৯ দিন পরই রোজা শুরু হচ্ছে। তার আগেই রোজায় ছোলার সরবরাহ নিয়ে দুশ্চিন্তা কেটে গেছে। কারণ, চাহিদার তুলনায় ছোলা আমদানি হয়েছে বেশি। তবে ডলারের বিনিময়মূল্য বাড়ার কারণে গতবারের তুলনায় এবার একটু বাড়তি দামে কিনতে হবে ছোলা।

ট্যারিফ কমিশনের হিসাবে রোজায় ছোলার চাহিদা এক লাখ টন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে গত আড়াই মাসে (ডিসেম্বর-ফেব্রুয়ারি) প্রায় ১ লাখ ৬০ হাজার টন ছোলা আমদানি হয়েছে। গত বছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ৮৯ টন ছোলা। সেই হিসাবে এবার আমদানি গত বছরের তুলনায় প্রায় ৭১ হাজার টন বা ৮০ শতাংশ বেশি হয়েছে। ইতিমধ্যে আরও ছোলা আমদানির পথে।

আমদানিকারকেরা বলছেন, রোজার মাস ছাড়া অন্য মাসগুলোতে দেশে প্রতি মাসে গড়ে ১০ হাজার টন ছোলার চাহিদা থাকে। সেই হিসাবে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি, এই তিন মাসের ৩০ হাজার টন চাহিদা বাদ দিলেও আমদানি করা আরও ১ লাখ ৩০ হাজার টন ছোলার সরবরাহের জন্য অবশিষ্ট থাকবে।

আমদানি বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, রমজান সামনে রেখে গত জানুয়ারি মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় আটটি খাদ্যপণ্য বাকিতে আমদানির সুযোগ করে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। এর মধ্যে ছোলা, ডাল ও মটর রয়েছে। এসব পণ্য ৯০ দিনের সাপ্লায়ার্স বা বায়ার্স ক্রেডিটের আওতায় আমদানির সুযোগ দেওয়া হয়। এই সুবিধায় আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এসব পণ্য আমদানি করা যাবে। এই সুযোগ দেওয়ার পর আমদানিকারকদের অনেকের মধ্যে ছোলা আমদানির আগ্রহ তৈরি হয়।

দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ছোলা আমদানিকারক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, রোজার আগে আমদানি করা আরও ছোলার চালান দেশে এসে পৌঁছাবে। তাই এবার ছোলার সরবরাহ নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নেই। আবার সরবরাহ–সংকটের অজুহাতে দাম বাড়ানোর সুযোগও কম।

আমদানির তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে আমদানি করা ছোলার ৯৬ শতাংশই আনা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া থেকে। বাকি ছোলা আমদানি করা হয়েছে ভারত থেকে। গড়ে কেজিপ্রতি ছোলা ৭২ সেন্টে আমদানি করা হয়। তবে মানভেদে আমদানি খরচ ছিল ৬৮ সেন্ট থেকে ৮৮ সেন্ট পর্যন্ত।

খাতুনগঞ্জে এখন রমজানের বেচাকেনা চলছে। দেশের বৃহত্তম এই পাইকারি বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত বছর এ সময়ে পাইকারিতে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল ৮০ থেকে ৯৬ টাকা। আর চলতি মাসে প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৯২ থেকে ১০৫ টাকায়। বেশি আমদানির পরও মূল্যবৃদ্ধির কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, ডলারের বিনিময়মূল্য বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের চেয়ে এবার আমদানি খরচ বেড়েছে। এ কারণে দামও কিছুটা বাড়তি।

রমজান সামনে রেখে চট্টগ্রামের খুচরা বাজারগুলোতে ছোলার সরবরাহ শুরু হয়ে গেছে। রোজায় দাম বাড়তে পারে—এই আশঙ্কায় অনেকে আগেভাগে রোজার এই পণ্য কিনছেন। উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ভোক্তাদের মনে প্রশ্ন—রোজার সময় এসব পণ্যের দাম নতুন করে আবার বাড়বে কি না।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের এপ্রিলে রোজা শুরুর আগে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছোলার দাম ছিল গড়ে ৭৫ টাকা। রোজা শুরুর পর সেই দাম কমে ৭০ টাকায় নেমে আসে। ২০২৩ ও ২০২৪ সালে রোজার আগের মাসের তুলনায় রোজার মাসে ছোলার দামের খুব বেশি হেরফের হয়নি। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরও রোজায় ছোলার দামের খুব বেশি হেরফের হবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।

