একটি সংলাপ কতটা আবেগী হতে পারে, বিষাদে ভরিয়ে দিতে পারে দর্শক-মন, তার আরেকটি উদাহরণ নতুন করে উঠে এসেছে নেট দুনিয়ায়। ‘চাচা, হেনা কোথায়?’ সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচিত সংলাপ। যদি আমরা জানি, দর্শক হিসেবে যা পর্দায় দেখি, তা বাস্তব নয়। তবে বাস্তব না হলেও সেই কল্পকাহিনি বহমান জীবধারার নানা অনুষঙ্গ নিয়ে রচিত।

কিছু অতি ফ্যান্টাসি, তারপরও বেশির ভাগ কাহিনিই লেখা হয় সমাজ-সংসারের দৃশ্যপটকে কেন্দ্র করে। যে কারণে নাটক, সিনেমা, সিরিজের কাহিনি বুননে যে সংলাপ ব্যবহার করা হয়, তা আমাদের মনে দারুণ প্রভাব ফেলে। ‘চাচা, হেনা কোথায়’ তেমনই এক বিষাদী সংলাপ, যা ব্যবহার করা হয়েছিল ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘প্রেমের সমাধি’ সিনেমায়।

সংলাপ বলা সেই দৃশ্যে দেখা যায়, নায়ক বকুল (বাপ্পারাজ) দীর্ঘদিন পর নিজ গ্রামে ফিরে তাঁর প্রেমিকা হেনার (শাবনাজ) বাড়িতে যায়। গিয়ে দেখে হেনাদের বাড়ি বিয়ের সাজে সাজানো। বাড়ির এক কোনায় বসে আছেন হেনার বাবা। বকুল তাঁকে গিয়ে জিজ্ঞেস করে, ‘চাচা, বাড়িঘর এত সাজানো কেন? আর হেনা কোথায়? চাচা, কথা বলছেন না যে। চুপ করে আছেন কেন?’ জবাবে চাচা বলেন, ‘হেনাকে তুমি ভুলে যাও, হেনার বিয়ে হয়ে গেছে।’ বকুল তখন আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, ‘না না, হেনার বিয়ে হতে পারে না। আমি বিশ্বাস করি না, আমি বিশ্বাস করি না।’ এ দৃশ্যই নতুন করে আলোড়ন তুলেছে নেট দুনিয়ায়।

অনেকের মুখে মুখে ফিরছে ‘চাচা, হেনা কোথায়’ সংলাপটি। তবে আমাদের আলোচনা এ সিনেমা নিয়ে নয়, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের নিয়ে। যাদের নতুন করে দেখা-সাক্ষাৎ হলো ২৯ বছর পর। যার সূত্র ধরে নেটিজেনরা বলা শুরু করেছেন, ‘অবশেষে হেনাকে খুঁজে পেয়েছে বকুল’। সেটি সম্ভব হয়েছে হেনা চরিত্রের অভিনেত্রী শাবনাজের স্বামী অভিনেতা নাঈমের কারণে। বুধবার নাঈম তাঁর নিজ বাড়ি টাঙ্গাইলের সাহেববাড়িতে এক আড্ডার আয়োজন করেছিলেন। সেখানে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বাপ্পারাজসহ অনেকে।

অতিথিসূত্রে জানা যায়, নাঈমের সঙ্গে থাকা শাবনাজকে দেখে এদিন আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েছিলেন বাপ্পারাজ। দীর্ঘদিন পর প্রিয় সহশিল্পীকে দেখে তাদের চোখের কোণে বেয়ে ঝরেছে আনন্দাশ্রু। শুধু তাই নয়, হাসি-গান-আড্ডায় দিনটি দারুণ রোমাঞ্চকর করে তুলেছিলেন তারা। সাক্ষাৎপর্বে নাঈমকে বাপ্পারাজ জিজ্ঞেস করেছিলেন ‘নাঈম ভাই হেনা কোথায়? নাঈমের উত্তর ছিল, ‘বাপ্পা তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস। হেনার তো আমার সঙ্গে অনেক আগে বিয়ে হয়ে গেছে’। বাপ্পারাজ চিৎকার করে বলে ‘না আমি বিশ্বাস করি না.

