একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী এনডিসি। 

আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ডিএমপির পক্ষ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও ট্রাফিক পরিকল্পনা নিয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে এ তথ্য জানান ডিএমপি কমিশনার। এর আগে তিনি কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় ডিএমপির বিভিন্ন নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা পরিদর্শন করেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা আজ রাত ১২ টা ০১ মিনিট থেকে উদযাপিত হতে যাচ্ছে। প্রথমে ভিভিআইপি, ভিআইপি এবং তারপরে জনসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। আনুমানিক রাত ১২টা ৪০ মিনিটে জনসাধারণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পলাশী গেট উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

আরো পড়ুন:

হারুন ও তার ভাইয়ের ১৩০ বিঘা জমি জব্দ, ২১ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ 

পূর্বাচলে অটোরিকশায় রেডিমিক্স ট্রাকের ধাক্কা, নিহত ২

তিনি সবাইকে শৃঙ্খলা মেনে শ্রদ্ধা নিবেদন করার অনুরোধ জানান এবং নিরাপত্তার জন্য যাত্রীদের নিজেদের মূল্যবান জিনিসপত্রের প্রতি খেয়াল রাখার পরামর্শ দেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে সাধারণ মানুষের সমাগম অনেক বেশি হয়, ভিড়ের মধ্যে দুর্ঘটনা এড়াতে সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।

তিনি আরো বলেন, এবার তিন/চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ বিকেল ৫টা থেকে আগামীকাল দুপুর ৩টা পর্যন্ত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্স নিয়োজিত থাকবে। একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন উপলক্ষে আমরা কোনো নিরাপত্তার আশঙ্কা দেখছি না। ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে মেটাল ডিটেক্টর, আর্চওয়ে স্থাপন ও দেহ তল্লাশি। কেউ যেন দাহ্য পদার্থ, বিস্ফোরক দ্রব্য বা এই জাতীয় কোনো কিছু নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকবে।

শহীদ দিবস উপলক্ষে ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো.

 সরওয়ার জানান, ব্যাপক লোক সমাগম হবে বিধায় শহীদ মিনার কেন্দ্রিক রাস্তা আটকে দেওয়া হবে। সাতটি পয়েন্টে রোড ব্লকার স্থাপন করা হবে: শাহবাগ ক্রসিং, নীলক্ষেত ক্রসিং, শহিদুল্লাহ হল ক্রসিং, হাইকোর্ট ক্রসিং, চাঁনখারপুল ক্রসিং, পলাশী ক্রসিং ও বকশীবাজার ক্রসিং।

তিনি আরো জানান, পায়ে চলাচলের রাস্তা হিসেবে পলাশী ক্রসিং থেকে শহীদ মিনারে প্রবেশ করা যাবে এবং শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে রোমানা ক্রসিং-দোয়েল চত্বর হয়ে বের হতে হবে। অন্যান্য পথ বন্ধ থাকবে।

ট্রাফিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সংশ্লিষ্ট রাস্তা আজ রাত ৮টা থেকে বন্ধ করা হবে এবং রাত ৯টায় সব রাস্তায় বন্ধ করে দেওয়া হবে। জনসাধারণকে রাত ১২টা ৪০ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করার জন্য আসার অনুরোধ জানান তিনি। 

প্রেস ব্রিফিংয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পুলিশ কমিশনারগণ, উপ-পুলিশ কমিশনারগণসহ বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/মাকসুদ/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ড এমপ র ব যবস থ উপলক ষ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পহেলা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রায় দেখা মিলেছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাংলা সাহিত্যের অমর কথা সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন, ফকির লালন সাঁই, মুঘল সম্রাট আকবর, গ্রামীণ সাংবাদিকতার পথিকৃৎ কাঙাল হরিনাথসহ অন্তত ৩৮ জন বিখ্যাত মনীষীর। তবে তারা আসল নয়, ডামি। ডামি হলেও তাদের মাধ্যমে দারুণভাবে ফুটেছে বিখ্যাত ব্যক্তিদের চেহারা ও অবয়ব। তাদের দেখে মুগ্ধ নতুন প্রজন্মের দর্শনার্থীরা।

এছাড়াও শোভাযাত্রায় বায়ান্নের ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ ও চব্বিশের গণ অভ্যুত্থানের সচিত্র দেখা গেছে।

