সাতক্ষীরায় গাছের সঙ্গে ধাক্কায় যাত্রীবাহী বাস দুমড়েমুচড়ে যাওয়ায় চালকের এক সহকারী নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন যাত্রী। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে সাতক্ষীরা শহরের সার্কিট হাউস মোড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর সাতক্ষীরা-যশোর মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

নিহত ব্যক্তির নাম শাহাদাত হোসেন (২২)। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলামের ছেলে। এই দুর্ঘটনায় আহত বাসযাত্রীদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তপন কুমার ঘোষ নামের বাসটির এক যাত্রী বলেন, সাতক্ষীরাগামী দিগন্ত পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে তিনি গন্তব্যে যাচ্ছিলেন। চালকের ঘুম চলে আসায় নাভারণ এলাকা ছাড়ার পর বারবার তিনি ব্রেক কষছিলেন। আজ ভোর সাড়ে চারটার দিকে সার্কিট হাউস মোড়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি আশা সমিতির পাশের একটি গাছের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে ওই গাছটির কিছু অংশ বাসের ভেতর ঢুকে বাসটি দুমড়েমুচড়ে যায়। ওই সময় বাসটিতে ৪০ থেকে ৪৫ জন যাত্রী ছিলেন।

দুর্ঘটনার পরপর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় বাসটির যাত্রীদের উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের সদস্যরা। পরে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে নেওয়া হয়। এ সময় সাতক্ষীরা-খুলনা মহাসড়কের যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি সরিয়ে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। এদিকে গাছ কেটে যাত্রীদের বের করার সময় নায়েব আলী নামের সাতক্ষীরা পুলিশ লাইনসের এক কনস্টেবল আহত হন।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আশরাফুল হক জানান, ওই দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে চায়না খাতুন ও আলমগীর নামের দুই ব্যক্তির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁদের সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শামিনুল হক জানান, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস দল দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ভর্তি করেছে। পরে চালকের সহকারী শাহাদাতকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকায় নেওয়ার পথে আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ র ঘটন আহত ব

এছাড়াও পড়ুন:

