এস কে সুর পরিবারের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ, ফ্ল্যাট-জমি জব্দ
Published: 20th, February 2025 GMT
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর ৩৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।এসব হিসাবে ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা রয়েছে। এছাড়া তাদের দুটি ফ্ল্যাট ও আট শতাংশ জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সেগুনবাগিচায় এস কে সুরের ১৫০০ বর্গফুটের একটি ও ধানমন্ডিতে সুপর্ণা সুরের ৪৪০০ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো.
আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়েছে, এস কে সুর অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর, রুপান্তরসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সম্পৃক্ত ধারার অপরাধের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ৭০০ টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার অস্থাবর, ব্যাংকে স্থিতি ১৫ লাখ ২৩ হাজার ১৪৮ টাকা, স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার স্থাবর, সুপর্ণা সুর চৌধুরীর ব্যাংকে স্থিতি ৮৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৭ টাকা এবং কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকার স্থাবর, কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর ব্যাংকে স্থিতি ১ কোটি ১৪ লাখ ১২ হাজার ৮৬২ টাকা অর্থাৎ মোট ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৭ টাকার সম্পদ দখলে রেখেছেন বা মালিকানা অর্জন করেছেন। যা সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারি চাকরির সুবাদে দুর্নীতির মাধ্যমে অসাধু উপায়ে নিজ, স্ত্রী ও কন্যার নামে অর্জন করেছেন এবং তাদের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। নিয়মিত মামলার আগেই তারা এসব সম্পত্তি স্থানান্তর করতে পারেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে।
অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে সম্পত্তি জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি দুদকের একটি দল রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে এস কে সুরকে গ্রেপ্তার করে দুদক। ওইদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।
ঢাকা/মামুন/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর দ ধ স থ বর স পর ণ
এছাড়াও পড়ুন:
আন্দোলনের সময় ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ তরুণীর
ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় গত বছরের ৪ আগস্ট নারায়ণগঞ্জে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন এক তরুণী। তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা ও নির্বাহী কমিটির সদস্য নুসরাত তাবাসসুমকে বারবার জানালেও তিনি কারও সহযোগিতা পাননি। তবে উমামা ও নুসরাত এই তরুণীর অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (পুনাব) ও জুলাই রেভল্যুশনারি অ্যালায়েন্স নামের দুটি সংগঠন ‘আন্দোলনে নারীর শক্তি, নারীর কথা: শিক্ষা, নেতৃত্ব ও সম্ভাবনার দিগন্ত’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। সেখানে অংশ নিয়ে ওই তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার কথা জানান। তাঁর এই বক্তব্যের একটি ভিডিও ক্লিপ ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।
অভিযোগকারী তরুণী বলেন, ‘২০–২৫ জন নারায়ণগঞ্জের তোলারাম কলেজের পাশের কলেজ রোডের গলিতে আজমেরী ওসমানের বাড়ির নিচে একটা অফিসে নিয়ে যায়। আমাকে টেনেহিঁচড়ে মারতে মারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আশপাশে অনেক মানুষ থাকলেও কেউ সামনে আসেননি আটকানোর জন্য। আমাকে মারধর করে মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা। সেই অফিসে নিয়ে যাওয়ার পর আমাকে অনেক বাজে বাজে কথা বলেছে, অনেক বাজে গালিগালাজ করেছে, আমার পরিবার নিয়েও অনেক কথাবার্তা বলেছে। বাজে কথাও শুনতে হয়েছে। পরে ওখান থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে দুজন ছিল। দুজন মিলে পরে আমাকে ধর্ষণ করে। এটা এখন পর্যন্ত কোনো গণমাধ্যমে আসেনি। আমি নিজেই আসতে দিইনি। এখন পর্যন্ত তারা (অপরাধী) ঘুরছে, এখনো শাস্তি হয়নি।’
সারজিস আলম, উমামা ফাতেমা ও নুসরাত তাবাসসুম তাঁর ঘটনাটি জানেন বলে উল্লেখ করেন ওই তরুণী। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘১০ নভেম্বর আমি কনসিভ (গর্ভধারণ) করি। উমামা ফাতেমাকে যখন আমি জানাই, তখন তিনি বলেন, “তোমার সাথে না অনেক খারাপ হইছে। আচ্ছা, দেখবোনে বিষয়টা।” শেষ। এখানেই ক্লোজ করে দিয়েছে টপিক। নুসরাত তাবাসসুম আপুকে জানাই। উনি আমাকে বলেন, “তুই আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে নক দিস।” টিএসসি ক্যাফেটেরিয়ায় আমি তাঁর পাশের টেবিলে বসে হোয়াটসঅ্যাপে নক করি। তিনি হোয়াটসঅ্যাপের মেসেজগুলো দেখলেও কোনো রিপ্লাই করেননি।’
এই তরুণীর যে অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন, সেখানে অংশ নিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন। অনুষ্ঠানের পর জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক কমিটির নারী সেল ও আইন সেল রয়েছে। ওই তরুণী যোগাযোগ করলে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ অস্বীকার
অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে উমামা ফাতেমা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি তাঁর জায়গা থেকে ওই তরুণীকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছেন।
এ ছাড়া অভিযোগকারী তরুণীর বক্তব্যের পর আহনাফ তাহমিদ নামের এক ব্যক্তি বিষয়টির কড়া সমালোচনা করে ফেসবুকে পোস্ট দেন। ওই পোস্টের স্ক্রিনশট শেয়ার করে নুসরাত তাবাসসুম ফেসবুকে অভিযোগের জবাব দিয়েছেন। অভিযোগকারী তরুণীর নাম উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘একবার আমার সামনে এনে তাকে অভিযোগ করতে বলেন যে তাকে সাহায্য করতে চাওয়া হয়নি। তাকে সব রকম সাহায্য দিতে চাওয়া হয়েছিল, তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সুচিকিৎসা, নারায়ণগঞ্জের ঘটনাস্থলে তদন্ত, মামলা—সবকিছুর কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সে চেয়েছিল অন্য কিছু। কিন্তু তাঁর অনুমতি ব্যতিরেকে আমি সেটা প্রকাশ করতে পারছি না।’
এদিকে বক্তব্যের বিষয়ে জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে রাত নয়টার দিকে ওই তরুণীর মুঠোফোনে কল করা হলে এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে চাননি।