ইউরোপীয় সাউদার্ন অবজারভেটরির ভেরি লার্জ টেলিস্কোপের সংগ্রহ করা তথ্য কাজে লাগিয়ে প্রথমবারের মতো সৌরজগতের বাইরে থাকা টাইলোস বা ওয়াসপ-১২১বি নামের একটি গ্রহের বায়ুমণ্ডলের ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, টাইলোস একটি বড় গ্যাসীয় গ্রহ, যা নক্ষত্রের বেশ কাছাকাছি প্রদক্ষিণ করছে। উত্তপ্ত গ্রহটির বায়ুমণ্ডল প্রধানত হাইড্রোজেন ও হিলিয়াম দিয়ে তৈরি হয়েছে। আমাদের সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডল এভাবেই বিকশিত হয়েছে। আর তাই গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের ত্রিমাত্রিক কাঠামো নতুন তথ্য জানার সুযোগ করে দিয়েছে।

টাইলোস গ্রহের বায়ুমণ্ডলে তিনটি স্তর রয়েছে। অবিশ্বাস্য তাপের কারণে গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের একেবারে নিচের স্তরে গ্যাসীয় আকারে লোহা ও মাঝের স্তরে সোডিয়াম রয়েছে। শুধু তা–ই নয়, গ্রহটির চারপাশে সোডিয়ামের একটি স্রোত বৃত্তাকারভাবে প্রতি ঘণ্টায় প্রায় ৭০ হাজার কিলোমিটার গতিতে প্রবাহিত হচ্ছে। আর তাই আমাদের সৌরজগতের যেকোনো গ্রহের তুলনায় টাইলোস গ্রহে বাতাসের গতিবেগ সবচেয়ে বেশি।

ইউরোপীয় সাউদার্ন অবজারভেটরির বিজ্ঞানী জুলিয়া ভিক্টোরিয়া সিডেল বলেন, ‘এমন কাঠামো আগে কখনো পর্যবেক্ষণ করা হয়নি। অন্য গ্রহে বায়ুমণ্ডল কীভাবে আচরণ করে, তার সম্পর্কে নতুন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলে গ্যাসীয় আকারে টাইটানিয়ামের উপস্থিতিও পাওয়া গেছে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে লোহা বা টাইটানিয়াম পাওয়া যায় না। আমাদের গ্রহের নিম্ন তাপমাত্রার কারণে এসব ধাতু এখানে কঠিন আকারে অবস্থান করছে। যদিও পৃথিবীর ওপরের বায়ুমণ্ডলে একটি সোডিয়াম স্তর রয়েছে।’

টাইলোস গ্রহের ভর মোটামুটি বৃহস্পতির সমান। এটি পৃথিবী থেকে প্রায় ৯০০ আলোকবর্ষ দূরে পপিস নক্ষত্রমণ্ডলের কাছে অবস্থিত। গ্রহটির এক পাশের তাপমাত্রা প্রায় ৪ হাজার ৯০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। অন্য পাশের তাপমাত্রা প্রায় ২ হাজার ২০০ ডিগ্রি ফারেনহাইট। গ্রহটি পৃথিবীর হিসেবে ১ দশমিক ৩ দিনে নিজ কক্ষপথ প্রদক্ষিণ করে থাকে। আর তাই গ্রহটির বায়ুমণ্ডলের গঠন নিয়ে আরও জানতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা।

সূত্র: এনডিটিভি

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনয়ন পেলেন ইমরান খান

পাকিস্তানের কারাবন্দী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র প্রচারে তার প্রচেষ্টার জন্য নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে। 

২০২৫ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য ইমরান খানের নাম প্রস্তাব করেছে পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স (পিডব্লিউএ) এবং নরওয়ে ভিত্তিক সংগঠন পার্টিয়েট সেন্ট্রাম। খবর আনাদোলু এজেন্সির।

শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে পার্টিয়েট সেন্ট্রাম বলেছে, “আমরা আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে, মনোনয়নের অধিকারী এমন একজনের সঙ্গে (পাকিস্তান ওয়ার্ল্ড অ্যালায়েন্স) জোটবদ্ধ হয়ে, আমরা পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে তার কাজের জন্য নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করেছি।” 

আরো পড়ুন:

পাকিস্তানকে বিধ্বস্ত করে সিরিজ জিতল নিউ জিল্যান্ড

পাকিস্তানে ঈদ উপলক্ষে ট্রেনের ভাড়া কমল ২০ শতাংশ

বিবৃতিতে গণতন্ত্রের সংগ্রামে পিটিআই প্রধান ইমরান খানের নেতৃত্ব, মানবাধিকারের প্রতি তার অবস্থান ও পাকিস্তানিদের সমস্যা সমাধানে তার নিষ্ঠার প্রশংসা করা হয়েছে। 

এর আগে, ২০১৯ সালে দক্ষিণ এশিয়ায়, বিশেষ করে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টার জন্য ইমরান খানকে নোবেল শান্তি পুরষ্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছিল। সেবার শান্তিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য ইমরান খানের নাম মনোনীত করেছিল মার্কিন পত্রিকা ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর।

প্রতি বছর, নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি শত শত মনোনীতদের নাম পায়, যার পরে তারা দীর্ঘ আট মাসের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিজয়ী নির্বাচন করে।

 

পাকিস্তানের প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে কারাগারে রয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে, ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির সঙ্গে সম্পর্কিত একটি মামলায় তাকে ১৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এটি চতুর্থ বড় মামলা যেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় উপহার বিক্রি, রাষ্ট্রীয় গোপনীয়তা ফাঁস এবং বেআইনি বিবাহ সম্পর্কিত তিনটি দোষ উচ্চ আদালত কর্তৃক বাতিল বা স্থগিত হয়েছে।

২০২২ সালের এপ্রিলে পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটের পর ইমরান খান ক্ষমতা হারান। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেন, এগুলোকে রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