বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির খুনের ছাত্ররাজনীতি চায় না বলে মন্তব্য করেছেন সংগঠনটির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘‘যে ছাত্র রাজীতির কারণে মানুষ খুন হতে হয়, মায়ের-ভাইয়ের-বোনের বুক খালি হয়; সেই ছাত্র রাজনীতি আমরা চাই না। বরং যে ছাত্র রাজনীতির মধ্য দিয়ে মেধার চর্চা, সেবামূলক প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক সচেতনতা, গঠনমূলক রাজনীতি এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি হবে, আমরা সেই ছাত্র রাজনীতি চাই।’’

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে হত্যার প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘কুয়েটে সেই ছাত্র রাজনীতিকে লালকার্ড দেখানো হয়েছে, যে ছাত্র রাজনীতি বুয়েটের আবরারকে হত্যা করেছে।’’ বিগত ১৫ বছরে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগ যে কালচার শুরু করেছিল তা থেকে বের হয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনৈতিক চর্চা করতে হবে উল্লেখ করে ছাত্রশিবিরের সভাপতি বলেন, ‘‘ছাত্রশিবির সেই কাজটিই করছে।’’

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখার উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ সব কথা বলেন। 

আরো পড়ুন:

জামায়াত আমিরের হুঁশিয়ারি: আজহার‌কে মু‌ক্তি না দি‌লে স্বেচ্ছা কারাবরণ

জামায়াত নেতা রেজাউল
কুয়েটে হামলা দুঃখজনক, ব্লেইম গেইম রাজনীতি বন্ধ করুন 

ছাত্রশিবির খুলনা মহানগর শাখার উদ্যোগে জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত সায়েন্স ফেস্ট পরিদর্শন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে জাহিদুল ইসলাম খুলনায় আসেন। খুলনা সফরকালে তিনি জুলাই আন্দোলনে আহতদের এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

খুলনা সফরের অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মঙ্গলবার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উদ্ভুত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠলে তিনি তা নিয়েও খোলামেলা কথা বলেন। 

ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘‘কুয়েটের ঘটনাটি একেবারেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রদলের। এর সঙ্গে ছাত্রশিবিরের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা এটিকে শিবিরের সঙ্গে মেলাতে চাচ্ছেন তাদের হীনউদ্দেশ্য রয়েছে। বরং যারাই ‘শিবিরের ওপর দায় চাপিয়ে দাও’ রাজনীতি করেন, এটি তাদেরই অপপ্রচার।’’

‘ছাত্রদলকে আমরা বন্ধুপ্রতীম সংগঠন মনে করি’— উল্লেখ করে ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘‘আসুন দোষারোপের রাজনীতি বন্ধ করে কার কতটুকু অর্জন তা জাতির সামনে তুলে ধরি। জাতি যদি আপনাদের গ্রহণ করে, তাহলে আমরা সাধুবাদ জানাবো। আর যদি আমাদের গ্রহণ করে তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে পরবর্তী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করবো।’’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তথা ছদ্মনামে ছাত্রশিবির বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বলে ছাত্রদলের যে অভিযোগ সেই প্রসঙ্গে ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, ‘‘শেখ হাসিনাবিরোধী আন্দোলনের সময়তো এমন প্রশ্ন কেউ করেননি। তাহলে এখন কেন?’’

‘ছাত্রশিবির একটি গুপ্ত সংগঠন’ বলে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন থেকে যে মন্তব্য করা হয়, সেই প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিগত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৩২টি শাখার প্রতিটিতেই প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে সেটআপ সম্পন্ন হয়।’’ পাল্টা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘‘ওই ১৫ বছরে ছাত্রদলের কোনো কমিটি যথাসময়ে হয়েছে কি-না, বরং আমরা দেখেছি বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং-লবিং হয়েছে। সুতরাং যারা নিজেদের সংগঠনকেই ঠিকমতো চালাতে পারে না, তাদের মুখে অন্য সংগঠন নিয়ে এমন মন্তব্য কেবলই হাস্যকর।’’

তিনি বলেন, ‘‘শিবির আগেও যেমন তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে, তেমনি ৫ আগস্টের সরকার পতনের পরও আহতদের পাশে যাওয়া, শহীদ পরিবারের পাশে থাকা, ক্যাম্পাসে মেধার চর্চা করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।’’ তার খুলনা সফরও বিজ্ঞানভিত্তিক ক্যাম্পাস গড়ার অংশ এবং মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরির মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অংশ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তৃতা করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও  খুলনা মহানগর সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন। এতে অন্যান্যের মধ্যে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মু.