ছোট রান্নাঘর সাজানোর কৌশল

আজকালকার শহুরে জীবন মানে ছোট বাড়ি, ছোট রান্নাঘর। ছোট রান্নাঘরে কাজ করতে গেলে প্রায়ই মনে হয় রান্নার জন্য পর্যাপ্ত জায়গা নেই। এ সংকটে আপনি খুঁজে পেতে পারেন এক স্মার্ট সমাধান এবং সৃজনশীলতা। কিছু সহজ ও কার্যকর কৌশল আপনার ছোট রান্নাঘরকে পরিপাটি রাখতে সাহায্য করবে। 
দেয়ালকে বানান স্টোরেজ স্পেস 
রান্নাঘরের এক কোণে যদি স্টোরেজ বক্স বা ক্যাবিনেট বসানোর সুযোগ না থাকে, তবে দেয়াল হতে পারে আপনার সমাধান। ম্যাগনেটিক স্ট্রিপ ব্যবহার করে রাখুন ছুরি, কাঁটা চামচ, স্ক্যাবার। এভাবে শুধু জায়গা বাঁচবে না, খাবার তৈরির প্রস্তুতিও হবে আরও সহজ। দেয়ালটি যদি খালি পড়ে থাকে, তাহলে কিছু হুক বা শেলফ বসিয়ে রান্নার সরঞ্জাম, প্লেট বা কাপ সাজিয়ে রাখতে পারেন। যদি আপনার রান্নাঘরের দেয়ালে কাঠ বা মেটাল সুরক্ষা থাকে, তাহলে রান্নাঘরের সজ্জার জন্য শেলফ এবং ছোট বক্সও ব্যবহার করতে পারেন। এতে পুরো কিচেনের ধারণা আরও সৃজনশীল দেখাবে।
মাল্টি-ফাংশনাল ফার্নিচার বেছে নিন
যে কোনো ছোট রান্নাঘরকে কার্যকর এবং ফাংশনাল করা যায় মাল্টি-ফাংশনাল ফার্নিচার দিয়ে। যেমন এক টেবিল যেখানে ড্রয়ার বা সিটের নিচে থাকবে ছোট্ট স্টোরেজ। এতে শুধু রান্নার সময় প্রয়োজনীয় জিনিস পেতে সুবিধা হবে না, পাশাপাশি আপনার ক্যাবিনেটের জায়গাও বাঁচবে। এ ছাড়া ফোল্ডেবল বা অর্গানাইজেবল ফার্নিচারও উপকারী। যেমন ফোল্ডিং চেয়ার বা টেবিল, যা আপনি পরবর্তী সময়ে দরকার অনুযায়ী খুলে ব্যবহার করতে পারেন।
তাছাড়া টেবিলের নিচে ক্যাবিনেট বা টোকেন স্টোরেজ রাখলে রান্নাঘরের ছোট জায়গায় আপনি আরও বেশি আয়োজন করতে পারবেন।
কনটেইনারের জাদু 
পুরোনো শাড়ি, প্লাস্টিকের কনটেইনার বা অন্য ধরনের বাক্সে ব্যবহারিক কিছু জিনিস রাখা সম্ভব। ছোট রান্নাঘরে সবকিছু গুছিয়ে রাখতে বেশ খানিকটা সাহায্য করবে কনটেইনার বা বাক্সগুলো। ট্রান্সপারেন্ট কনটেইনার ব্যবহারের সুবিধা হলো, এটি দিয়ে আপনি সহজে বুঝতে পারবেন কোনো মসলা বা রান্নার উপকরণ কোথায় রাখা আছে। এ ছাড়া প্রতিরোধক ব্যাগ বা ভ্যাকুয়াম সিলিং ব্যবহার করলে খাবার দীর্ঘদিন সতেজ থাকে এবং রান্নাঘরের অপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও কমে যায়।
ওপেন শেলফিং এবং ডিসপ্লে
গোছানো রান্নাঘরেও কিছুটা স্টাইল থাকা প্রয়োজন। রান্নাঘরের ওপেন শেলফে আপনার দৈনন্দিন ব্যবহারের আইটেমগুলো রাখলে শুধু তা দেখতে সুন্দরই হবে না, অল্প জায়গায় প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর যথেষ্ট অ্যাক্সেস পাবেন।
গ্লাস, প্লেট, বাটি, মসলা বা বেকিং আইটেমগুলো সজ্জিত করতে ওপেন শেলফের ব্যবস্থা খুব উপকারী। পাশাপাশি, ওপেন শেলফকে ব্যবহার করে আপনি আপনার রান্নাঘরের ব্যক্তিগত টাচও যোগ করতে পারেন।
ওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গল বজায় রাখুন
রান্নাঘরের তিনটি মূল জায়গা কুকিং, ওয়াশিং এবং স্টোরেজ। এ তিনটি যদি একসঙ্গে ঠিকভাবে বসানো যায়, তবে রান্না করা অনেক সহজ হয়ে যাবে। এ ‘ওয়ার্ক ট্রায়াঙ্গল’ কনসেপ্ট অনুসরণ করলে রান্নার জায়গা ও ওয়াশিং অ্যান্ড স্টোরেজের জায়গায় হাঁটার সময় কম হবে এবং সময়ও বাঁচবে।
তাছাড়া যদি রান্নাঘরে স্পেস সীমিত থাকে, তবে কাউন্টারটপ স্পেস ব্যবহার করে এসব কাজের স্থল আরও কার্যকর করতে হবে।
প্রাকৃতিক আলো এবং আয়না ব্যবহার
ছোট রান্নাঘরের জন্য প্রাকৃতিক আলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জানালা দিয়ে আলো প্রবাহিত হোক, এমন ব্যবস্থা করুন। যদি জানালা না থাকে, তবে রান্নাঘরের চারপাশে হালকা রং ও রিফ্লেক্টিভ সারফেস যেমন আয়না বা শাইনিং টাইলস ব্যবহার করুন। এভাবে ছোট জায়গাটি বড় এবং উজ্জ্বল দেখাবে। ছোট রান্নাঘর আরও বেশি পরিপাটি দেখাতে আধুনিক ফ্লোরিং বা লাইটিং ব্যবহার করতে পারেন। রান্নাঘরের আয়না ব্যবহার করার মাধ্যমে জায়গাটাকে দুই গুণ বড় মনে হবে। রান্না শুধু খাবারের ব্যাপার নয়, এটি একটি অনুভূতি, একটি অভিজ্ঞতা। তাই আপনার রান্নাঘরকে যতটা সম্ভব কার্যকর, আনন্দদায়ক এবং স্টাইলিশ করে গড়ে তুলুন। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