আপেল, কমলা, আঙুর, নাশপাতি, আনারসসহ তাজা ফলের ওপর আরোপিত শুল্ক–কর কমানোর সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন। সংস্থাটি মনে করছে, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও শুল্ক–কর বাড়ানোর কারণে আমদানি করা তাজা ফলের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা ভোক্তার ওপর অসহনীয় চাপ সৃস্টি করেছে।

সম্প্রতি তাজা ফল আমদানির ক্ষেত্রে সম্পূরক শুল্ক ২০ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এখন তা আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব করেছে ট্যারিফ কমিশন। এ ছাড়া তাজা ফল আমদানিতে অগ্রিম কর ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ এবং ২০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক যৌক্তিক করারও সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

গত সোমবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খানকে এ–সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে ট্যারিফ কমিশন। চিঠির অনুলিপি অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও পাঠানো হয়েছে।

চিঠিতে ট্যারিফ কমিশন বলেছে, ডলারের দাম ও শুল্ক–কর বৃদ্ধির ফলে তাজা ফল আমদানি কমে গেছে। সর্বশেষ ২০২৩–২৪ অর্থবছরে আগের অর্থবছরের তুলনায় আপেল আমদানি ৫১ শতাংশ, মাল্টা ৭০ শতাংশ, আঙুর ২৯ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোয় গত জানুয়ারিতে মেন্ডারিন ৫১ শতাংশ, আঙুর ২১ শতাংশ, আপেল ৩ দশমিক ৫ শতাংশ, নাশপাতি ৪৫ শতাংশ, আনার ও ড্রাগন ৩২ শতাংশ আমদানি কমেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায়। বর্তমানে ৮৬ টাকা মূল্যের ফল আমদানি করা হলে তার জন্য ১২০ টাকা কর দিতে হয় বলে জানিয়েছে ট্যারিফ কমিশন।

শুল্ক–কর কমানোর জন্য ট্যারিফ কমিশনের সুপারিশের বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সংস্থাটির প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে।

এনবিআরের হিসাবে বিদেশি ফল আমদানিতে ২০২৩–২৪ অর্থবছরে ৩০ কোটি মার্কিন ডলার খরচ হয়েছে। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ১১৭ টাকা ধরে হিসাব করলে বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা। আর জাহাজভাড়া, বিমাসহ সব মিলিয়ে এ খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকায়। ফল আমদানি থেকে সরকার রাজস্ব আদায় করেছে ৫ হাজার ১৩৯ কোটি টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফল আমদ ন শ ল ক কর ল আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

গ্যাস–সংকটে সিইউএফএলে সার উৎপাদন বন্ধ

গ্যাস–সংকটে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডে (সিইউএফএল) সার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার সকাল সাতটার দিকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে যান্ত্রিক ত্রুটির (রিঅ্যাক্টরের সমস্যা) কারণে গত ৩ জানুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইউরিয়া সার উৎপাদন বন্ধ ছিল কারখানাটিতে। দেড় মাস পর আবারও কারখানায় উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ল।

উৎপাদন আবার বন্ধ হয়ে পড়ার বিষয়টি সিইউএফএলের উৎপাদন বিভাগের প্রধান উত্তম চৌধুরী প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহ না থাকায় আজ সকালে উৎপাদন বন্ধ করে দিতে হয়েছে।’

পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এ কারখানায় দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন। গ্যাস–সংকট ও যান্ত্রিক নানা সমস্যা থাকায় গত অর্থবছর কারখানাটিতে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশে ইউরিয়া সারের চাহিদা বছরে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করে। অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উচ্চমূল্যে আমদানি করতে হয়।

সিইউএফএল সূত্র জানায়, গত দুই বছর কখনো যান্ত্রিক ত্রুটিতে, কখনো গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ ছিল সিইউএফএল। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে শুধু পাঁচ দিন চালু ছিল এ কারখানা। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে পড়ার পর ১৩ অক্টোবর সিইউএফএল চালু হয়। এ বছরের ৩ জানুয়ারি আবারও যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে দীর্ঘ সময় লাগে কারখানাটি চালু করতে। সর্বশেষ যাবতীয় স্টার্টআপ (কারখানা চালু প্রক্রিয়া) শেষে ২৬ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত আড়াইটার সময় কারখানা চালু হয়।

১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করে সরকার। কারখানা চালু হওয়ার সময় দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৫ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে দৈনিক ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম হচ্ছে। পাশাপাশি বার্ষিক ৩ লাখ ১০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছোট হচ্ছে আগামী বাজেটের আকার
  • ইন্টারনেটের ব্যবহার কম উৎপাদনশীল খাতে
  • প্রকল্প বন্ধ, কাজও নেই দুর্ভোগে দরিদ্র শ্রমিকরা
  • আমদানি-রপ্তানি কমলেও রাজস্ব বেড়েছে ৩৬৬ কোটি টাকা
  • হঠাৎ বাড়ছে হাইডেলবার্গ সিমেন্টে শেয়ারদর, চার দিনে বাড়ল ৬৩ টাকা
  • বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশ পিছিয়ে কেন
  • গ্যাস–সংকটে সিইউএফএলে সার উৎপাদন বন্ধ
  • সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি পেল ১৩৩ প্রতিষ্ঠান
  • ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নাম লেখাতে আমরা প্রস্তুত: অধ্যাপক মোর্শেদ
  • সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি পেল ১৩৩ প্রতিষ্ঠান, মানতে হবে ৯ শর্ত