ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী বলেছেন, ‘‘(বাংলাদেশের) প্রশাসনের সঙ্গে (ভারতের) সম্পর্ক কেমন হবে, তা নির্ভর করবে সেখানে নির্বাচিত সরকার আছে কি না, তার ওপর।’’ তিনি বলেন, ‘‘প্রশাসন কেমন হবে, এ বিষয়ে আমার অবস্থান হলো—যখন সেখানে একটি নির্বাচিত সরকার থাকবে, তখনই বলা যাবে সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত।’’

ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে জেনারেল দ্বিবেদী এসব কথা বলেন। 

তবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সামরিক সম্পর্ক খুবই দৃঢ় বলে জানান জেনারেল দ্বিবেদী। তিনি বলেন, ‘‘সামরিক সম্পর্ক খুবই মজবুত। আমরা যখনই চাই, তখনই মতবিনিময় করতে পারি। আমরা সেটাই করে যাচ্ছি।’’

এএনআই ভারতের সেনাপ্রধানের কাছে জানতে চান, সম্প্রতি, পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও দেশটির গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই কর্মকর্তারা ভারতীয় সীমান্তের খুব কাছাকাছি, বিশেষ করে বাংলাদেশ সংলগ্ন ভারতের চিকেন’স নেক এলাকার সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে গিয়েছিলেন। এ বিষয়ে উদ্বেগ আছে কি?

জবাবে জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদীয় বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি একটি নির্দিষ্ট দেশ (পাকিস্তান) প্রসঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কেন্দ্রবিন্দু শব্দটি ব্যবহার করেছিলাম। এখন সেই দেশের লোকেরা যদি অন্য কোথাও যায় এবং তারা আমাদের প্রতিবেশী হয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই আমি এ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকব। কারণ, তাদের ওই মাটি ব্যবহার করে ভারতে সন্ত্রাসীদের পাঠানোর সুযোগ থাকা উচিত নয়। এটাই আমার দৃষ্টিভঙ্গি।’’

কাশ্মীর যে ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ, তা পাকিস্তান এখনো বুঝতে পেরেছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে জেনারেল দ্বিবেদী মজার ছলে বলিউডের ‘গাইড’ সিনেমার একটি উদাহরণ টানেন। যেখানে এক পাগল বলেছিল, ‘‘আমি খাওয়া ছেড়ে দেব, যতক্ষণ না বৃষ্টি হয়।’’

জেনারেল দ্বিবেদী বলেন, ‘‘দেখুন, তারা (পাকিস্তান) তাদেরই বলা কথার ফাঁদে আটকে গেছে। দেব আনন্দজির একটা সিনেমা আছে, আমার মনে হয়, (আরকে) নারায়ণের লেখা বই থেকে এটি তৈরি হয়েছে। সিনেমার শেষের দিকে দেব আনন্দজি যখন সাধু হয়ে যান, তখন এক পাগল ঘোষণা দেয় যে, যতক্ষণ না বৃষ্টি হয় ততক্ষণ সে না খেয়ে থাকবে। এখন পাকিস্তানের সেনাবাহিনী একবার বলেছিল যে, তাদের এটা করতেই হবে। এখন তাদের জন্য আর বেরিয়ে আসার কোনো পথ নেই। তাই তারা একই পথে এগিয়ে যাবে—কাশ্মীর এবং কাশ্মীর। এটিই প্রথম বিষয়।’’

সেনাপ্রধান বলেন, ‘‘দ্বিতীয়ত, যদি আপনি রবার্ট কাপলানের লেখা রিভেঞ্জ অব জিওগ্রাফি বইটি পড়েন, তাহলে দেখবেন, সিন্ধু নদের দুই পাশ কি কখনো এক হতে পারে? এটি একটি বড় প্রশ্ন, যা গভীরভাবে বিবেচনা করা দরকার। পাকিস্তানের এজেন্ডা শুধু কাশ্মীরের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তারা সব সময়ই ভারতবিরোধী মনোভাব উসকে দিচ্ছে।’’

