বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সীতাংশু কুমার সুর, তার স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ও কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর ৩৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন আদালত।এসব হিসাবে ৩ কোটি ৯৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা রয়েছে। এছাড়া তাদের দুটি ফ্ল্যাট ও আট শতাংশ জমি জব্দের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সেগুনবাগিচায় এস কে সুরের ১৫০০ বর্গফুটের একটি ও ধানমন্ডিতে সুপর্ণা সুরের ৪৪০০ বর্গফুটের আরেকটি ফ্ল্যাট রয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ মো.

জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুদকের উপ-পরিচালক মো. নাজমুল হুসাইন এসব সম্পদ জব্দ ও অবরুদ্ধ চেয়ে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়েছে, এস কে সুর অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ফাঁকি, অবৈধ সম্পদ অর্জন, অর্থ স্থানান্তর, হস্তান্তর, রুপান্তরসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের সম্পৃক্ত ধারার অপরাধের অভিযোগ অনুসন্ধানের জন্য তিন সদস্যের অনুসন্ধান টিম গঠন করা হয়েছে। সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী ৪৪ লাখ ১৭ হাজার ৭০০ টাকার স্থাবর ও ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকার অস্থাবর, ব্যাংকে স্থিতি ১৫ লাখ ২৩ হাজার ১৪৮ টাকা, স্ত্রী সুপর্ণা সুর চৌধুরী ১ কোটি ২৫ লাখ টাকার স্থাবর, সুপর্ণা সুর চৌধুরীর ব্যাংকে স্থিতি ৮৪ লাখ ২৯ হাজার ৮৭ টাকা এবং কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর ৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকার স্থাবর, কন্যা নন্দিতা সুর চৌধুরীর ব্যাংকে স্থিতি ১ কোটি ১৪ লাখ ১২ হাজার ৮৬২ টাকা অর্থাৎ মোট ৫ কোটি ৭৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭৯৭ টাকার সম্পদ দখলে রেখেছেন বা মালিকানা অর্জন করেছেন। যা সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর চৌধুরী বাংলাদেশ ব্যাংকে সরকারি চাকরির সুবাদে দুর্নীতির মাধ্যমে অসাধু উপায়ে নিজ, স্ত্রী ও কন্যার নামে অর্জন করেছেন এবং তাদের জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। নিয়মিত মামলার আগেই তারা এসব সম্পত্তি স্থানান্তর করতে পারেন বলে প্রতীয়মান হয়েছে।

অভিযোগটি সুষ্ঠু অনুসন্ধানের স্বার্থে সম্পত্তি জব্দ ও অবরুদ্ধ করা প্রয়োজন। এর আগে গত ১৪ জানুয়ারি দুদকের একটি দল রাজধানীর সেগুনবাগিচা এলাকা থেকে এস কে সুরকে গ্রেপ্তার করে দুদক। ওইদিন তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন।

ঢাকা/মামুন/এসবি

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবর দ ধ স থ বর স পর ণ

এছাড়াও পড়ুন:

মধ্যরাতে সাংবাদিককে অবরুদ্ধ, পরে পুলিশে হস্তান্তর

নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে মধ্যরাতে জামাল হোসেন (৪৫) নামের এক সাংবাদিককে অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনা ঘটেছে। এরপর তাঁকে পুলিশের হস্তান্তর করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে শহরের টাউনহল মোড়–সংলগ্ন ফ্ল্যাট রোডে এ ঘটনা ঘটে। একদল তরুণ তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

জামাল হোসেন দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার স্থানীয় প্রতিনিধি ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক। একটি কুরিয়ার সার্ভিসের স্থানীয় পরিবেশক হিসেবেও রয়েছেন তিনি।

জামাল হোসেনের ব্যবসায়িক অংশীদার মো. জিহাদ প্রথম আলোকে বলেন, রাতে তিনি জামাল হোসেনের সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলছিলেন। এ সময় কয়েকজন তরুণ জামাল হোসেনের কাছে এসে তাঁর পরিচয় জানতে চান। একপর্যায়ে গণজাগরণ মঞ্চের ব্যানারে যুদ্ধাপরাধের বিচার দাবিতে আয়োজিত একটি মানববন্ধনের ছবি দেখিয়ে সেখানে জামাল হোসেনের থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হন।

মো. জিহাদ আরও বলেন, জামাল হোসেন ওই তরুণদের পরিচয় জানতে চাইলে ইয়াছিন আরাফাত নামের তাঁদের একজন নিজেকে জাতীয় নাগরিক কমিটির লোক দাবি করেন। এরপর জামাল হোসেনের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাদের কারণে আমাদের নেতাদের ফাঁসি হয়েছে।’ জামাল হোসেন তখনকার পরিপ্রেক্ষিতে মানববন্ধনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বোঝানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে আরও কিছু তরুণ সেখানে জড়ো হয়ে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

জামাল হোসেনকে অবরুদ্ধ করে রাখার বিষয়ে জানতে চেয়ে আজ বুধবার দুপুরে ইয়াছিন আরাফাত নামের ওই তরুণকে ফোন করা হয়। তখন তিনি বলেন, ‘ভাই এটা সেন্ট্রাল বিষয়। আমি থানায় আছি। এখানে সবাই আছেন।’ এরপর তিনি ফোন কেটে দেন।

জানতে চাইলে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির ইসহাক খোন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংবাদিক জামাল হোসেনকে কারা অবরুদ্ধ করেছেন কিংবা পুলিশে দিয়েছেন, তা তিনি জানেন না। যাঁদের নাম শুনছেন, তাঁদের তিনি চেনেন না। এ ছাড়া সাংগঠনিকভাবে জামায়াতের এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত নেই।’

সুধারাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, জামাল হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় সুনির্দিষ্টভাবে কোনো মামলা নেই। গতকাল মধ্যরাতে লোকজন তাঁকে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ ছাড়া তখন তাঁকে পুলিশ উদ্ধার না করলে অপ্রীতিকর ঘটনারও আশঙ্কা ছিল। ওসি আরও বলেন, যাঁরা তাঁকে আটক করেছেন, তাঁরা আজ বুধবার সকাল পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। বিষয়টি নিয়ে জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