রাজনীতি ছাড়ার কারণ জানালেন অভিনেত্রী পায়েল
Published: 20th, February 2025 GMT
অভিনয়ের পাশাপাশি একটা সময় রাজনীতিতে সক্রিয় হন পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পায়েল সরকার। বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব আসনে নির্বাচন করেছেন তিনি। তবে খুব বেশিদিন রাজনীতির মাঠে কাজ করেননি। হঠাৎ রাজনীতি থেকে সরে আসেন পায়েল।
২০ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাজনীতি ছাড়ার বিষয়ে কথা বলেছেন পায়েল। তিনি জানান, রাজনীতি বিষয়টা একেবারে আলাদা পেশার মতো। তাই অভিনয় ছেড়ে রাজনীতি করা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।
পায়েল বলেন, ‘তখন তো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার সুযোগ পাইনি। আর রাজনীতির মাঠে নেমে মানুষের জন্য কাজ করতে হলে, যে দলের হয়ে কাজ করছি, তাদের একটা সমর্থন থাকা উচিত। এই সমর্থনটা আমি তখন সেভাবে পাইনি। তা ছাড়া রাজনীতি একটা আলাদা পেশার মতো। আর অভিনয় ছেড়ে রাজনীতি করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।’
টালিউড সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে রাজনীতি প্রবেশ করেছে অনেক আগেই। সেটাকে হতাশাজনক বলেন মনে করেন না পায়েল। তাঁর কথায়, ‘রাজনীতির প্রবেশ নিয়ে আমার কোনও আপত্তি নেই। যে পরিবর্তনই হোক না কেন, সেটা যেন ভাল হয়। সেটা যেন কাজের ক্ষেত্রে কোনও বাধা না সৃষ্টি করে।’
ইন্ডাস্ট্রিতে প্রায় ২০ বছর কাটিয়ে ফেছেলেন। একটা সময় ছিল যখন বাংলা ছবির নায়িকারা পর পর ছবিতে কাজ করতেন। নিজের কাজ নিয়ে পায়েল বলেন, “২০০৭ সালে ‘আই লভ ইউ’ ছবিতে প্রথম মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করি। তারপর থেকে আমি কাজ করে চলেছি। শিল্পীর কেরিয়ারে চড়াই-উতরাই থাকতেই পারে। আমি কিন্তু কখনও বিরতি নিইনি। এখনো কাজ করে যাচ্ছি। বর্তমানে ‘বাবু সোনা’ সিনেমা কাজ শেষ। কিছুদিন পর এটা মুক্তি পাবে।”
২০২১ সালে ভারতীয় জনতা পার্টিতে (বিজেপি) যোগ দিয়েছিলেন পায়েল। সে বছরেই পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে বেহালা পূর্ব আসনে লড়ছেন তিনি। নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরপরই রাজনীতি থেকে দূরে রাখছেন নিজেকে। এখন অভিনয়ে নিয়েই ব্যস্ত তিনি। সূত্র: আনন্দবাজার।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প য় ল সরক র র জন ত র ক জ কর
এছাড়াও পড়ুন:
হোটেল-রেস্তোরাঁয় শ্রমিকের ন্যূনতম মজুরি ১৩০৫০ টাকা
