৬৯৬ মে.টন এবং জিটুজি ভিত্তিতে মায়ানমার থেকে ৮১,৮৯৯ মে.টন চাল খালাস হয়েছে। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র, জি টু জি পদ্ধতি এবং বৈদেশিক উৎস থেকে স্থানীয় দরপত্রের মাধ্যমে আরো চাল আমদানির কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
সূত্র জানায়, চাল আমদানির নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক চাল ক্রয়ের জন্য গত ২৯ জানুয়ারি তারিখে আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র (প্যাকেজ-৮) আহ্বান করা হয়। এতে মোট ১১টি দরপত্র বিক্রি হলেও মোট ৮টি সরবরাহকারী দরপত্র দাখিল করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সবগুলো দরপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ভারতীয় সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইটে লিমিটেডকে সর্ব নিম্ন দরদাতা হিসেবে সুপারিশ করে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মে.টন চালের দাম ৪৩৪.৫৫ মা.ডলার দাম উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে এই চাল সরবরাহ করবে।
বিদেশ থেকে সরকারিভাবে খাদ্যশস্য আমদানির ক্ষেত্রে পণ্য আগমনের পর পণ্য খালাসের পূর্বেই দরদাতা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, খাদ্য অধিদপ্তরের প্রতিনিধি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে পর্যায়ক্রমে নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সংগৃহীত নমুনা খাদ্য অধিদপ্তরের স্থানীয় পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করা হয় এবং পরে সংগৃহীত নমুনা কম্পোজিট করে এক প্যাকেট পরীক্ষার জন্য খাদ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হয়। খাদ্য অধিদপ্তরের পরীক্ষাগারে তা পরীক্ষা করে গুণগত মান নিশ্চিত করা হয়। দরপত্রে উল্লিখিত বিনির্দেশের কোনো প্যারামিটারের সঙ্গে পণ্যের প্রাপ্ত গুণগত মান নিম্নমানের হলে দরপত্রে উল্লিখিত সমুদয় চাল প্রত্যাখ্যান করার বিধান রয়েছে। এই শর্ত মেনেই সর্বনিম্ন দরদাতা ৬০ হাজার মে.টন চাল সরবরাহ করবে।
জানা গেছে, দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে দরপত্রে অংশগ্রহণকারী ৮টি প্রতিষ্ঠানকে গ্রহণযোগ্য দরদাতা ঘোষণা করে। গ্রহণযোগ্য দরদাতাদের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃক দাখিলকৃত দরপত্রে ৫০,০০০ মে. টন নন বাসমতি সিদ্ধ চালের জন্য উদ্বৃত্ত দর প্রতি মে. টন ৪৩৪.৫৫ মা.ডলার। যা উৎস দেশসগুলো গড় দর (৪৫৫.৮১ মা.ডলার) অপেক্ষা (৪৫৫.৮১-৪৩৪.৫৫)= ২১,২৬ মা.ডলার কম। এ ছাড়া মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড কর্তৃক প্রদত্ত দর বাংলাদেশের বন্দর পর্যন্ত প্রতি মে. টন ৪৩৪.৫৫ মা.ডলার, যা বাজার দর যাচাই কমিটি কর্তৃক প্রদত্ত প্রাক্কলিত দরের চেয়ে কম হওয়ায় উক্ত দর গ্রহণের জন্য দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি সুপারিশ করে। মহাপরিচালক, খাদ্য অধিদপ্তর উক্ত সুপারিশের সঙ্গে একমত পোষণ করে তা অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে ক্রয় প্রস্তাব পাঠায়।
সূত্র জানায়, প্রতি মে. টন ৪৩৪.৫৫ মা. ডলার (প্রতি কেজি ৫৩.০১৫১ টাকা) হিসেবে ৫০ হাজার মে. টন নন বাসমতি সিদ্ধ চাল ক্রয়ের জন্য ২ কোটি ১৭ লাখ ২৭ হাজার ৫০০ মা.ডলার অর্থাৎ গত ১৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ডলারের বিনিময় হার প্রতি দা. ডলার ১২২ টাকা (সম্ভাব্য) হিসেবে ২৬৫ কোটি ৭ লাখ ৫৫ হাজার টাকার প্রয়োজন হবে।
এ সংক্রান্ত একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির পরবর্তী সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে।
ঢাকা/এনএইচ