সোমবার সকালে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষ্যে এমন বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন।

জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ উপলক্ষ্যে সোমবার সকাল সাগে ৯টায় কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমি থেকে বর্ণাঢ্য আনন্দ শোভাযাত্রা বের করে উপজেলা প্রশাসন। আনন্দ শোভাযাত্রাটি হলবাজার, গণমোড়, থানামোড়, গোলচত্বর, উপজেলা সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে স্থানীয় আবুল হোসেন তরুণ অডিটোরিয়ামে চত্বরে শেষ হয়। পরে সেখানে দই চিড়া খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কুমারখালী শিল্পকলা একাডেমীর ১২৫ জন সংগীত ও নৃত্যশিল্পী নেন এবং শোভাযাত্রায় কয়েক হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে কুমারখালী সরকারি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রুহিনা ইসলাম প্রজ্ঞা বলেন, বৈশাখী শোভাযাত্রায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, পিয়ারী সুন্দরী, কাজী মিয়াজান, মীর মশাররফ হোসেনসহ অসংখ্য মনীষীদের দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে।

কলেজ ছাত্র শুভ মোল্লা বলেন, প্রত্যাশার চেয়েও বেশি জাঁকজমক হয়েছে আয়োজন। বন্ধুরা মিলে খুবই আনন্দ করছি।

সুবর্ণা খাতুন নামের এক শিশু জানায়, পহেলা বৈশাখ অনুষ্ঠানে নৃত্য করেছি। দই চিড়া খেয়েছি। খুবই ভালো লাগছে।

প্রায় ১৮ ধরে বৈশাখের শোভাযাত্রায় মীর মশাররফ হোসেনের ডামি চরিত্রে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহমুদুর রহমান মানু। তিনি বলেন, প্রতি বৈশাখে একই চরিত্রে থাকি। নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। যতদিন বাঁচি, এ চরিত্রেই থাকতে চাই।

আধুনিকতার বাইরে এসে যেন বাংলা সংস্কৃতি ধরে রাখতে পারি। সেজন্য সম্রাট আকবরের ডামি সেজেছিলাম। কথাগুলো বলছিলেন চয়ন শেখ।

পরিচয় জানতেই 'বল বীর, বল উন্নত মম শির! শির নেহারি আমারই নত শির ওই শিখর হিমাদ্রীর!' কবিতার কয়েকটি লাইন বলতে থাকেন পান্টি এলাকার মিলন হোসেন। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ডামি ছিলেন।

নতুন প্রজন্মের কাছে বাঙালির ইতিহাস ঐহিত্য ও সংস্কৃতি তুলে ধরতে এবং বিখ্যাত ব্যক্তিদের পরিচিত করতে রবীন্দ্রনাথ, মশাররফ, কাঙাল, বাঘা যতীনসহ ৩৮টি ডামি চরিত্র তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৭১ এর মুক্তিযোদ্ধা, ২৪ এর গণ অভ্যর্থান, প্যালেস্টাইনের চিত্র দারুণভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বলে জানান ডামি পরিচালক কবি ও নাট্যকার লিটন আব্বাস।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাস বলেন, আনন্দ শোভাযাত্রায় বিখ্যাত ব্যক্তি ও মনীষীদের চরিত্র দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। তা দেখে মুগ্ধ সব শ্রেণি পেশার মানুষ। ডামি ছাড়াও চিড়া দই খাওয়া, সাংস্কৃতিক অনু্ষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণ করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চড়ক মেলায় মেতে উঠেছিল নাটোরের শংকরভাগ 
  • কুমারখালীতে অন্যরকম আনন্দ শোভাযাত্রা
  • নববর্ষেও বাংলাদেশের মানুষ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ: দুলু
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন
  • আনন্দ শোভাযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ-নজরুল-মীর মশাররফ-লালন, মুগ্ধ দর্শনার্থীরা
  • হালখাতা আছে, নেই নিমন্ত্রণ
  • মারমাদের মাহা সাংগ্রাই উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা
  • ‌‘তৌহিদী জনতার’ চিঠিতে বাতিল হলো শেষের কবিতা নাটকের প্রদর্শনী
  • রাষ্ট্র ও সমাজকে পথশিশুদের প্রতি মানবিক হতে হবে
  • চন্দনাইশের ‘হাতপাখা’ গ্রামে ১০ কোটি টাকার ব্যবসা