তিনি বলেন, ‘‘ভারতের ধারণাটাই তাদের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিষয়টি কেবল কাশ্মীরেই সীমাবদ্ধ নয়। পাকিস্তানকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে হলে এমন একটি সাধারণ এজেন্ডা থাকতে হবে, যা তাদের সবাইকে একত্রে ধরে রাখতে পারে। ভাষা কি এক? জনগণ কি একই রকম? কী মিল আছে? একমাত্র মিল হচ্ছে ভারতবিরোধী মনোভাব। তাই তারা সব সময় কাশ্মীর ইস্যুকে সামনে নিয়ে আসবে এবং বারবার এটি নিয়ে প্রচার চালাবে।’’

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশের সেরা পারফরমার কারা

আগামীকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে শুরু বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে দুই টেস্টের সিরিজ। প্রায় চার বছর পর টেস্টে মুখোমুখি হতে চলা দুই দলের আগের লড়াইয়ে বাংলাদেশের কারা ছিলেন সেরা পারফরমার, কতটা ভালো করেছেন, সেটিই দেখুন সংখ্যায় সংখ্যায়।১৮

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে এখন পর্যন্ত টেস্ট খেলেছে ১৮টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ জিতেছে ৮টিতে, জিম্বাবুয়ে ৭টি। বাকি তিনটি শেষ হয়েছে ড্রতে।

২০০১ সালে হোম ও অ্যাওয়ে মিলিয়ে মোট ৪টি টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে। তবে ২০২১ সালের জুলাইয়ের পর সাড়ে তিন বছরের বেশি সময়ে দুই দল একবারও মুখোমুখি হয়নি।

ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশের সেরা ৫

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে লড়াইয়ে দুই দল মিলিয়ে সবচেয়ে বেশি রান জিম্বাবুয়ের ব্রেন্ডন টেলরের (২৪ ইনিংসে ১২৩৯)। এমনকি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৮৩ রানও জিম্বাবুয়ের হ্যামিল্টন মাসাকাদজার। বাংলাদেশের পক্ষে মুশফিকুর রহিম সর্বোচ্চ রানের মালিক হলেও দুই দল মিলিয়ে তিনি তৃতীয় স্থানে। তবে এবারের সিরিজেই মাসাকাদজাকে টপকে যাওয়ার সুযোগ তাঁর সামনে।

বাংলাদেশের হয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সবচেয়ে বেশি ৩টি সেঞ্চুরি আছে মুমিনুল হকের, যিনি এবারের সিরিজের দলেও আছেন। তবে সবচেয়ে বেশি ফিফটি করা হাবিবুল বাশার (৭টি) অবসর নিয়েছেন দেড় যুগ আগেই।

বোলিংয়ে সেরা ৫

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ের লড়াইয়ে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছেন এলটন চিগম্বুরা, তবে ১৬ ইনিংস বলা করা এই মিডিয়াম পেসার উইকেটশিকারের দিক থেকে বেশ পেছনে (১৮ উইকেট)। ১২ ইনিংসে হাত ঘুরিয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট তাইজুল ইসলামের—৪১ উইকেট। দুই দলের সম্মিলিত তালিকার শীর্ষ ৫ উইকেট সংগ্রাহকের ৩ জনই বাংলাদেশের।

১০

বাংলাদেশ–জিম্বাবুয়ে টেস্টে ম্যাচে দশ উইকেট নিয়েছেন এখন পর্যন্ত তিনজন বোলার। তিনজনই বাংলাদেশি—এনামুল হক জুনিয়র (১২ উইকেট, ২০০৫ সালে ঢাকায়), সাকিব আল হাসান (১০ উইকেট, ২০১০ সালে খুলনায়), তাইজুল ইসলাম (১১ উইকেট, ২০১৮ সালে সিলেটে)।

৫৬০

মুখোমুখি লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় ইনিংসটি বাংলাদেশের। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে ৬ উইকেটে ৫৬০ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছিল মুমিনুল হকের দল।

১০৭

দুই দলের লড়াইয়ে সর্বনিম্ন ইনিংসটিও বাংলাদেশের। ২০০১ সালের নভেম্বরে জাতীয় স্টেডিয়াম, ঢাকায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১০৭ রানে অলআউট হয়েছিল নাইমুর রহমানের নেতৃত্বাধীন দল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