এক লাখ কোটি টাকার যাকাতে ১৩% মানুষের ক্ষুধা নিবারণ সম্ভব: সিজেডএম
Published: 20th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
দেশে এক লাখ কোটি টাকার যাকাত বের করা গেলে দেশের ১৩% মানুষের ক্ষুধা নিবারণ সম্ভব বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টে (সিজেডএম)। সংস্থাটি বলছে, যাকাত হচ্ছে একটি আন্দোলন, যা দিয়ে দেশ থেকে পুরোপুরি দারিদ্র দূরীকরণ সম্ভব, আর এটি করতে গেলে দরকার সিজেডএম এর মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। প্রাতিষ্ঠানিক যাকাত ব্যবস্থাপনার এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ এর স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে সিজেডএম।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সিজেটএম নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলে। প্রতিবছরের মতো এবারও দুই দিন ব্যাপি যাকাত ফেয়ার আয়োজন করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। আগামী ২২-২৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আলোকি কনভেনশন সেন্টার এই যাকাত মেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা উদ্বোধন করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন। যাকাত ফেয়ার সকাল ০৯ টা থেকে সন্ধ্যা ৬.
সংবাদ সম্মেলনে যাকাত ফেয়ার অর্গানাইজিং কমিটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, আমরা মনে করি, ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর দেশের জনগণের মধ্যে একটি বৈষম্যহীন, দারিদ্র মুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণের যে স্বপ্ন তৈরি হয়েছে তা রূপায়নে যাকাত একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, সঠিকভাবে যাকাত প্রদান মানে শুধু অভাবীদের সহায়তা করা নয়, বরং তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলা, যাতে তারা ভবিষ্যতে দাতা হতে পারে। বাংলাদেশে বর্তমানে এক লক্ষ কোটি টাকার যাকাত হয়। UNDP-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছেন। জাতিসংঘের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশে ১ কোটি ৮৭ লাখ মানুষ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে। দেশে প্রায় ১৩% মানুষ ক্ষুধা নিয়ে ঘুমাতে যান।
তিনি বলেন, যদি এক লক্ষ কোটি টাকা যাকাত সঠিকভাবে ব্যবহৃত হতো তাহলে বাংলাদেশে কেউ অভুক্ত থাকতো না। ১ লক্ষ কোটি টাকা যদি ১ কোটি ৮৭ লাখ তীব্র খাদ্য নিরাপত্তাহীন মানুষদের মাঝে বণ্টন করা হয় তাহলে জনপ্রতি ৫৩,৪৭৫ টাকা করে পড়ে যা একটি মানুষের সারা বছরব্যাপী খাদ্য যোগানের জন্য যথেষ্ট। বাংলাদেশে সিজেডএম এর মতো প্রাতিষ্ঠানিক যাকাত ব্যবস্থাপনায় ১০০০ কোটি টাকার যাকাত বিতরণ করলে ৫৩ লক্ষ মানুষের মৌলিক চাহিদা – খাদ্য, বস্ত্র, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা নিশ্চিত করা সম্ভব।
বক্তারা বলেন, যাকাত হচ্ছে একটি আন্দোলন, যা দিয়ে দেশ থেকে পুরোপুরি দারিদ্র দূরীকরণ সম্ভব, আর এটি করতে গেলে দরকার সিজেডএম এর মতো আরও অনেক প্রতিষ্ঠান। প্রাতিষ্ঠানিক যাকাত ব্যবস্থাপনার এই আন্দোলন ছড়িয়ে দিয়ে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ এর স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছে সিজেডএম।
বক্তারা আরও জানান, এবারের প্রতিপাদ্য “নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানে যাকাত” ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবের পর দেশের জনগণের মধ্যে একটি বৈষম্যহীন, দারিদ্রদ্র্য মুক্ত ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের যে স্বপ্নদ্র তৈরি হয়েছে, তা বাস্তবায়নে যাকাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। যাকাত দান নয়, এটি ধনীদের সম্পদে দরিদ্রের অধিকার যাকাত একটি সামাজিক আন্দোলন, বৈষম্য দূর করে একটি মর্যাদাপূর্ণ সমাজ গঠন করতে সাহায্য করে। এই আয়োজনে, আমরা সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি- ‘সমৃদ্ধ আগামীর জন্য সচেতনভাবে যাকাত দিন- দারিদ্রদ্র্য হ্রাস, শিক্ষা, স্বাস্থ্য কর্মসংস্থানে ভূমিকা রাখুন।
এবারের যাকাত ফেয়ারে স্পন্সর হিসেবে রয়েছে রহিমআফরোজ, খাদিম সিরামিকস, কোহিনুর কেমিক্যাল, রহিম চিল, সাউথ ব্রিজ, হজ্ব ফাইনান্স কোম্পানি, আইডিএলসি ইসলামিক, এসএমসিসহ দেশের সনামধন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ফেয়ারে বিভিন্ন আর্থিক ও যাকাত প্রতিষ্ঠানের স্টলসহ যাকাত কনসালটেশন ডেস্ক ও বিভিন্ন ইসলামিক বইয়ের স্টল থাকবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিষদের কনভেনার এবং রহিমআফরোজ গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মুনওয়ার মিসবাহ মঈন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া ও সিজেডএম-এর হেড অফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স কর্নেল অব: মুহাম্মদ জাকারিয়া হোসেন।
বিএইচ
উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
গণতন্ত্রবিনাশী শক্তির চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান
গণতন্ত্রবিনাশী শক্তির চক্রান্ত এখনও থেমে নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, একটি শোষণ, বঞ্চনাহীন, মানবিক সাম্যের উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে দেশের মানুষ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু বারবার ফ্যাসিবাদী, স্বৈরাচারী ও অবৈধ শক্তি আমাদের সে লক্ষ্য পূরণ করতে দেয়নি। দেশি-বিদেশি চক্রান্তের ফলে আমাদের গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি হোঁচট খেয়েছে এবং স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়েছে।
মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার এক বাণীতে এসব কথা বলেন তারেক রহমান।
সবাইকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে আমাদের জাতীয় জীবনে নবীন সূর্যোদয়ের মধ্য দিয়ে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। হাজার বছরের সংগ্রামমুখর এ জাতির সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
তারেক রহমান বলেন, জিয়াউর রহমানকে চক্রান্তমূলকভাবে হত্যার পর খালেদা জিয়ার সফল ও সার্থক নেতৃত্বে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ধারা সূচিত হলেও, গণতন্ত্রের শত্রুদের কারণে স্থায়ী ও মজবুত গণতান্ত্রিক কাঠামো তৈরি সম্ভব হয়নি। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার হীন লক্ষ্যে পলাতক অবৈধ সরকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলেছে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে আজও তাই দেশের মানুষ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর এখন সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের সব দেশপ্রেমিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তি এবং জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলা নিশ্চিত করা এবং স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সংহত করা। এটিই হচ্ছে স্বাধীনতার মূল চেতনা। জাতির সম্মিলিত ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা বহুমত ও পথের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সমুন্নত রাখতে হবে।