পাবনায় যুবককে তুলে নিয়ে কবজি কেটে দিল দুর্বৃত্তরা
Published: 20th, February 2025 GMT
পাবনার সাঁথিয়ায় এক যুবকের দুই হাতের কবজি কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা একটার দিকে সাঁথিয়া পৌর এলাকার টেলিফোন এক্সচেঞ্জ কার্যালয়ের কাছে এ ঘটনা ঘটে।
ওই যুবকের নাম আশরাফুল হোসেন (৩২)। তিনি পৌরসভার কলেজপাড়া এলাকার নূর ইসলামের ছেলে। তাঁর বিরুদ্ধে চুরি, ডাকাতি, মারামারিসহ ৯টি মামলা আছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সাঁথিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বেলা একটার দিকে ৮–১০ জনের একটি দল আশরাফুলকে তুলে নিয়ে সাঁথিয়া পৌর এলাকার ডিজিটাল এক্সচেঞ্জ কার্যালয়ের দেয়ালে ঘেরা অংশে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। আশরাফুলের চিৎকার শুনে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।
আশরাফুলকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। পরে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। বিকেল চারটার দিকে স্বজনেরা আশরাফুলকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।
সাঁথিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তানজিল আরাফ বলেন, ‘ওই ব্যক্তির কবজি বা রিস্ট থেকে দুই হাতই কাটা ছিল। আমরা ভালোভাবে ব্যান্ডেজ করে দিয়েছি যাতে রক্তপাত না হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেছি।’
আজ বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আশরাফুলের দুই হাতে কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ঘটনাস্থল থেকে এক হাতে কবজি পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে স্বপন, বাবুল, মিঠু, আসিফ, টিটু, আকাশ, মামুনসহ ৮–১০ জন জড়িত বলে আশরাফুল পুলিশকে জানিয়েছেন।
সাইদুর রহমান জানান, আশরাফুল চুরি, ডাকাতিসহ ৯টি মামলার আসামি। পূর্বশত্রুতার জেরে তাঁর ওপর হামলা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আশর ফ ল
এছাড়াও পড়ুন:
৩০০ বছরের পুরোনো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ‘উলচাপাড়া শাহী জামে মসজিদ’
বিশাল চওড়া ফটক। ফটকের ওপর কারুকাজে নির্মিত দুটি মিনার। সুউচ্চ ফটক দিয়ে ভেতরে ঢুকলে ছয়টি ছোট–বড় মিনার ও তিন গম্বুজবিশিষ্ট প্রাচীন মসজিদ চোখে পড়ে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার উলচাপাড়া এলাকার এই মসজিদের নাম উলচাপাড়া মসজিদ। এলাকাবাসীর কাছে এটি ‘উলচাপাড়া শাহী জামে মসজিদ’ হিসেবে পরিচিত।
মসজিদটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো। এটি বর্তমানে দেশের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি ঐতিহাসিক স্থাপনা।
চার ফুট উচ্চতার মজবুত প্ল্যাটফর্মের ওপর চুন–সুরকি, ইট আর কালো পাথরের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে মসজিদের অবকাঠামো। মসজিদের দেয়ালে অসংখ্য খোপকাটা মৌলিক টেরাকোটার অলংকরণ। মসজিদটি প্রধানত দুটি অংশে বিভক্ত। পশ্চিমাংশে নামাজের কক্ষ আর নামাজের কক্ষের পূর্ব পাশে বারান্দা। মসজিদের ওপর বর্গাকার এক গম্বুজবিশিষ্ট নামাজের কক্ষ এবং পূর্ব ভাগে ছোট তিন গম্বুজবিশিষ্ট একটি বারান্দা আছে।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে স্থানের তালিকায় উলচাপাড়া মসজিদের নাম উল্লেখ আছে। সেখানে উলচাপাড়া মসজিদের বিষয়ে উল্লেখ আছে, মসজিদের নির্মাণ কৌশল ও মসজিদে ব্যবহৃত ইট দেখে মনে হয় যে এটি সপ্তদশ শতাব্দীতে নির্মিত। মসজিদে পাওয়া শিলালিপি পাঠ থেকে জানা যায়, ১৭২৭–২৮ সালে কোনো বণিক কর্তৃক মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল।
এই মসজিদে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ইমামের দায়িত্ব পালন করছেন হাফেজ মাওলানা উবায়দুল্লাহ। অসুস্থতার কারণে তিনি বর্তমানে আসতে পারেন না। বর্তমানে মসজিদ তত্ত্বাবধান করছেন মাওলানা আখতারুজ্জামান। কথা হলে তাঁরা দুজন প্রথম আলোকে বলেন, মসজিদটি ৩০০ বছরের পুরোনো। অনেক মানুষ এই মসজিদ দেখতে এলাকায় আসেন। তবে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে তাঁরা বেশি কিছু জানেন না বলে জানালেন।
মসজিদে কথা হয় ইতিকাফে বসা উলচাপাড়ার গ্রামের ষাটোর্ধ্ব মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের (৬৫) সঙ্গে। তাঁর বাবা এনায়েত আলী এই মসজিদের মুয়াজ্জিন ছিলেন। ১৯৭৫ সালে ১০৫ বছর বয়সে এনায়েত আলী মারা যান। হাবিবুর রহমানের দাদা মোহাম্মদ তোরাব আলী মৃধাসহ পরদাদারা এই মসজিদে নামাজ পড়েছেন।
গ্রামের বাসিন্দা ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের প্রভাষক মোবারক হোসেন বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদের দেখাশোনার দায়িত্ব নিয়েছে। এর পর থেকে মসজিদের কোনো সংস্কারকাজ এলাকাবাসী চাইলেও করতে পারছেন না। মসজিদটি প্রায় ৩০০ বছরের পুরোনো। প্রতিদিন অনেক মানুষ মসজিদটি দেখতে এই গ্রামে আসেন।