হোটেল ও রেস্তোরাঁ খাতে শ্রমিক-কর্মচারীদের মাসিক নিম্নতম মজুরি হারের খসড়া গেজেট আকারে প্রকাশ করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। এতে শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য ১৩ হাজার ৫০ টাকা ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সুপারিশ করা হয়েছে। প্রতিবছর শ্রমিক-কর্মচারীদের মূল মজুরি ৫ শতাংশ হারে বাড়ানোরও সুপারিশ করেছে নিম্নতম মজুরি বোর্ড। গত ২৯ জানুয়ারি এ গেজেট প্রকাশ করে এ বিষয়ে অংশীজনের কোনো মতামত, পরামর্শ বা আপত্তি থাকলে তা জানাতে বলা হয়।
গত বছরের ১৫ জানুয়ারি নিম্নতম মজুরি বোর্ডে হোটেল ও রেস্তোরাঁ শিল্প খাতে মালিক ও শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী সদস্য নিয়োগ করা হয়। পরে এ খাতের শ্রমিক-কর্মচারীদের নিম্নতম মজুরি নির্ধারণের কার্যক্রম গ্রহণের জন্য বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানানো হয়। এরপর নিম্নতম মজুরি হারের সুপারিশ প্রণয়নের জন্য বোর্ডের একাধিক সভা অনুষ্ঠিত হয়। বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোড ও চকবাজার এলাকায় হোটেল-রেস্তোরাঁ শিল্পের তিনটি এবং টাঙ্গাইল সদরের চারটি প্রতিষ্ঠান ও কারখানায় গিয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। সেখানে সংশ্লিষ্ট মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন তারা।
বোর্ডের সভায় সংশ্লিষ্ট শিল্পের মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধি এবং শ্রমিক সংগঠনের পক্ষ থেকে দেওয়া স্মারকলিপি, মজুরি প্রস্তাব ও পরিদর্শন প্রতিবেদনসহ শ্রম আইন অনুসারে শ্রমিকদের জীবনযাপন ব্যয়, জীবনযাপনের মান, উৎপাদন খরচ, উৎপাদনশীলতা, উৎপাদিত দ্রব্যের দাম, মূল্যস্ফীতি, কাজের ধরন, ঝুঁকি ও মান, ব্যবসায়িক সামর্থ্য, দেশের ও সংশ্লিষ্ট এলাকার আর্থসামাজিক অবস্থা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিষয় পর্যালোচনা করা হয়। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে সরকারের কাছে নিম্নতম মজুরির হার নির্ধারণ সম্পর্কিত সুপারিশ করা হয়েছে।
হোটেলের নিম্নতম মজুরি: নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশে বলা হয়, এক তারকা হোটেলগুলোর ডিসওয়াশ বয়, ডোরম্যানসহ গ্রেড-৩ এর শ্রমিকরা সর্বনিম্ন মজুরি পাবেন প্রতি মাসে ১৩ হাজার ৫০ টাকা। এর মধ্যে মূল মজুরি ৭ হাজার ৫শ টাকা, বাড়ি ভাড়া ৩ হাজার ৭৫০ টাকা, চিকিৎসা ভাতা ১ হাজার টাকা ও যাতায়াত ভাতা ৮০০ টাকা। দুই তারকা হোটেলগুলোর গ্রেড-৩ এ থাকা জুনিয়র ওয়েটারসহ শ্রমিকরা প্রতি মাসে ন্যূনতম ১৩ হাজার ৬৫০ টাকা ন্যূনতম মজুরি পাবেন। এই গ্রেডে থাকা তিন তারকা হোটেলের শ্রমিকরা পাবেন মাসিক ন্যূনতম ১৪ হাজার ৭শ টাকা। একই গ্রেডের মাসিক সর্বনিম্ন মজুরি চার তারকার ক্ষেত্রে ১৫ হাজার ৭৫০ টাকা এবং পাঁচ তারকার ক্ষেত্রে ১৬ হাজার ৮শ টাকা।