নগরের বহদ্দারহাট বাজারের খুচরা বিক্রেতা মুহাম্মদ ফরিদুল হক বলেন, রোজার আগে ছোলার দাম কয়েক বছর ধরে কিছুটা কমে। এবারও দাম কমতে পারে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ল র সরবর হ হ জ র টন র আমদ ন ব যবস য় আমদ ন র গত বছর টন ছ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মার্কিন ডলারের মান সর্বনিম্নে নেমেছে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিভিন্ন দেশের ওপর শুল্ক আরোপের জেরে মার্কিন ডলারের মান সর্বনিম্নে নেমেছে। শুক্রবার বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এই মুদ্রার মান গত তিন বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ পতন হয়েছে।

বিশ্বে মার্কিন ডলারের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের সূচক (ডিএক্সওয়াই) ও মার্কিন সাময়িকী ফোর্বসের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার মার্কিন ডলারের মান তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে গেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুদ্রার মান সাধারণত ডলারের মানের ওপর নির্ভর করে।

মার্কিন ডলারের সূচকে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে ডলারের মূল্য কমে ৯৯ দশমিক ০১-এ দাঁড়িয়েছে। যা এক বছরের মধ্যে ডলারের মানের প্রায় ৮ শতাংশ পতনের রেকর্ড।

ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর ডলারের মানের বেশি পতন ঘটেছে। ওই দিন বিশ্বের কয়েক ডজন দেশের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন আমদানি শুল্ক আরোপ করেন তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের আমদানিতে উচ্চ শুল্ক আরোপের পর বৈশ্বিক বাজার ব্যবস্থায় ব্যাপক টালমাটাল পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়ার শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস শুরু হয়। যদিও পরবর্তীতে চীন ছাড়া বাকি সব দেশের ওপর আরোপিত এই শুল্ক আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছেন ট্রাম্প।

বিদেশি মুদ্রার লেনদেন হয় আলাদা দুটি দেশের মুদ্রায়। উদাহরণস্বরূপ, অস্ট্রেলিয়ান ডলার দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার ক্রয়। যার ফলে এক দেশের মুদ্রার মান আরেক দেশের মুদ্রার মানের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। যা ‘এক্সচেঞ্জ রেট’ নামে পরিচিত।

বিশ্বের বেশিরভাগ মুদ্রার মানই ওঠানামা করে। যার অর্থ চাহিদা এবং সরবরাহ অনুযায়ী দাম পরিবর্তন হয়ে থাকে। কিছ মুদ্রার মান স্থির। যেমন যুক্তরাষ্ট্রের ডলার একটি নির্দিষ্ট দামে নির্ধারিত। ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত মার্কিন ডলারের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার ডলারের মান নির্দিষ্ট করা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে সেটি বাতিল করা হয়

এখন চাহিদা ও সরবরাহ অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়ান ডলারের মূল্য ওঠানামা করে। মুদ্রা শক্তিশালী হয় বিভিন্ন কারণে। যার মধ্যে অন্যতম হলো রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, পণ্যের চাহিদা ইত্যাদি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নতুন বিনিয়োগ ‘পড়বে অসম প্রতিযোগিতায়’ 
  • যুক্তরাষ্ট্রে বিরল খনিজ রপ্তানি করবে না চীন
  • ইউক্রেনে গ্যাস পাইপলাইনের নিয়ন্ত্রণ চায় যুক্তরাষ্ট্র
  • ধরা পড়ছে না ইলিশ, জেলেদের দিন কাটছে অর্থকষ্টে
  • আদানির সরবরাহ কমে লোডশেডিং বেড়েছে
  • পানি নেই ঝিরি-ঝরনায় সংকটে দুর্গম গ্রামবাসী
  • টেসলা কতটা ‘মেড ইন আমেরিকা’
  • আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট ১৭ ঘণ্টা পর চালু
  • রাবির ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষায় ‘সি’ ইউনিটের উত্তরপত্র
  • মার্কিন ডলারের মান সর্বনিম্নে নেমেছে