নোমান হোসেন নয়ন, মহানগরী সেক্রেটারি রাকিব হাসান, সাহিত্য সম্পাদক বেলাল হোসেন, সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের সভাপতি তারেক হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত র র জন ত ছ ত রদল র প রসঙ গ ইসল ম স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীনতা দিবসে পিওজে মিউজিক ক্লাবের থিম সং ‘সবুজের আহ্বান’

মহান স্বাধীনতা দিবসে মুক্তি পাচ্ছে প্রকৃতি ও জীবন (পিওজে) মিউজিক ক্লাবের থিম সং ‘সবুজের আহ্বান’। আজ চ্যানেল আইয়ের পর্দায় গানটির ভিডিওচিত্র প্রচারের পাশাপাশি গানটি পাওয়া যাবে পিওজে মিউজিক ক্লাব এবং প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশনের অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে।

‘সবুজের আহ্বান’ গানটির কথা লিখেছেন খন্দকার হাসনাত করিম পিন্টু। সুর ও সংগীত তানভীর তরী। সহকারী সুর ও সংগীত শাফরিনা। গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন তানভীর তরী, মইন খান, নউশিন শারমিলি, কেয়া সুহি, জিয়াউল হক ভূঁইয়া ও শাফরিনা। গানটি পরিকল্পনা ও পরিচালনা করেছেন প্রকৃতিবন্ধু মুকিত মজুমদার বাবু।

পিওজে মিউজিক ক্লাবের থিম সং-এ ফুটে উঠেছে— ফুলের সুবাস, পাখির কাকলি, নদীর কলতান আর বাংলার লোকসংগীতের হারানো ঐতিহ্যের কথা। গানটি মনে করিয়ে দেয়, প্রকৃতি কেবল দেখার জিনিস নয়, জীবন ও ভালোবাসার অনন্য উৎস।

‘সবুজের আহ্বান’ থিম সং-এর পরিচালক মুকিত মজুমদার বাবু বলেন, ‘ধ্বংস আর দূষণের অন্ধকারে দাঁড়িয়ে, সবুজের আহ্বান এক সাহসী উচ্চারণ— দখল নয়, সংরক্ষণ; নীরবতা নয়, প্রতিবাদ; বিচ্ছিন্নতা নয়, সম্মিলিত কণ্ঠে গাওয়া সবুজ জীবনের গান। এটি এমন একটি সুর যা গানের মধ্য দিয়ে মানুষকে জাগিয়ে তোলে, পরিবেশের প্রতি ভালোবাসা ছড়িয়ে দেয়, আর বাংলা সংস্কৃতিকে গর্বের সঙ্গে ধারণ করে।’

তানভীর তরী বলেন, ‘যেখানে সুরে মিশে যায় প্রকৃতির স্পর্শ, যেখানে গানে উঠে আসে সবুজের কথা— সেখানেই জন্ম ‘সবুজের আহ্বান’-এর। এ গান শুধুই একটি থিম সং নয়, এ যেন এক প্রাণের অনুভূতি, একটি আলোড়ন, প্রকৃতির কাছে যাওয়ার আহ্বান। তাই গানের সুরে বলি, এসো গাই প্রকৃতির গান, এসো গাই জীবনের গান।’

শাফরিনা বলেন, ‘সবুজ সুরে রাঙাই জীবন স্লোগান ধারণ করে গানটি হয়ে উঠেছে পিওজে মিউজিক ক্লাবের প্রাণ। এই গান সকলকে আহ্বান জানায়, একসাথে গাইতে, একসাথে প্রকৃতিকে ভালোবাসতে।’

‘সুন্দর প্রকৃতিতে গড়ি সুস্থ জীবন’ স্লোগানকে বুকে ধারণ করে প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণের বহুমুখী উদ্যোগ নিয়ে ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইমপ্রেস গ্রুপের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান প্রকৃতি ও জীবন ফাউন্ডেশন। ২০১০ সালের ১ আগস্ট থেকে চ্যানেল আইতে শুরু হয় ফাউন্ডেশনের গবেষণাভিত্তিক টিভি অনুষ্ঠান ‘প্রকৃতি ও জীবন’, যা বাংলাদেশের জীববৈচিত্র্য নিয়ে কাজ করে। এর ধারাবাহিকতায় সংগীতের মাধ্যমে পরিবেশ ও সংস্কৃতি সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে ‘সবুজ সুরে রাঙাই জীবন’ স্লোগানে ২০২৪ সালের ১ জুলাই প্রতিষ্ঠিত হয় ‘পিওজে মিউজিক ক্লাব’।

সম্পর্কিত নিবন্ধ