এতে গ্রেড-২-এর শ্রমিকদের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন মাসিক মজুরির যে সুপারিশ করা হয়েছে তা হচ্ছে এক তারকা হোটেলে ১৮ হাজার ৪৫০ টাকা, দুই তারকা হোটেলে ২০ হাজার ২৫০ টাকা, তিন তারকা হোটেলে ২২ হাজার ৫০ টাকা, চার তারকা হোটেলে ২৩ হাজার ৮৫০ টাকা ও পাঁচ তারকা হোটেলে ২৫ হাজার ৬৫০ টাকা।
নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশে বলা হয়, শ্রমিকদের গ্রেড-১ এর ক্ষেত্রে নিম্নতম মাসিক মজুরি হবে এক তারকা হোটেলের ক্ষেত্রে ৩১ হাজার ৮শ টাকা, দুই তারকা হোটেলে ৩৩ হাজার ৩শ টাকা, তিন তারকা হোটেলে ৩৪ হাজার ৮শ টাকা, চার তারকা হোটেলে ৩৭ হাজার ৮শ টাকা এবং পাঁচ তারকা হোটেলে ৪০ হাজার ৮শ টাকা।
হোটেলগুলোর কর্মচারীদের জন্য নিম্নতম মজুরি কাঠামোর সুপারিশে বলা হয়, গ্রেড-৩ এর কর্মচারীরা সর্বনিম্ন মাসিক মজুরি পাবেন এক তারকা হোটেলে ১৩ হাজার ৫০ টাকা, দুই তারকা হোটেলে ১৩ হাজার ৬৫০ টাকা, তিন তারকা হোটেলে ১৪ হাজার ৭শ টাকা, চার তারকা হোটেলে ১৫ হাজার ৭৫০ টাকা এবং পাঁচ তারকা হোটেলে ১৬ হাজার ৬৫০ টাকা। গ্রেড-২ এর কর্মচারীরা পাবেন এক তারকায় ১৮ হাজার
৪৫০ টাকা, দুই তারকায় ২০ হাজার ২৫০ টাকা, তিন তারকায় ২২ হাজার ৫০ টাকা, চার তারকায় ২৩ হাজার ৮৫০ টাকা এবং পাঁচ তারকায় ২৫ হাজার ৬৫০ টাকা। গ্রেড-১ এর কর্মচারীরা পাবেন এক তারকায় ২৭ হাজার ৩শ, দুই তারকায় ২৯ হাজার ১শ, তিন তারকায় ৩০ হাজার ৯শ, চার তারকায় ৩২ হাজার ৭শ এবং পাঁচ তারকায় ৩৪ হাজার ৫শ টাকা।
রেস্তোরাঁয় নিম্নতম মজুরি: নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সুপারিশে বলা হয়েছে, গ্রেড-৪ এর শ্রমিকদের ন্যূনতম মাসিক মজুরি হবে ডি শ্রেণির রেস্তোরাঁয় ১৩ হাজার ৫০ টাকা, সি শ্রেণির রেস্তোরাঁয় ১৩ হাজার ৬৫০ টাকা, বি শ্রেণির রেস্তোরাঁয় ১৪ হাজার ৭শ টাকা এবং এ শ্রেণির রেস্তোরাঁয় ১৫ হাজার ৭৫০ টাকা। গ্রেড-৩ এর ক্ষেত্রে ডি, সি, বি এবং এ শ্রেণিতে এটি নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে ১৫ হাজার ৭৫০ টাকা, ১৩ হাজার ৬৫০ টাকা, ১৪ হাজার ৭শ এবং ১৬ হাজার ৬৫০ টাকা।
গ্রেড-২ এর ক্ষেত্রে এটি যথাক্রমে ১৬ হাজার ৬৫০, ১৮ হাজার ৪৫০, ২০ হাজার ২৫০ ও ২২ হাজার ৫০ টাকা। গ্রেড-১ এর এটি যথাক্রমে ৩০ হাজার ৩শ, ৩১ হাজার ৮শ, ৩৩ হাজার ৩শ ও ৩৪ হাজার ৮শ টাকা।
রেস্তোরাঁয় কর্মচারীদের জন্য যে সুপারিশ করা হয়েছে তাতেও সর্বনিম্ন মজুরি ধরা হয়েছে ১৩ হাজার ৫০ টাকা। সবচেয়ে বেশি পাবেন এ শ্রেণির রেস্তোরাঁয় গ্রেড-১ এর কর্মচারীরা। তাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মাসিক মজুরি ধরা হয়েছে ২২ হাজার ৫০ টাকা। এ ছাড়া সব ধরনের হোটেল-রেস্তোরাঁয় শিক্ষানবিশ শ্রমিকরা মাসে ৯ হাজার ৩শ টাকা পাবেন।