অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আমরা এখন বেশি শক্তিশালী
Published: 20th, February 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি শক্তিশালী, উদ্যমী এবং সৃজনশীল। আমাদের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন অতীতের যে কোনো প্রজন্মের স্বপ্নের চাইতে দুঃসাহসী। তারা যেমন নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টি করতে চায়, তেমনি একই আত্মবিশ্বাসে নতুন পৃথিবী সৃষ্টি করতে চায়।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘একুশে পদক-২০২৫’ অনুষ্ঠানের তিনি এ কথা বলেন।
ড.
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দেশের বরেণ্য ব্যক্তিত্ব যারা আজ একুশে পদকে ভূষিত হয়েছেন তাদের দেশবাসীর পক্ষ থেকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। আপনাদের অবদানের জন্য জাতি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। আপনারা জাতির পথ প্রদর্শক। আপনাদের অবদানে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাতি দৃঢ় বিশ্বাসে জাতিপুঞ্জের মজলিসে ক্রমাগতভাবে উন্নততর অবস্থানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবে।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ৫ আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সুযোগ এসেছে নতুন এক বাংলাদেশ নির্মাণের। আজ এই পদক প্রদান অনুষ্ঠানে আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি দেশমাতৃকার জন্য বিভিন্ন লড়াই-সংগ্রাম, বাহান্নর ভাষা আন্দোলন, একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও ‘২৪-এর গণঅভ্যুত্থানে যে সকল সাহসী ছাত্র-শ্রমিক-জনতা প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন এবং আহত হয়েছেন তাদের সকলকে।
এবারের অমর একুশে নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। আমরা জানি, একুশে ফেব্রুয়ারি আমাদের আত্মপরিচয়ের অবিনাশী স্মারক। আমাদের স্বাধিকার চেতনার প্রাণপ্রবাহ একুশে ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের এই ফেব্রুয়ারি মাসেই রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে পাকিস্তানি শাসকদের চাপিয়ে দেওয়া অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে রুখে দাঁড়িয়েছিল ছাত্রসমাজ। ঢাকার রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই আমাদের স্বাধিকার চেতনার এক অবিশ্বাস্য জাগরণ সৃষ্টি হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আজ এই মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ উদযাপনের স্মরণীয় দিনে আমরা তরুণদের এই স্বপ্নের আশু বাস্তবায়ন নিশ্চিত হোক এই কামনা করছি। দেশের ভবিষ্যৎ রচনায় পথ দেখিয়ে যারা আজ জাতির পক্ষ থেকে স্বীকৃতি পেলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি এবং তাদেরকে আবারও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অঅনুমেয় পাকিস্তানের সামনে উড়তে থাকা নিউ জিল্যান্ড
আজ (১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বিকেল ৩টায় আবারও মাঠে গড়াচ্ছে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। সুদীর্ঘ ‘তিন দশক’ পর আবারও আইসিসির কোন বড় আসরের আয়োজক পাকিস্তান। এর আগে ১৯৯৬ সালের বিশ্বকাপই ছিল পাকিস্তানের মাটিতে হওয়া সবশেষ বড় কোন আইসিসি ইভেন্ট। প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিক পাকিস্তানের সামনে উড়তে থাকা নিউ জিল্যান্ড।
করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে এই দুই দল মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। যা ঘিরে গোটা পাকিস্তানেই এখন উৎসবের আমেজ। এই দুই দল অবশ্য দিন চারেক আগেই একে অপরের বিপক্ষে একই মাঠে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল খেলে। সেখানে হেসেখেলেই জিতেছিল কিউইরা। এই সিরিজেই আরেক দেখায় পাকিস্তানকে ৭৮ রানের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছিল মিচেল স্যান্টনারের দল।
স্বাগতিক হওয়ার পরও তাই আজ পাকিস্তানকে তাড়া করে বেড়াবে সেই দুই হারের দুঃস্মৃতি। অবশ্য মোহাম্মদ রিজওয়ান একটা ব্যাপার ভেবে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতেই পারেন। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলেই অসাধারণ নৈপুণ্যে ছায় থেকে বেরিয়ে আসে টিম পাকিস্তান। বাজে অবস্থার সময় কোন ক্রিকেটিয় ব্যাখ্যায় বিশ্লেষণ করা যায় না তাদের পারফরম্যান্স।
আরো পড়ুন:
পাকিস্তানে শ্রমিক বহনকারী গাড়িতে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত ১০
জয়ের পর জরিমানা গুনলেন পাকিস্তানের তিন ক্রিকেটার
মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য এগিয়েই আছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। দুই দলের পূর্বের ১১৮ দেখায় নিউ জিলয়ান্ডের ৫৩ জয়ের বিপরীতে পাকবাহিনীর জয় ৬১ বার। টাই হইয় একটি ম্যাচ, অন্যদিকে ফলাফল আসেনি ৩ ম্যাচে। রিজওয়ানের দল এগিয়ে আছে আরও একটি জায়গাতেও। সবশেষ দুই হারের পর ঘরের মাটিতে ৩৭ দেখার ২২টিতে জিতে এগিয়ে আছে পাকিস্তানই।
করাচির ন্যশনাল স্টেডিয়াম অসম্ভব ব্যাটিং সহায়ক। তবে গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) দুই দলের সবশেষ মুখোমুখি লড়াইয়ে এই স্টেডিয়ামের পিচ স্বাভবিরোধী আচরণ করেছে। উইলিইয়াম ও’রোর্ক এবং নাসিম শাহদের বোলিং রীতিমত কাঁপিয়েছে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের। শুরুর দিকে বল বেশ ভালো সুইং করেছিল সেই ম্যাচে। দিন চারেকের ব্যবধানে খুব বেশি বদলে যাবে না পিচ। তবে স্বাগতিক হওয়ার সিবিধা নিয়ে সেই ধরণের উইকেট নাও বানাতে পারে পাকিস্তান। দিবা রাত্রির ম্যাচ হওয়াতে টসে জেতা দলটা প্রতিপক্ষকেই আগে ব্যাটিংয়ে ঠেলে দিতে পারে।
একাদশ সাজাতে খানিকটা এগিয়ে থাকবে স্বাগতিকরা। রিজওয়ানেওর দলে যে নেই কোন চোট সমস্যা। স্কোয়াডের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার আবরার আহমেদ সেরা একাদশে থাকার সম্ভাবনা বেশি। নাসিম, শাহীন আফ্রিদি এবং হাসনাইনদের পেস বোলিং যে কোন দিন বিশ্বের যে কোন ব্যাটিং অর্ডারকে ধসিয়ে দিতে পারে।
তবে নিউ জিল্যান্ডের কপালে আছে চিন্তার ভাঁজ। শেষ কয়েক বছরে সাদা বলে তাদের সেরা পেসার লকি ফার্গুসনকে যে পাচ্ছে না তারা। আসর শুরু একদিন আগে চোটের কারণের ছইটকে গিয়েছেন এই গতি তারকা। সেই স্থানে এসেছেন অবশ্য কাইল জেমিসনের মতো কৌশলি আরেক পেসার। তাছাড়া দিন কয়েক আগে ও’রর্ক তো দেখিয়েই দিয়েছেন তার গতির ঝলক।
সব মিলিয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে দারুণ এক উদ্ভোধনী ম্যাচের সাক্ষী হতে যাচ্ছে ক্রিকেটপ্রেমীরা। একপেষে ম্যাচ হওয়ার সম্ভাবনা যে খুবই ক্ষীণ।
ঢাকা/নাভিদ