ভয়াবহ তুষারপাতে বিপর্যস্ত অবস্থা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপশ্চিমাঞ্চলের অঙ্গরাজ্য কানসাসের। এমন আবহাওয়ায় ঘর থেকে বেরোনোই কঠিন, সেখানে আবার ফুটবল!

তাপমাত্রা হিমাঙ্কের অনেক নিচে চলে যাওয়ায় আবহাওয়া অফিস কানসাস সিটির পরিবেশকে দুর্যোগপূর্ণ ঘোষণা করেছিল। ফলে কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপে স্থানীয় দল স্পোর্টিং কেসির বিপক্ষে লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামির ম্যাচটা ২৪ ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়।

আজ তুষারপাত না হলেও তাপমাত্রা মাইনাস ১৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। হিমেল বাতাসের কারণে তা মাইনাস ২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো অনুভূত হচ্ছে। এ ধরনের আবহাওয়ায় কখনোই খেলেননি মেসি। প্রচণ্ড ঠান্ডায় জবুথবু হয়ে পড়ায় এই ম্যাচেও তিনি না–ও খেলতে পারতেন। কিন্তু তীব্র শীতকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে মেসি খেললেন, গোল করলেন এবং মায়ামিকে জেতালেন।

কানসাস সিটির মাঠ চিলড্রেন’স মার্সি পার্কে ম্যাচের ৫৬ মিনিটে মেসির গোলেই কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়নস কাপের প্রথম রাউন্ডের প্রথম লেগে ১–০ ব্যবধানে জিতেছে মায়ামি। নতুন মৌসুমে এটাই মেসিদের প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ।

দুই দলের ফিরতি লেগের ম্যাচটি হবে বাংলাদেশ সময় আগামী বুধবার সকালে মায়ামির মাঠ চেজ স্টেডিয়ামে। প্রতিপক্ষের মাঠে জিতে আসায় শেষ ষোলোর পথে অনেকটা এগিয়ে গেছে মায়ামি।

ম্যাচ জেতানো দৃষ্টিনন্দন গোলটা মেসি করেছেন প্রায় মাঝমাঠ থেকে সের্হিও বুসকেতসের উঁচু করে বাড়ানো পাস থেকে। কানসাস সিটির বক্সে ঢুকে বুক দিয়ে বল রিসিভ করেন আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি। এরপর বাঁ পা থেকে ডান পায়ে নিয়ে স্পোর্টিং কেসির মিডফিল্ডার এরিক টমিকে ফাঁকি দিয়ে গোলকিপার জন পুলসক্যাম্পকে বোকা বানান।

২০২৫ সালে প্রতিযোগিতামূলক ফুটবলে এটিই মেসির প্রথম গোল। এ নিয়ে টানা ২১ মৌসুম গোল পেলেন তিনি। বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তাঁর গোলসংখ্যা বেড়ে হলো ৮৫১।    

কনকনে ঠান্ডা থেকে কিছুটা রেহাই পেতে মেসিসহ দুই দলের প্রায় সব খেলোয়াড় গ্লাভস, গলায় ওয়ার্মার ও লম্বা আকারের মোজা পরে খেলতে নেমেছিলেন। স্পোর্টিং কেসির খেলোয়াড়েরা এমন আবাহাওয়ায় অভ্যস্ত হয়ে পড়লেও দক্ষিণ ফ্লোরিডার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়ায় অভ্যস্ত মেসি ও তাঁর সতীর্থদের এই পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়েছে।

এমন প্রতিকূল পরিবেশেও ম্যাচের ব্যবধান গড়ে দিয়েছেন মেসি। স্পোর্টিং কেসির কোচ পিটার ভারমেসও এক বাক্যে স্বীকার করেছেন, মেসির কারণেই তাঁর দলকে হারতে হয়েছে, ‘একজন ব্যক্তিই ছিল, যে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারত এবং সে সেটাই করেছে।’

ইন্টার মায়ামির কোচ হাভিয়ের মাচেরানো মেসির গোল নিয়ে অনুভূতি প্রকাশ করেছেন এক শব্দে, ‘চমৎকার!’ এরপর বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আমি সত্যিই গর্বিত। কারণ, আমার মনে হয়, এই পরিবেশে খেলা অসম্ভব ছিল। আপনারা জানেন, সে (মেসি) মানুষ নয়। যারা তাকে চেনে, তারা জানে, এটা স্বাভাবিক। কারণ, এ রকম গোল সে হাজারবার করেছে। তবে আমরা তাকে এখানে পেয়ে খুবই ভাগ্যবান।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র প রথম পর ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে তামিম, মোহামেডানের জয় ছাপিয়ে প্রশ্ন, খেলা বন্ধ হলো না ক