..।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ বন জ

এছাড়াও পড়ুন:

আবু তালহার ইসলাম গ্রহণ

উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান (রা.) একজন বুদ্ধিমতী নারী সাহাবি। তিনি ইসলাম গ্রহণকারী আনসারদের মধ্যে অন্যতম এবং খ্যাতিমান সাহাবি আনাস ইবনে মালিকের (রা.) মা। আনাসের বাবা মালিক ছিলেন উম্মে সুলাইমের মুসলিম হওয়ার আগের স্বামী। উম্মে সুলাইম ও আনাস ইসলাম গ্রহণ করলে স্বামী ক্ষোভে স্ত্রী-পুত্র ত্যাগ করে চলে যান। বিধবা হয়ে পড়েন উম্মে সুলাইম (রা.)।

রাসুল (সা.) বলেন, ‘একবার স্বপ্নে আমি জান্নাতে প্রবেশ করি। হঠাৎ আমার সামনে কারও জুতার আওয়াজ শুনতে পাই। আমি ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করলাম, কে? তারা বললেন, আনাস ইবনে মালিকের মা উম্মে সুলাইম বিনতে মিলহান।’ (মুসলিম, হাদিস: ২,৪৫৬)

শিশু পুত্র আনাসকে নিয়ে কাটছিল তার দিন। উম্মে সুলাইম (রা.) ঠিক করলেন, আনাস বড় না হওয়া পর্যন্ত তিনি বিয়ে করবেন না। আনাস যখন তার মায়ের বিয়েতে মত দেবে তখনই তিনি বিয়ে করবেন। একসময় আনাস উপযুক্ত বয়সে উপনীত হন।

আরও পড়ুনজীবনে একবার হলেও যে নামাজ পড়তে বলেছেন নবীজি (সা.)১৩ মার্চ ২০২৫

সে সময় আবু তালহা আল আনসারি নামে এক লোক উম্মে সুলাইমকে পছন্দ করে এবং বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু আবু তালহা মুসলিম ছিলেন না। তাই তিনি বিয়েতে অমত করলেন। আবু তালহা বললেন, ‘তুমি অর্থকড়ি চাও? আমি তোমাকে মূল্যবান সবকিছুর বিনিময়ে বিয়ে করতে চাই।’ উন্মু সুলাইম (রা.) বললেন, ‘না, আমি তোমার মধ্যে ইসলাম চাই।’

অবশেষে আবু তালহা ইসলাম গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেন। উম্মে সুলাইমের (রা.)-এর সঙ্গে তার বিয়ে হয় এবং বিয়ের মোহর হয় ‘আবু তালহার ইসলাম গ্রহণ’। সাবিত (রা.) বলেছেন, উম্মে সুলাইমের বিয়ের মোহরের চেয়ে উত্তম মোহরের কথা আমরা আর শুনিনি। আবু তালহার ইসলাম গ্রহণের যুগপৎ এই সিদ্ধান্ত ও তাঁদের বিয়ে আরবে সেসময় বেশ আলোচনার সৃষ্টি করে। বলা হয়, ইসলামের ইতিহাসে এটিই ছিল বিয়েতে সবচেয়ে মূল্যবান মোহর।

উম্মে সুলাইম (রা.) যুদ্ধে রাসুল (সা.)-এর সঙ্গে শরিক হয়েছিলেন। আনাস (রা.) বলেন, ‘আমি আয়েশা (রা.) ও আমার মা উম্মে সুলাইমকে যুদ্ধের দিন মশক ভরে পানি এনে আহতদের পানি পান করাতে দেখেছি। মশক খালি হয়ে গেলে তারা আবার ভরে এনে পান করিয়েছেন।’ (সহিহ বুখারি, ২/৫৮১)

আরও পড়ুন ধৈর্য কাকে বলে১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