নাটক বানিয়ে নীরবে সেন্সর নিয়ে সেসব নাকি সিনেমা হলে মুক্তি হচ্ছে- প্রায়ই দর্শকদের অভিযোগ ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে দর্শকরা যখন হলবিমুখ, তখনই ঘটলো ব্যতিক্রম ঘটনা। ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পাওয়া নাটক ‘মন দুয়ারী’ সিনেমা হলে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন দর্শকরা।

জাকারিয়া সৌখিনের চিত্রনাট্য ও পরিচালনায় এতে প্রধান দুই চরিত্রে অভিনয় করেছেন জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও নাজনীন নিহা। নাটকটি প্রকাশের মাত্র চার ঘণ্টায় অতিক্রম করেছিলো মিলিয়ন ভিউ! আর একদিন পেরিয়ে সেটি অতিক্রম করেছে তিন মিলিয়নের ঘর। ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে নাটকটি রয়েছে ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে এক নম্বরে।

অগণিত দর্শক ‘মন দুয়ারী’ দেখে ইউটিউবের মন্তব্যের ঘরে মাথাকুটে মরছেন এই বলে, এটি ইউটিউবে না দিয়ে সিনেমা হলে মুক্তি দিলে কী ক্ষতি হতো! বেশিরভাগ দর্শকই নাটকটিকে বড় ক্যানভাসের সিনেমা বলতে চাইছেন। যেটি দর্শকদের বাংলা সিনেমার স্বর্ণালী সময়ে নিয়ে গেছে ‘মন দুয়ারী’র পারিবারিক ক্লাইম্যাক্সে ভরা চিত্রনাট্য আর চোখ ধাঁধানো অপরূপ সিনেমাটোগ্রাফির সুবাদে।

সিএমভি’র ব্যানারে ইউটিউবে মুক্তি পাওয়া ‘মন দুয়ারী’র গল্পে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী অপূর্ব হঠাৎ গ্রামে ফেরেন দাদীকে ‘বেটার লাইফ’ দেয়ার জন্য নিয়ে যেতে। কিন্তু পারিবারিক বন্ধন ছেড়ে দাদী দিলারা জামান যেতে চান না। বাধা হয়ে দাঁড়ায় কাজিন নাজনীন নিহাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।

এমন ফ্যামিলি সেন্টিমেন্ট, রোমান্টিক আমেজের সঙ্গে বাংলার অপরূপ দৃশ্য আর বিশেষ দুই গান এবং আবহসংগীতের মেলবন্ধনে ‘মন দুয়ারী’ যেন অবিশ্বাস্য এক পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা হয়ে ধরা দিয়েছে ইউটিউব দর্শকদের মাঝে। বলা দরকার, নাটকটির দৈর্ঘ্য প্রায় দেড় ঘণ্টা। যা এখন বেশিরভাগ সিনেমারই দৈর্ঘ্য থাকে।

বড় বাজেট ও ক্যানভাসে নির্মিত ‘মন দুয়ারী’ সম্পর্কে চারপাশ থেকে এমন হল্লা ওঠায় বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন এর পাত্র-পাত্রী ছাড়াও নির্মাতা সৌখিন ও প্রযোজক এসকে সাহেদ আলী।

মুক্তির শুরুতেই এমন প্রাপ্তি প্রসঙ্গে জাকারিয়া সৌখিন বলেন, ‘‘আমাদের দর্শক বরাবরই ইমোশনাল এবং ফ্যামিলি ওরিয়েন্টেড। এ কারণে তারা পরিবার, দেশ এবং মানুষের গল্প খুব পছন্দ করে। সঙ্গে প্রপার মিউজিক আর বাংলার রূপ ক্যামেরায় ধরতে পারলে তো কথাই নেই। আমি নিজেও এমন কাজ দেখতে খুব আরামবোধ করি। ‘মন দুয়ারী’ নাটকের মধ্যে এর সবকিছু রাখার চেষ্টা করেছি। যাকে বলে ফুল প্যাকেজ। আমার মনে হয় মানুষ এগুলো কানেক্ট করছে। এর আগে ‘পথে হলো দেরী’ বড় ক্যানভাসে বানিয়েছিলাম। এবার ‘মন দুয়ারী’ বানালাম। দু’বারই রিলিজের আগে একটু ভয়ে ছিলাম। দু’বারই দর্শকদের ভালোবাসায় উতরে গেছি। ভবিষ্যতে আরও বড় ক্যানভাসে গল্প বলতে চাই। অবশ্যই সেটা পরিবার, দেশ ও সংগীতকে সঙ্গে রেখে।’’

নাটক আর সিনেমা বিতর্ক প্রসঙ্গেও কথা বলেন এই নির্মাতা। বললেন, ‘আমি আসলে গল্প বলার চেষ্টা করেছি। আমার ভেতরে জন্ম নেওয়া দৃশ্যগুলো ক্যামেরায় ধরেছি। আমার ভেতরে কাজ করা আবেগটুকু ঢালার চেষ্টা করেছি চরিত্রের মাধ্যমে। আমি নির্মাণের সময় একবারও ভাবিনি, এটি নাটক না সিনেমা। এটি সিনেমা হলে যাবে নাকি ইউটিউবে। আমি চেয়েছি দুচোখ ভরে আমার গল্পটা সাজাতে। এখন যখন দর্শকদের কাছ থেকে সিনেমার মন্তব্য পাই, তখন মনে হয় ভালোবাসা কখনও বিফলে যায় না। কারণ, ভিউর কথা না ভেবে গল্পটাকে ভালোবেসেই বলার চেষ্টা করেছি আমরা।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন জন ন ন হ মন দ য় র ন টকট

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপককে পাঁচ বছরের জন্য অব্যাহতি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মুসতাক আহমেদকে পাঁচ বছরের জন্য একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

আর্থিক অনিয়ম, একাডেমিক পরিসরে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৯ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটের ৫৩৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অব্যাহতির পাশাপাশি পরবর্তী পদোন্নতির তারিখ থেকে পাঁচ বছরের জন্য তাঁর পদোন্নতি ও বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট স্থগিত করা হয়েছে। তাঁর কাছে বিভাগের পাওনাদি বিষয়ে পত্র ইস্যু করার ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে তা পরিশোধ করতে হবে। পাঁচ বছর তিনি অন্য কোথাও চাকরি বা খণ্ডকালীন শিক্ষকতা বা কোনো দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং এই পাঁচ বছর সক্রিয় চাকরি হিসেবেও গণ্য করা হবে না।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অধ্যাপক মুসতাক আহমেদ বিভাগের সভাপতির দায়িত্বে থাকাকালীন বিভাগের আয়-ব্যয়ের নিরীক্ষার বিষয়ে গঠিত কমিটির প্রতিবেদন এবং তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগের স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের আনীত অভিযোগ তদন্ত করতে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

অর্থ আত্মসাৎ, ছাত্রলীগ নেতাকে ভুয়া প্রত্যয়নপত্র প্রদান, একাডেমিক পরিসরে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগে গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের অপসারণ দাবি করেন স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রার ও বিভাগের কার্যালয়ে লিখিতভাবে স্নাতক পর্যায়ের ২০৯ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৯২ শিক্ষার্থী তাঁর অপসারণের দাবির পক্ষে অভিযোগপত্রের সংযুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