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের অষ্টম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে সোমবার সকালে ঠিকঠাক বিকেএসপিতে পৌঁছে গিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। সতীর্থদের সঙ্গে ড্রেসিংরুমের বাইরে খুনসুটি শেষে শরীর গরম করে মাঠে নামার প্রস্তুতিও নিয়ে নেন। এরপর টসও করতে যান মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের অধিনায়ক। 

কিন্তু ড্রেসিংরুমে ফেরার পরই টের পেতে থাকেন শরীর সাড়া দিচ্ছে না। বুক চেপে আসছে। ততক্ষণে বাকিরা বুঝে যান, তামিম হার্ট অ্যাটাক করেছেন। সঙ্গে সঙ্গেই তামিম নিয়ে হুলস্থূল লেগে যায়। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নেওয়া হয় প্রস্তুতি। প্রথ‌মে মাইনর ও প‌রে ‘ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকে’ অজ্ঞান হ‌য়ে পড়া তা‌মিমকে গাজীপু‌রের কে‌পি‌জে স্পেশালাইজড হাসপাতালে নেওয়া হয়। এর মধ্যে ব্যবস্থা করা হয় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স। 

কিন্তু তামিমের জ্ঞান ফেরাতে ওদিকে চিকিৎসকরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছিলেন না। ২২ মিনিট সময় ধ‌রে সি‌পিআর ও তিনটি ডি‌সি শক দি‌তে হ‌য়ে‌ছে। এরপর দ্রুত এন‌জিওগ্রাম ক‌রে শতভাগ ব্লক থাকা একটা আর্টারিতে রিং লা‌গি‌য়ে‌ছে ডাক্তাররা। অবিশ্বাস্য গ‌তি‌তে হ‌য়ে‌ছে সব‌কিছু। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তামিমের জ্ঞান ফিরেছে এবং কথা বলেছেন পরিবারের সঙ্গে। তবে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণে থাকবেন। 

তামিমের এই অবস্থার ভেতরেও বিকেএসপিতে চলেছে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ও শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের ম্যাচ। সচরাচর এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ অফিসিয়ালরা খেলা স্থগিত করেন। কিন্তু বিকেএসপি থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরের হাসপাতালে তামিম যখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে তখন মাঠে তার সতীর্থরা খেলছিলেন। মিরাজ সেঞ্চুরি করে দলকে জিতিয়েছেন ৭ উইকেটে। 

স্থগিত না করে কীভাবে খেলা চললো, সেটাই এখন বিরাট প্রশ্নের। এ নিয়ে জানতে চাওয়া হলে সিসিডিএমের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, মোহামেডানের ইচ্ছাতেই খেলা চালিয়ে নিয়েছেন তারা। দুই দলকেই সিসিডিএম এবং ম্যাচ অফিসিয়ালরা ম্যাচ স্থগিত করার কথা জানান। কিন্তু ম্যাচটি খেলতে রাজি হয় দুই দলই। এজন্য খেলা বন্ধ হয়নি। 

তার ভাষ্য, ‘‘মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব খেলা চালিয়ে যেতে চাইছিল। শাইনপুকুরও তাই। তারা কেউই চায়নি খেলা বন্ধ হোক। আমরা শুরুতে ভেবেছিলাম এরকম পরিস্থিতিতে খেলা বন্ধ করা যায় কি না। এজন্য ক্লাবগুলোকে জানানো হয়। কিন্তু তারা দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে খেলা চালিয়ে নেয়।’’

জানা গেছে, দুই দলই চেয়েছে ড্রেসিংরুমে কিংবা মাঠে আতঙ্ক সৃষ্টি না করতে। তাতে মাঠের ভেতরে ক্রিকেটে মনোযোগ দিয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। খেলা শেষে মুশফিক, মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, আরিফুলরা ছুটে গেছেন তামিমকে দেখতে হাসপাতালে। কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটের কাছাকাছি গিয়ে দেখাও করেছেন দুয়েকজন। 

ঢাকা/ইয়াসিন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মধ্যরাতে সাংবাদিককে অবরুদ্ধ, পরে পুলিশে হস্তান্তর
  • ফুলে ফুলে ভরেছে বেদি, শ্রদ্ধায় সিক্ত স্মৃতিসৌধ
  • আইয়ার ও অর্শদীপে পাঞ্জাবের জয়
  • জাতীয় স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
  • জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন রাষ্ট্রপতি
  • পরিবারের ইচ্ছায় ঢাকায় তামিমকে স্থানান্তর
  • মা হলেন আথিয়া, নানা সুনীল শেঠি
  • তামিম এখন কেমন আছেন
  • ‘আমার ভাই যেন সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারে’, তামিমকে নিয়ে সাকিব
  • হাসপাতালে তামিম, মোহামেডানের জয় ছাপিয়ে প্রশ্ন, খেলা বন্ধ হলো না ক