অন্যের স্ত্রীর সঙ্গে ধরা, সেই পুলিশ কর্মকর্তা ক্লোজড
Published: 20th, February 2025 GMT
রাজশাহীতে এক নারীর ঘর থেকে স্থানীয়দের হাতে আটক হওয়া পুলিশ কর্মকর্তা সোহেল রানাকে সাময়িক বরখাস্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তাকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে, মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নগরীর সাতবাড়িয়া মহল্লায় এক মাদক কারবারির স্ত্রীর ঘরে পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সোহেল রানাকে পেয়ে আটকে রাখেন স্থানীয়রা। এ সময় তাকে লাঠিপেটা করা হয়। খবর পেয়ে মতিহার থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
এএসআই সোহেল রানা রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) চন্দ্রিমা থানায় কর্মরত ছিলেন। মতিহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুল মালেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘‘রাতে ওই নারীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে এনে এএসআই সোহেল রানাকে থানা হেফাজতে রাখা হয়েছিল। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তাকে ক্লোজড করে। তখন তাকে চন্দ্রিমা থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেখান থেকে এএসআই সোহেল পুলিশ লাইনে চলে যান।’’
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘এএসআই সোহেলকে সাময়িক বরখাস্ত (ক্লোজড) করা হয়েছে। এখন তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তদন্ত হবে। তারপর সে অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
এএসআই সোহেল রানাকে যে নারীর ঘরে পাওয়া গেছে সেই নারী তার বাবার বাড়িতে থাকেন। তার স্বামী একজন মাদক কারবারি। বছর দেড়েক জেল খেটে তিনি সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চালিয়ে যাচ্ছিলেন এএসআই সোহেল রানা। যদিও ওই রাতে এএসআই সোহেল দাবি করেন, তিনি ‘কলমা করে’ ওই নারীকে বিয়ে করেছেন। আর ওই নারী দাবি করেন, তিনি তার আগের স্বামীকে তালাক দিয়েছেন। তবে, ওই নারীর স্বামী বিষয়টি নাকচ করে বলেছেন, তাদের বিচ্ছেদ হয়নি।
এদিকে, থানায় আসার পরে বিয়ের প্রসঙ্গ এড়িয়ে অন্য কথা বলেন সোহেল রানা। তিনি পুলিশকে জানান, তার তিনটি অটোরিকশা আছে। সেগুলো ওই নারীর তত্ত্বাবধানেই থাকে। মাঝে মাঝে গিয়ে তিনি ভাড়ার টাকা আনেন। ওই রাতে ভাড়ার টাকা আনতে গিয়েছিলেন। তখন ওই নারীর স্বামীসহ স্থানীয়রা তাকে আটকে রেখে মারধর করেন।
ঢাকা/কেয়া/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এএসআই স হ ল র ন ওই ন র র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় এক এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ
বগুড়ার শেরপুর থানার এক পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী এক নারী।
অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার নাম মোক্কাছ আলী (৪৮)। তিনি সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হিসেবে কর্মরত। অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন তিনি।
এই এএসআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম রুবি আক্তার (৩০)। তাঁর বাড়ি উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের দড়িমুকুন্দ গ্রামে।
ভুক্তভোগী রুবি আক্তার বলেন, তাঁর বোনের জমিজমাসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ৬ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। থানায় এই লিখিত অভিযোগের বাদী ছিলেন তাঁর বোন উর্মিলা খাতুন। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানায় কর্মরত মুক্কাস আলী ৯ ফেব্রুয়ারি তদন্তে আসেন। তদন্তে এসে তিনি তাঁর বোনের কাছে মোটরসাইকেলের তেলের খরচ বাবদ দুই হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ৫০০ টাকা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। পরের দিন তিনি জমির কাগজপত্র নিয়ে মির্জাপুর বাজারে দেখা করতে বলেন। প্রায় চার ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও পুলিশ কর্মকর্তা আসেননি। সন্ধ্যায় তিনি (পুলিশ কর্মকর্তা) তাঁর বোনের বাড়িতে গিয়ে জমির কাগজপত্রের ফটোকপি নিয়ে আরও পাঁচ হাজার টাকা দাবি করেন। তাঁকে ১ হাজার ৫০০ টাকা দেওয়া হয়।
রুবি আক্তার বলেন, ‘১৮ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে দারোগা মুক্কাস আলী আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে ফোন দিয়ে দেখা করতে বলেন। তবে অসাবধানতাবশত তিনি ফোন না কেটে রেখে দেন, যার ফলে আমি অপর প্রান্তে আমার বিবাদী রুবেল ও সোহেলের কণ্ঠস্বর শুনতে পাই। কৌতূহলী হয়ে আমি তাদের কথোপকথন শুনতে থাকি এবং জানতে পারি যে মুক্কাস আলী বিবাদীদের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করছেন।’
এএসআই মোক্কাছ আলী ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমি যথাযথ নিয়ম মেনে তদন্ত করেছি। আগামী সোমবার বিকেলে দুই পক্ষকে নিয়ে থানায় বৈঠক করার কথা হয়েছে।’ এ নিয়ে শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, এই অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে।
শেরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগটি পাওয়ার পর তদন্তের জন্য বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (শেরপুর সার্কেল) কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে তিনি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।