অনেকেই ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। এ কারণে তাদেরকে সন্ধ্যার পর চা-কফি না খাওয়ার কিংবা কম খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু এমন কয়েক ধরনের চা আছে যেগুলি রাতে ঘুমনোর আগে খেলে উপকার মেলে। এতে মানসিক চাপ কমে,মন-মেজাজ ভালো থাকে। সবচেয়ে বড় কথা এসব চা রাতে সহজে ঘুম আসতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি : অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ গ্রিন টি- এর অনেক গুণ রয়েছে। এই চা খেলে রাতে ভাল ঘুম হয়। গ্রিন টি- তে ক্যাফেইনের মাত্রা কম থাকে। এই চা মানসিক চাপ কমায়। সেই সঙ্গে ভাল ঘুম হতে সাহায্য করে। বার্ধক্যজনিত রোগ রুখতেও সাহায্য করে এই চা। গ্রি টি আমাদের শরীরের মেটাবলিজম রেট বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে এই চা ওজন কমাতে দারুণ ভাবে সাহায্য করে। এছাড়াও ডিটক্স পানীয় হিসেবেও গ্রিন টি- এর জুড়ি নেই। শরীর থেকে সব ধরনের দূষিত পদার্থ দূর করতে সাহায্য করে গ্রিন টি। এর পাশাপাশি গ্রিন টি খেলে ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে।
ক্যামোমাইল টি: এই বিশেষ ধরনের চা তৈরি হয় এক প্রকারের ফুল দিয়ে। এই চা ভালো ঘুম হতে সাহায্য করে। ক্যামোমাইল টি আমাদের মন-মেজাজ শান্ত রাখে। মানসিক চাপ কমায়। ঘুমোনোর আগে এই চা খেলে রাতে ভালো ঘুম হবে।
ল্যাভেন্ডার টি: রাতে ঘুমানোর আগে বিশেষ এই চা খেলেও ভাল ভাবে ঘুম আসবে আপনার। অ্যাংজাইটি বা উদ্বেগ কমাতে দারুণ ভাবে কাজ করে এই ল্যাভেন্ডার টি। এই চা খেলে সহজে ঘুম আসে। তবে রাতে ঘুমানোর আগে সামান্য পরিমাণে এই চা খাওয়া উচিত। নিয়মিত না খেলেই ভাল।
যাদের ঘুমের সমস্যা আছে রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত ঘণ্টাখানেক আগে এই তিন ধরনের চা খেয়ে দেখতে পারেন। এতে রাতে ঘুমের সমস্যা মিটতে পারে। সহজে ঘুম আসতে পারে আপনার চোখে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স হ য য কর ধরন র
এছাড়াও পড়ুন:
একটি সেতু হলেই দুঃখ ঘুচবে ৫০ হাজার চরবাসীর
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে সেতুর অভাবে দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার বাসিন্দা। কয়েক দশক ধরে মরা পদ্মা নদী পারাপারে খেয়া নৌকাই ভরসা দৌলতদিয়া ও উজান চরবাসীর। ঝড়-বৃষ্টিসহ নানা কারণে মাঝেমধ্যে বন্ধ থাকে খেয়া নৌকার চলাচল। এতে দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায় চরের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরিদপুর জেলার সীমানাঘেঁষে গোয়ালন্দ উপজেলার উজানচর ইউনিয়ন। পদ্মাপারের বিস্তীর্ণ এ ইউনিয়নে নানা ধরনের ফসল উৎপাদনের আদর্শ অঞ্চল। পরিবহন সমস্যায় উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন কৃষক। এ ইউনিয়নের একটি গ্রাম দড়াপের ডাঙ্গী। মরা পদ্মা নদী পার হলেই স্কুল-মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবুও একটি সেতুর কারণে দড়াপের ডাঙ্গী গ্রামের অসংখ্য শিশু-কিশোরের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিতে ৭-৮ কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। এখানে একটি সেতু নির্মাণ হলে উজানচর ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নবাসী সরাসরি উপকৃত হবেন। ফরিদপুর জেলা শহর ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জামতলার হাট, মমিনখার হাটসহ বিভিন্ন এলাকার সঙ্গে দুই ইউনিয়নের চর এলাকার বাসিন্দাদের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। বদলে যাবে এলাকার কৃষি, শিক্ষা, চিকিৎসাসেবাসহ সামগ্রিক পরিস্থিতি।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালে উজানচর ইউনিয়নের দড়াপের ডাঙ্গী এলাকায় ২৬০ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প প্রস্তাব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠানো হয়েছিল। এখন পর্যন্ত তাতে সাড়া মেলেনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. কামাল হোসেন জানান, তাদের এ এলাকাটি কৃষিনির্ভর। প্রচুর ফসল উৎপাদন হয়। পরিবহন সমস্যার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হন। মালপত্র পরিবহন করা খুব কষ্টকর। তিনি বলেন, একটি সেতু নির্মাণ করা হলে তাদের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে চরের হাজার হাজার বাসিন্দার।
জামতলা দাখিল মাদ্রাসার ছাত্রী ইনসানা আক্তার ও লামিয়া আক্তার জানায়, তাদের মতো চর এলাকার কয়েকশ ছাত্রছাত্রী প্রতিদিন খেয়া নৌকা পাড়ি দিয়ে স্কুল-মাদ্রাসায় পড়ালেখা করতে যায়। সময়মতো খেয়া ধরতে না পারলে ঘাটে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে হয়। আবহাওয়া খারাপ হলে স্কুলেও যাওয়া হয় না। এতে তাদের স্বাভাবিক পড়াশোনা ব্যাহত হয়।
খেয়াঘাটের মাঝি শাকিল শেখ জানান, ঝড়-বৃষ্টি ছাড়াও সামান্য বাতাসে নৌকা পারাপার বন্ধ থাকে। এ ছাড়া মরা পদ্মা নদীতে থাকা ঘন কচুরিপানার কারণে চলাচলের পথ বন্ধ হয়েও মাঝেমধ্যে পারাপার বন্ধ হয়ে যায়। এখন প্রায় সব জায়গায় ব্রিজ হয়ে গেছে। শুধু এখানে হলো না। চরবাসীর দুর্দশা খুব কাছ থেকে দেখতে পাই। এখানে ব্রিজটি হলে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ থেকে বেঁচে যেত।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল জাহাঙ্গীর স্বপ্নিল বলেন, মরা পদ্মা নদীতে একটি সেতু নির্মাণ হওয়াটা খুব জরুরি। সেখানে এতদিনেও সেতু না হওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক। জনসাধারণের ভোগান্তি লাঘবে বিষয়টি নিয়ে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলবেন।
গোয়ালন্দের ইউএনও মো. নাহিদুর রহমান জানান, চর এলাকার মানুষের সুবিধার্থে দরাপের ডাঙ্গী এলাকায় সেতু নির্মাণের বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়াসহ সব ধরনের চেষ্টা করা হবে।