কুয়েট প্রশাসন ও ছাত্ররাজনীতিকে লাল কার্ড দেখালেন শিক্ষার্থীরা
Published: 20th, February 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) প্রশাসনসহ রাজনৈতিক সব ছাত্রসংগঠনকে লাল কার্ড দেখালেন শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার ক্যাম্পাসের ভাস্কর্য দুর্বার বাংলার পাদদেশে দুপুর ১২টায় বিক্ষোভ সমাবেশ করে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রদল, ছাত্রলীগ, ছাত্রশিবির, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র মৈত্রীসহ সব রাজনৈতিক সংগঠনকে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। একই সঙ্গে তাঁরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ছাত্ররাজনীতির ঠিকানা, এই কুয়েটে হবে না’, ‘নো ছাত্রদল, নো ছাত্রশিবির, নো বৈবিছাআ, অনলি ছাত্র’; ‘রক্ত যখন ঝরছিল, প্রশাসন তখন কই ছিল?, ‘নিরাপদ ক্যাম্পাস চাই’, ‘উই ওয়ান্ট নলেজ, নো পলিটিকাল ডামেজ, ‘শিক্ষার্থীর রক্ত ঝরে, প্রশাসন তামাশা করে’, ‘ছাত্র মেরে করিস পাপ, রাজনীতি অভিশাপ’,’ মনে রেখো প্রত্যেকে জুলাই শেষে কিন্তু আগস্ট আসে’, ‘ছাত্রদের রক্ত দিয়ে তোমাদের ক্ষমতার পিপাসা আর কত মিটবে?’, ‘ছাত্ররাজনীতি রেড কার্ড ‘, ‘বহিষ্কার, বহিষ্কার, জড়িতদের বহিষ্কার’, ‘মাছুদ তুই কুয়েট ছাড়’, ‘বকুল ফুল, বকুল ফুল, ভিসি তুমি করেছ ভুল,’ ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ’, ‘তুমি কে, আমি কে, আবরার, আবরার, ‘আবু সাঈদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’ ,‘দড়ি ধরে মারো টান ভিসি হবে খান খান’ এসব প্ল্যাকার্ডের সঙ্গে লাল কার্ড প্রদর্শন করেন। লাল কার্ড প্রদর্শনের সময় তাঁরা স্লোগান দিতে থাকেন।
লাল কার্ড প্রদর্শন শেষে কয়েক জন শিক্ষার্থী সমাবেশে বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, মঙ্গলবার বহিরাগতরা কুয়েটের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ছয় দফা দাবি দেওয়া হয়েছে। তবে কুয়েট প্রশাসন সেটা মানেনি। এ ঘটনায় কুয়েটের ভিসি, প্রোভিসি এবং ছাত্র কল্যাণ পরিচালককে বর্জন করা হয়েছে। পাশাপাশি কুয়েট ক্যাম্পাসে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে রেড কার্ড প্রদর্শন করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, কুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। এ কারণে তাঁরা নতুন প্রশাসন চান। এ দাবি জানিয়ে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি দেবেন।
সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীরা দুর্বার বাংলার পাদদেশ থেকে একটি মিছিল বের করেন। এটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ শেষে দুর্বার বাংলার পাদদেশে এসে শেষ হয়।
আজ বিকেল তিনটায় ছাত্র কল্যাণ কেন্দ্রে আহত শিক্ষার্থীদের ছবি এবং হামলার ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পরিদর্শন করা হবে বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রদল নেতা আশিক খাঁ হত্যাকাণ্ড: দুই বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে কলেজের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ছাত্রদল নেতা আশিক খাঁ খুনের ঘটনায় দুই বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা বিএনপি। সোমবার জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মীর কামরুল হাসান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দলীয় পদ থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা হলেন– কটিয়াদী উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট আশিকুজ্জামান নজরুল এবং উপজেলার চান্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জজ কোর্টের এপিপি অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম সেবক।
এদিকে বিএনপির দুই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন এলাকাবাসী ও স্থানীয় বিএনপি নেতারা। কটিয়াদী পৌর বিএনপির সভাপতি আশরাফুল হক দাদন বলেন, জেলা কমিটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো নেতার অপরাধের দায় দল নেবে না। আশিক হত্যায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন তিনি।
জেলা বিএনপির সিদ্ধান্তে সন্তোষ জানিয়ে কটিয়াদী উপজেলা বিএনপি সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মুমুরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন সাবেরী বলেন, বিএনপি নেতা আশিকুজ্জামান নজরুল ও রিয়াজুল ইসলাম সেবকের নেতৃত্বে ছাত্রদল কর্মী আশিকের ওপর হামলা হয়। পুলিশ ও হাজার হাজার মানুষের সামনেই ওই ছাত্রদল নেতাকে খুন করা হয়।
কটিয়াদী ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তহসিবুল হাসিব বলেন, আশিক ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। তাঁকে হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই নেতাকে শাস্তি দেওয়ায় জেলা বিএনপি নেতাদের অভিনন্দন জানান তিনি।
গত শনিবার কটিয়াদীর চাতল বাগহাটা স্কুল অ্যান্ড কলেজের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে করা একটি অভিযোগের ভিত্তিতে বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. লোকমান মুন্সী ও সেকশন অফিসার মো. আহাদ খান সরেজমিন তদন্ত করতে প্রতিষ্ঠানে যান।
এ সময় পরিদর্শকদের উপস্থিতিতে বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট আশিকুজ্জামান নজরুল, অ্যাডভোকেট রিয়াজুল ইসলাম সেবক ও কলেজ পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুলের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান চন্দনের লোকজনের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় মুমুরদিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আশিক খাঁ নিহত ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দুই কর্মকর্তা, কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
এ ঘটনায় নিহত ছাত্রদল নেতা আশিকের মা রিতা আক্তার বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও চান্দপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতিসহ ২৯ জনকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
কটিয়াদী থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ওই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি অ্যাডভোকেট আলী হায়দার বাবুল ও আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।