দিনাজপুরে গাছে গাছে আমের সোনালি মুকুলের ছড়াছড়ি
Published: 20th, February 2025 GMT
ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে শীত বিদায় নিয়েছে। প্রকৃতি বদলের সঙ্গে সঙ্গে সবুজ পাতার ফাঁকে এখন আমের সোনালি মুকুলের ছড়াছড়ি। দিনাজপুর জেলার চারপাশ জুড়েই মুকুলের ম ম গন্ধ। আর বাগান চাষিরা ব্যস্ত হয়ে উঠেছে গাছের পরিচর্যায়।
জেলার ১৩টি উপজেলার বিভিন্ন আম বাগান ঘুরে দেখা যায়, ফাল্গুনের শুরুতেই পরিবর্তন শুরু হয়েছে প্রকৃতির। গাছের পুরনো পাতা ঝরে বের হচ্ছে নতুন পাতা। আর সেই পাতার ফাঁকে বেরিয়ে আসছে আম, লিচু, কাঁঠালসহ বিভিন্ন ফলের মুকুল।
হাকিমপুর উপজেলার মংলা গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমার বাড়িতে একটা ফজলি ও একটি ন্যাংড়া জাতের আম গাছ আছে। গাছ দুটির বয়স প্রায় ১২-১৩ বছর হবে। প্রতি বছর পর্যাপ্ত পরিমাণ আম ধরে। এবারও গাছ দুটিতে প্রচুর মুকুল এসেছে। আল্লাহ দিলে যদি ঝড়-বৃষ্টি না হয়, তাহলে অনেক আম পাবো।”
ঘোড়াঘাট উপজেলার উসমানপুরের বাগান চাষি রশিদুল ইসলাম বলেন, “আমার দেড় বিঘা জমির উপর একটা আম বাগান করেছি। বাগানে ফজলি, হিমসাগর, ল্যাংড়া, নাগ ফজলিসহ কয়েক জাতের আমের গাছ আছে। বাগানের বয়স ৬ বছর, প্রতিটি গাছ কলম করা, তাই ছোট থেকেই আম ধরেছে। আশা করছি আবহাওয়া ভালো থাকলে এবারও আমের ভালো ফলন পাব।”
হাকিমপুর উপজেলা কৃষি অফিসার মোছা.
দিনাজপুর জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো, নুরুজ্জামান বলেন, “জেলায় চলতি আমের মৌসুমে ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। আম চাষিদের যাতে আমের ভাল ফলন হয় সেই জন্য কৃষি অধিদপ্তর থেকে তাদের বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। আশা করছি আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আম চাষিরা ভাল ফলন পাবেন।”
ঢাকা/মোসলেম/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র আম চ ষ
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রমিকেরা শখ করে রাস্তায় নামেননি, তাঁরা প্রতারিত: আনু মুহাম্মদ
বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে আন্দোলনে নামা তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকদের ওপর আগের সরকারের মতো আক্রমণ করা হচ্ছে। তাঁরা শখ করে আন্দোলনে নামেননি। তাঁদের এখন ঘরে থাকার কথা ছিল। মালিকেরা প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছেন বলে শ্রমিকেরা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছেন। গতকাল বুধবার রাজধানীর বিজয়নগরে এক সমাবেশে এ কথাগুলো বলেন অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।
রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সামনে ‘মাছ, মাংস, চাল, মজুরির স্বাধীনতা চাই’ শীর্ষক ওই সমাবেশের আয়োজন করে গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটি। সমাবেশের সভাপতি ছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সদস্য অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ। এ ছাড়া বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতা, শ্রম অধিকারকর্মী, আইনজীবী, শিক্ষক, গবেষক ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত এই সরকার বলছে, তারা একটি নতুন ব্যবস্থা চায়, নতুন বন্দোবস্ত চায়। তারা নতুন বাংলাদেশ করার কথা বলছে, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ করার কথা বলছে। কিন্তু সে নতুনের কোনো কিছুই আমরা দেখতে পারছি না।’
বকেয়া বেতনের দাবিতে মঙ্গলবার রাজধানীতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনা উল্লেখ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, হাসিনার আমলে পুলিশ যেভাবে শ্রমিকদের ওপর আক্রমণ করেছে, এ সরকারের সময়ও পুলিশের আক্রমণে কোনো পরিবর্তন নেই। সেই সময়ে পুলিশ যেভাবে অন্যায়-অত্যাচার করেছে, তার কোনো রকম পার্থক্য আমরা এই সরকারের সময় দেখি না। সেই সময়ের মন্ত্রীরা যে ভাষায় কথা বলত, এখনকার শ্রম উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও অন্য উপদেষ্টাদের মুখেও আমরা একই রকম কথা শুনছি।’
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের উদ্দেশে আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘শ্রমিকেরা আন্দোলন করেছে বলেই গণ-অভ্যুত্থানে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। আর সরকার পরিবর্তন হয়েছে বলেই আপনারা উপদেষ্টা হয়েছেন। সে জন্য আপনাদের প্রতিদিন সকালে শ্রমিক ও আন্দোলনকারীদের সালাম দেওয়া উচিত।’
‘শ্রমিকদের আন্দোলনে উসকানি দেওয়া হচ্ছে’ বলে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী যে মন্তব্য করেছেন, তার নিন্দা জানান আনু মুহাম্মদ। বলেন, ‘আন্দোলনে উসকানি দেওয়া মানে কী? আন্দোলনে উসকানি তো দিচ্ছে মালিকেরা। এখানে যারা আন্দোলন করছে, তারা শখ করে আন্দোলন করছে না, তাদের এখন ঘরে থাকার কথা ছিল, তাদের সঙ্গে মালিকেরা প্রতারণা করেছে, জালিয়াতি করেছে। এ জন্যই তারা রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছে।’ শ্রমিকদের সব বকেয়া পরিশোধ, হামলার বিচার ও জড়িতদের শাস্তি এবং সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টাদের ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান তিনি।
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের সমন্বয়ক শামীম ইমাম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, গণতান্ত্রিক অধিকার কমিটির সভাপতি মোশাহিদা সুলতানা, গার্মেন্টস শ্রমিক নেত্রী জলি তালুকদার, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সভাপতি মোশরেফা মিশু, লেখক–গবেষক শিক্ষক মাহা মির্জা ও কল্লোল মোস্তফা।